Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Durga Puja

ঘোষবাড়ির পুজোয় ছেদ পড়েনি পরম্পরায়

ঘোষ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, পূর্বপুরুষ রামরাম ঘোষ স্বপ্নাদেশ পেয়ে বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন। পরে সেই দায়িত্ব নেন তাঁর দুই পুত্র রাধামোহন ও হরপ্রসাদ।

An image of Goddess Durga

এই প্রতিমারই আরাধনা হয়। —নিজস্ব চিত্র।

অভিষেক চট্টোপাধ্যায়
ডোমজুড় শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৩৩
Share: Save:

দুর্গাপুজো কিছু পরিবারের কাছে শুধু পুজো নয়, পারিবারিক মিলন উৎসবও বটে। তেমনই এক পরিবার হল হাওড়ার ডোমজুড়ের খসমরার ঘোষ বাড়ি।

এই বাড়ির পুজো ঠিক কবে শুরু হয়েছিল, তা অজানা। পরিবারের সদস্যেরা জানান, এখন যে ঠাকুর দালানে পুজো হয়, সেটি তৈরি হয়েছিল ১৭৯৪ সালে। সেই হিসেবে এই পুজোর বয়স এখন ২৩০। প্রাচীন পুজোর সাক্ষ্য হিসেবে রয়েছে তালপাতার পুঁথিতে লেখা দুর্গামন্ত্র।

ঘোষ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, পূর্বপুরুষ রামরাম ঘোষ স্বপ্নাদেশ পেয়ে বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন। পরে সেই দায়িত্ব নেন তাঁর দুই পুত্র রাধামোহন ও হরপ্রসাদ। তখন খসমরা গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যেত সরস্বতী নদী। এই পুজো শুরুর পরে সেই নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। সে এখন শীর্ণকায়। কালের নিয়মে ঘোষ বাড়ির দুর্গাপুজোরও জাঁক কমেছে। তবে পরম্পরায় ছেদ পড়েনি। পরবর্তী সময়ে হরপ্রসাদের ছয় ছেলে ও তাঁদের বংশের পরবর্তী প্রজন্ম পুজোর হাল ধরেন। সেটাই চলে আসছে। ওই ছয় পরিবারের সদস্যেরাই এখন পালা করে পুজোর দায়িত্ব সামলান।

এ বারের পুজো হবে হরপ্রসাদের সেজো ছেলের পরিবারের বর্তমান সদস্যদের পরিচালনায়। পরিবারের পক্ষে রমেন ঘোষ বলেন, "আমাদের পূর্বপুরুষ জমিদার ছিলেন। সে সময়ে পুজোর আড়ম্বর অন্য রকম ছিল। এখন আমাদের পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। পুজোটাই সকলের কাছে এক হওয়ার উপলক্ষ্য।" তিনি জানালেন, আগে তাঁদের পুজোয় ছাগল বলি দেওয়া হত। ২০১৮ সালে ২২৫ বছরের পুজোয় পরিবারের সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে সেই প্রথা বন্ধ করা হয়। এখন চালকুমড়ো বলি দেওয়া হয়। অষ্টমীর দিন পরিবারের লোকজন ও অতিথিদের নিয়ে হয় খাওয়াদাওয়া হয়।

এই পুজোর মৃৎশিল্পী, পুরোহিত, কামারেরা রয়েছেন বংশ পরম্পরায়। পুজো উপলক্ষে থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এখন ঠাকুর দালানে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে জোর কদমে। স্থানীয় বাসিন্দা অশোককুমার ঘোষ, তড়িৎকুমার ঘোষের কথায়, ‘‘বেশ কয়েক বছর আগে আমাদের গ্রামে বারোয়ারি পুজো শুরু হয়েছে। তবে তার আগে ঘোষ বাড়ির পুজোই গ্রামের একমাত্র দুর্গাপুজো ছিল বলা যায়। সময় বদলেছে। তবে গ্রামবাসীদের সঙ্গে এই পুজোর পুরনো বন্ধন এখনও রয়ে গিয়েছে।’’ পারিবারিক মিলন উৎসবের সঙ্গে কোথাও গ্রামবাসীদের এক হওয়ার জায়গাও হয়ে ওঠে ঘোষ বাড়ির দুর্গাপুজো।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy