Advertisement
E-Paper

এখনও জমে আগের জঞ্জাল, দুর্বিষহ পরিস্থিতি হাওড়ায়

গত সপ্তাহের শেষ দিকে ভাগাড়ে ধস নামার পরে হাওড়া শহরের আবর্জনা বেলগাছিয়া ভাগাড়ে ফেলা বন্ধ করে দেয় পুরসভা। আড়ুপাড়াতেও বিকল্প ভাগাড় তৈরি করতে গিয়ে ব্যর্থ হয় পুরসভা।

গত শনিবার থেকে শহরে জমেছে ১২০০ টনেরও বেশি আবর্জনা।

গত শনিবার থেকে শহরে জমেছে ১২০০ টনেরও বেশি আবর্জনা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৫ ০৯:২৮
Share
Save

জঞ্জাল-যন্ত্রণা কাটছে না কিছুতেই! হাওড়ার বেলগাছিয়া ভাগাড়ে ধস নামায় গত শনিবার থেকে শহরে জমেছে ১২০০ টনেরও বেশি আবর্জনা। বিকল্প ভাগাড়ের ব্যবস্থা না হওয়ায় সেই আবর্জনা তোলা যায়নি। আপাতত প্রতিদিনের ৬৫০ টন জঞ্জাল কলকাতার ধাপায় নিয়ে গিয়ে ফেলা হলেও আগের আবর্জনা ভ্যাটেই পড়ে আছে। আর এটাই কার্যত মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে হাওড়া পুরসভার। প্রতিদিন বাসিন্দাদের অভিযোগের পাহাড় জমছে পুর দফতরে। শুক্রবার এ নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন পুর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী, পুর কমিশনার বন্দনা পোখরিওয়াল এবং সাফাই দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজন মতো ডাম্পার, জেসিবি ভাড়া নিয়ে আগামী সোমবারের মধ্যে ওই ১২০০ টন আবর্জনা সরিয়ে ফেলা হবে।

গত সপ্তাহের শেষ দিকে ভাগাড়ে ধস নামার পরে হাওড়া শহরের আবর্জনা বেলগাছিয়া ভাগাড়ে ফেলা বন্ধ করে দেয় পুরসভা। আড়ুপাড়াতেও বিকল্প ভাগাড় তৈরি করতে গিয়ে ব্যর্থ হয় পুরসভা। এলাকার বাসিন্দাদের বিক্ষোভের জেরে পিছু হটতে হয় পুর কর্তৃপক্ষকে। শেষে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নির্দেশে কলকাতা পুরসভার ধাপায় বৃহস্পতিবার থেকে আবর্জনা ফেলা শুরু হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও হাওড়ার উত্তর থেকে দক্ষিণ, সর্বত্রই অলিগলিতে ভ্যাট উপচে রাস্তায় জমে থাকছে জঞ্জাল। এই সংক্রান্ত অসংখ্য অভিযোগ পুরসভায় জমা পড়তে শুরু করে। বাসিন্দাদের দাবি, অবিলম্বে শহরকে আবর্জনামুক্ত করতে হবে। কারণ, দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে উঠেছে।

এ দিন হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী জানান, বর্তমানে ওয়ার্ডগুলি থেকে সংগ্রহ করা নিত্যদিনের আবর্জনা ধাপায় ফেলে আসা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হল, শনিবার থেকে শহরে জমে থাকা আবর্জনা সরানো যাচ্ছে না। চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘এই কয়েক দিনে প্রায় ১২০০ টন পুরনো আবর্জনা জমেছে, যা সরানোর জন্য পুরসভা একটি বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। ঠিক হয়েছে, আগামী তিন দিনের মধ্যে ওই আবর্জনা ধাপায় ফেলে আসার জন্য বাইরে থেকে প্রয়োজন মতো ডাম্পার ও জেসিবি ভাড়া নেওয়া হবে। কাজ শুরু হবে আজ, শনিবার সকাল থেকেই। সোমবারের মধ্যে শহর যাতে সম্পূর্ণ আবর্জনামুক্ত করা যায়, তার জন্যই এই বিশেষ উদ্যোগ।’’

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন প্রতিদিন গড়ে ৩০টি ডাম্পার আবর্জনা তুলে ধাপায় ফেলে আসছে। আগে হাওড়ায় মোট ৬০টি ডাম্পার ও লরি বেলগাছিয়া ভাগাড়ে আবর্জনা ফেলত। কিন্তু বিভিন্ন এজেন্সির পাঠানো আবর্জনা ফেলার গাড়িগুলির প্রায় ৫০ শতাংশই লজ্‌ঝড়ে হয়ে যাওয়ায় এবং অধিকাংশ গাড়ির কাগজপত্র ঠিক না থাকায় সেগুলি কলকাতায় পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে রোজকার সমস্ত আবর্জনা ধাপায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। পুরসভার সাফাই বিভাগের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘ধাপায় একটু ভাল গাড়ি পাঠাতে হচ্ছে এবং পুরো আবর্জনা ঢাকা দেওয়া থাকছে। কারণ, কলকাতায় হাওড়ার মতো আবর্জনা রাস্তায় ফেলতে ফেলতে নিয়ে যাওয়া যাবে না।’’

আবর্জনার গাড়ির সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে পুর চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘আমরা ঠিক করেছি, এখন থেকে ছ’চাকার বড় ডাম্পার ছাড়া ছোট গাড়ি ধাপায় পাঠানো হবে না। কারণ, ছ’চাকার ডাম্পারগুলি অধিকাংশই নতুন এবং একটি গাড়ি প্রায় ১০ টন আবর্জনা নিয়ে যেতে সক্ষম।’’ এ দিকে, এ দিন ভাগাড়ে ধসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের স্থায়ী পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে পুরসভা ভবনে অভিযান চালায় সিপিএম। তাদের আটকাতে বিশাল পুলিশি ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Howrah Howrah Municipal Corporation

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}