Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Dengue Fear

পুজোতেও চলবে ডেঙ্গির হানা, শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

শ্রীরামপুর পুরসভায় বহু পুকুর কার্যত মশার আঁতুড়ঘর বলে অভিযোগ। অভিযোগ, এগুলি পরিষ্কার করা নিয়ে পুর-কর্তৃপক্ষ উদাসীন। দস্তে পুকুর নামে বড় একটি জলাশয় কচুরিপানায় ভর্তি।

জল জমে রয়েছে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে।

জল জমে রয়েছে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৫৪
Share: Save:

হুগলিতে দুর্গাপুজো ডেঙ্গির উপদ্রবেই কাটবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁদের ধারণা, বৃষ্টি চলতে থাকায়, ডেঙ্গির হানাদারি চলবে। বর্ষার বিদায় এবং তাপমাত্রার পারদ নামলে বাগে আসতে পারে ডেঙ্গি।

গঙ্গাপাড়ের ৯টি পুর-এলাকায় ডেঙ্গি কমবেশি মাথাচাড়া দেয়। প্রকোপ বেশি হয় উত্তরপাড়া, রিষড়া, শ্রীরামপুরে। চলতি বছরে উত্তরপাড়ার দুই যুবক ও শ্রীরামপুরের এক মহিলা ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন। জ্বরে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালের এক নার্স মারা যান। তাঁর বাড়ি ডানকুনি শহরে।

উত্তরপাড়া শহরের ১৬ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে এখনও ডেঙ্গির প্রকোপ রয়েছে। এখানকার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডেও ডেঙ্গি-পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছি‌ল। পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘তুলনামূলক ভাবে ডেঙ্গির উপদ্রব কিছুটা কমলেও তা এখনও নির্মূল হয়নি। পুরকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মীরা চেষ্টা করছেন ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আনতে।’’

শ্রীরামপুর পুরসভায় বহু পুকুর কার্যত মশার আঁতুড়ঘর বলে অভিযোগ। অভিযোগ, এগুলি পরিষ্কার করা নিয়ে পুর-কর্তৃপক্ষ উদাসীন। দস্তে পুকুর নামে বড় একটি জলাশয় কচুরিপানায় ভর্তি। বছর খানেক আগে পুকুরের মালিক পরিষ্কারের কাজ শুরু করেও পারেননি। পুকুরটি পরিষ্কারের জন্য এলাকাবাসীর আবেদন-নিবেদন সত্ত্বেও পুরসভা থেকে জেলা প্রশাসনের তাবড় কর্তারা চোখ বুজে রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আরামবাগ মহকুমায় গত জানুয়ারি থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত ছিলেন ৬০ জন। সেই সংখ্যা বেড়ে মঙ্গলবার দাঁড়িয়েছে ১০৫ জনে। মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে গোঘাট-১ ব্লকেও ডেঙ্গির প্রকোপ শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, আক্রান্তদের অনেকেই কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। আরামবাগ মহকুমা হাসাপাতালে ৯ জন চিকিৎসাধীন। প্রত্যেকের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার সত্যজিৎ সরকার। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানিয়েছেন, পরিচ্ছন্নতা-সহ ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি চলছে। হাসপাতালে জ্বরের রোগী এলেই রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে। গ্রামীণ চিকিৎসকের কাছেও যাচ্ছেন‌ অনেকে। তাঁদের অনেকেরই রক্ত পরীক্ষা হচ্ছে ‌না। পান্ডুয়া ব্লকেও ডেঙ্গির দাপট দেখা গিয়েছে।

বৈদ্যবাটী পুরসভার একাধিক ওয়ার্ডে জ‌ল জমার সমস্যা রয়েছে। অভিযোগ, ২৩, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নানা জায়গা মশার আঁতুড়ঘর। বহু জলাশয় কচুরিপানা, আগাছায় ভর্তি। পুর-কর্তৃপক্ষের নজর নেই। ব্লিচিং পাউডার, মশার লার্ভা মারার তেল দূর, রাস্তাঘাট নিয়মিত সাফাই হয় না। স্বাস্থ্যকর্মীরা অবশ্য জ্বরের খোঁজ নিতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। কাজিপাড়ার বাসিন্দা মিলন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, ‘‘নিকাশি নালার জল পুকুরে, খেতে ফেলে পুরসভা। দূষণে পুকুরে মাছ চাষ বন্ধ। মশার উপদ্রব। কাজিপাড়া ও এনসি ব্যানার্জি রোডের সংযোগস্থলে নর্দমার উপরে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা জলের পাইপ মশার আস্তানা।’’

১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবরাজ দত্তের অবশ্য দাবি, ‘‘জমা জলে ডেঙ্গির লার্ভা পায়নি প্রশাসন। কয়েকটি বাড়িতে পাওয়া গিয়েছে। মশার লার্ভা মারতে তেল ছেটানো হচ্ছে।’’ পুর-পারিষদ (স্বাস্থ্য) মহুয়া ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ডেঙ্গিতে কয়েক জন আক্রান্ত হলেও, তাঁরা সুস্থ আছেন। কয়েকটি নিচু জায়গা ছাড়া জল জমার সমস্যা নেই। মশার লার্ভা মারার তেল প্রতি ওয়ার্ডে নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে।’’ ডানকুনির পুরপ্রধান হাসিনা শবনমের দাবি, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চুন, ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হচ্ছে। হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভায় মশা মারাতে কামান দাগা হচ্ছে। চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ডেঙ্গি মোকাবিলায় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিশেষত বাজার এলাকায় সাফাইয়ে জোর দেওয়া হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Fear Chinsurah Durga Puja 2022
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE