গোঘাটের বেঙ্গাই পঞ্চায়েতের জয়ী বিজেপি প্রার্থী। —নিজস্ব চিত্র।
শূন্যের খরা কাটল। হুগলি জেলা পরিষদের ৫৩টি আসনের মধ্যে দু’টি গেল বিজেপির ঝুলিতে। এই প্রথম এখানে পদ্ম ফুটল। বামেদের হাত এ বারেও ফাঁকা।
গতবার হুগলিতে জেলা পরিষদের আসন ছিল ৫০টি। এ বার বেড়ে ৫৩টি হয়েছে। বিজেপির জেতা দু’টি আসনই আরামবাগ মহকুমার খানাকুল-২ ব্লকের। একটিতে খানাকুলের বিজেপি বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ হারিয়েছেন তৃণমূলের জেলা পরিষদের বিদায়ী কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তীকে। অন্যটিতে জেলা পরিষদের বিদায়ী সদস্য নজিবুল করিম হেরেছেন কালীপদ অধিকারীর কাছে।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে ২০১৩ সালে তৃণমূল ৪৫টি আসনে জিতেছিল। ৫টি ছিল বামেদের। ’১৮-র ভোটে ব্যপক সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ১৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল শাসকদল। বাকি ৩৭টি আসনও দখল করেছিল তারা। পরে ৫ জন বিজেপিতে চলে যান। এ বার ভোটে প্রতিটি আসনে বিরোধীদের উপস্থিতি ছিল। আরামবাগ মহকুমা এবং ধনেখালি বাদে ভোটে শাসকদলের ‘দাদাগিরি’র অভিযোগও বিশেষ শোনা যায়নি। যদিও, গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা।
তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া এ বারের নির্বাচন শান্তিতে হয়েছে। দুর্নীতি নিয়ে বিরোধীদের প্রচার হালে পানি পায়নি। রাজ্য সরকারের সামাজিক প্রকল্পেই মানুষ আস্থা জানিয়েছেন। হারের জ্বালায় প্রলেপ লাগাতে সিপিএম, বিজেপি ‘সন্ত্রাসের’ বুলি আওড়াচ্ছে। পরিবহণমন্ত্রী তথা তৃণমূল মুখপাত্র স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ভোট হয়েছে উন্নয়নের পক্ষে। বিরোধী কুৎসার বিপক্ষে। বিজেপির উপর থেকে ভরসা হারিয়েছেন মানুষ।’’
জেলায় তৃণমূলের আধিপত্যের মধ্যেই খানাকুল-২ ব্লকে তিন স্তরেই তাদের টেক্কা দিয়েছে গেরুয়া বাহিনী। তিনটির মধ্যে জেলা পরিষদের একটি আসন তৃণমূল পেয়েছে। ১১টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭টি বিজেপির। পঞ্চায়েত সমিতির ৩৩টি আসনের ১৮টি তাদের দখলে। সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘মানুষ দুর্নীতিমুক্ত পঞ্চায়েত গড়তেই সাড়া দিয়েছেন। গণতন্ত্র রক্ষার তাগিদে মানুষ বুথ রক্ষা করে বিজেপিকে সমর্থন করেছেন।’’ একই প্রতিক্রিয়া কালীপদর। মনোজ বলেন, ‘‘রায় মাথা পেতে নিয়েছি।’’
তিন প্রাক্তন দলীয় বিধায়ক অসীম মাঝি, মানস মজুমদার এবং কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরাকে জেলা পরিষদে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। তিন জনেই জিতেছেন। এর আগে মানস জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষের পদ সামলেছেন। অসীম, কৃষ্ণচন্দ্র জেলা পরিষদে নবাগত। গত দু’বারের সভাধিপতি মেহবুব রহমান জয়ের হ্যাটট্রিক করলেন। এ বার অবশ্য সংরক্ষণের কারণে তিনি সভাধিপতি হতে পারবেন না।
তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় বহু নতুন মুখ ছিল। সকলেই জিতেছেন। আরামবাগে জেলা পরিষদের ৪২ নম্বর আসনে জিতেছেন শতরূপা পোদ্দার। তিনি আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের বোন। গত নির্বাচনে তারকেশ্বরে জেলা পরিষদের ৩৪ নম্বর আসনে (এ বার এটি ৩৬ নম্বর) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতেন তৃণমূলের শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন তিনি দাপুটে যুবনেতা। বিরোধীদের অভিযোগ, সন্ত্রাস করে বিরোধীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য করেছিলেন তিনি। নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়ে শান্তনু এখন হাজতে। তৃণমূল তাঁকে বহিষ্কার করেছে। তারকেশ্বরের ওই আসনের দিকে রাজনৈতিক মহলের চোখ ছিল। জিতেছে জোড়াফুলই।
তৃণমূল নেতৃত্বের সূত্রের বক্তব্য, আরামবাগ মহকুমার একাধিক ব্লকে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চিন্তায় রেখেছিল। তবে, খানাকুল-২ বাদে সে ভাবে কোথাও বিশেষ বেগ পেতে হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy