প্রবীণদের টিকাকরণ চলছে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে।
স্বাস্থ্যকর্মীদের পরে সাধারণ মানুষকেও কোভিডের প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়েছে সোমবার থেকে। মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনে হুগলি জেলায় কয়েকশো মানুষ এই ভ্যাকসিন নিয়েছেন। তবে, প্রথম দিনের মতোই পোর্টালের বিভ্রাটের কারণে এ দিনও পুরো বিষয়টি মসৃণ হয়নি। কোথাও এ জন্য টিকাকরণ বন্ধ রাখতে হয়েছে। কোথাও প্রযুক্তির ভরসা ছেড়ে পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা নিয়ে টিকা দেওয়া হয়েছে। তাতে সময় লেগেছে বেশি। সব মিলিয়ে টিকা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। একই চিত্র গ্রামীণ হাওড়াতেও।
সমস্যার কথা মানছে স্বাস্থ্য দফতর। হুগলি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী জানান, পোর্টাল এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। জেলার ৩৪টা কেন্দ্রের মধ্যে এ দিন ২৮টি জায়গায় প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন টিকাকরণ কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, সকালের দিকে মাঝেমধ্যেই পোর্টাল নিষ্ক্রিয় ছিল। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরেও সমস্যা না মেটায় জেলাস্তরে বিষয়টি জানানো হয়। বেলা ১টা নাগাদ অফলাইনেই নথিভুক্ত করে টিকাকরণের নির্দেশ দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, পরে এই সব উপভোক্তাদের তথ্য অনলাইনে নথিভুক্ত করা হবে।
সোমবার থেকে ষাটোর্দ্ধ এবং কো-মর্বিডিটি আছে এমন লোকজনকে প্রতিষেধক দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভোটকর্মীদেরও এর আওতায় আনা হয়েছে। এ জন্য উপভোক্তার পরিচয়পত্রের শংসাপত্র, মোবাইল নম্বর ইত্যাদি নথিভুক্ত করতে বিশেষ পোর্টাল আপডেট করে তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘কো-উইন-২’। সেই পোর্টালই দিনের অধিকাংশ সময় বসে যাওয়ায় বিপত্তি ঘটে।
সোমবারের মতই এ দিনও পুরশুড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পোর্টালে সাড়া না মেলায় টিকাকরণ বন্ধ থাকে। তবে কামারপুকুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, আরামবাগ দক্ষিণ নারায়ণপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে কিছু টিকা দেওয়ার কাজ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা। আরামবাগ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৪০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। খানাকুল গ্রামীণে এই সংখ্যা ৩৬ জন।
কামারপুকুর ব্লক হাসপাতালে প্রতিষেধক নিতে আসা ভোটকর্মী বিপ্লব ঘোষের অভিযোগ, ‘‘সকাল সাড়ে ৯ টায় লাইনে দাঁড়িয়েছি। পোর্টাল বিভ্রাটের জন্য প্রায় তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।’’ উপভোক্তাদের দুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁদেরও এই নিয়ে অসুবিধায় পড়তে হয়েছে।
চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে এ দিন ১০৬ জনকে টিকা দেওয়া হয়। ব্যান্ডেলের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব গৌরগোপাল মুখোপাধ্যায় এ দিন ওই হাসপাতালে টিকা নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘করোনাকে পুরোপুরি বিদায় দিতে টিকা নিতে হবে। আশা করব, ধাপে ধাপে সবাই তা নেবেন।’’ শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ২০৪ জন এ দিন টিকা নিয়েছেন। হাসপাতাল সুপার জয়ন্ত সরকার বলেন, ‘‘পোর্টাল ঠিকঠাক কাজ করেনি ঠিকই, তবে তার জন্য আমরা বসে থাকিনি। নথি জমা নিয়ে টিকা দেওয়া হয়েছে। কোনও অসুবিধা হয়নি।’’ তিনি জানান, প্রতিদিন
পাঁচশো থেকে ছ’শো মানুষকে টিকা দিতে তাঁরা প্রস্তুত।
গ্রামীণ হাওড়াতেও বয়স্কদের টিকাকরণ গতি পায়নি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, প্রথম দিন অনেকে এসে টিকাকরণের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে গিয়েছেন। মঙ্গলবার টিকাকরণ হলেও কত জন তা নিয়েছেন, রাত পর্যন্ত সেই হিসেব জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে মেলেনি। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘কো-উইন অ্যাপ কাজ না করায় কাগজ-কলমে নাম নথিভুক্ত করেছে। সেই কারণে হিসেব চূড়ান্ত করা যায়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy