—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
একশো দিনের কাজের প্রকল্প বন্ধ প্রায় দু’বছর ধরে। পঞ্চায়েতের তরফ এই প্রকল্পের মাধ্যমে বেশ কিছু কাজ হত গ্রামাঞ্চলে। তার মধ্যে খাল সংস্কার ও বনসৃজন অন্যতম। প্রকল্প বন্ধের জেরে সেই কাজ বন্ধ। ফলে সমস্যায় জর্জরিত অনুসারী নানা কাজও।
সামনেই বোরো চাষের মরসুম। প্রকল্পের টাকায় বিভিন্ন সুতি খাল (নদী থেকে বেরনো সরু খাল) সংস্কার হত। সেই খাল দিয়ে নদীর জল এনে বোরো চাষ হত মাঠে। এখন সুতি খালগুলি পানা ও বর্জ্য জমে বদ্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। বোরো চাষ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন হাওড়ার চাষিরা।
এই জেলায় বোরো চাষ হয় দামোদর ও মুণ্ডেশ্বরীর জলে। ডিভিসি জল ছাড়লে তা জেলায় আসে ওই দুই নদী দিয়েই। সেই জল বিভিন্ন খালের মাধ্যমে জমিতে ঢোকে। তাতেই বোরো চাষ হয়।জেলায় সব থেকে বেশি বোরো চাষ হয় আমতা-২ ব্লকে। এই ব্লকটি বন্যাপ্রবণ হওয়ায় এখানে বর্ষার মরসুমে আমন ধানের চাষ খুব একটা হয় না। তাই সুখা মরশুমে বোরো চাষের উপরে নির্ভর করেন চাষিরা। তাজপুর গ্রামের উপ-প্রধান গোলাম খান বলেন, ‘‘আমাদের পঞ্চায়েতটি দামোদরের ধারে অবস্থিত। ডিভিসির যে ছাড়া জল দামোদরে আসে, সেই জলেই বোরো চাষ হয়। কিন্তু খাল সংস্কার না হওয়ায় জল মাঠে আসবে কী করে? অনেক জমিতেই চাষ হবে না।’’ সমস্যার কথা তিনি ব্লক ও জেলা প্রশাসনের কাছে জানিয়েছেন বলে গোলামের দাবি।
ব্লকের ১৪টি পঞ্চায়েতেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর। আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল বলেন, ‘‘গত বছরেও একই সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ক্ষুদ্র সেচ দফতর খালগুলি সংস্কার করে জলবাহিত করার উপযোগী করেছিল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাতে কাজ করেছিলেন জবকার্ডধারীরা। এ বারও সেটা করা হবে।’’
প্রকল্প না হওয়ায় বন্ধ সামাজিক বনসৃজনের কাজও। এই প্রকল্পে প্রতি বছর লক্ষাধিক গাছের চারা রোপণ করা হয়। গত দু’বছর ধরে সেটাও বন্ধ। বাগনান-২ ব্লকের হাল্যান পঞ্চায়েতের প্রধান মাসুদ রহমান বলেন, ‘‘যে পরিমাণ গাছ কাটা হয়, তার অভাব পূরণ করা হয় নতুন চারা রোপন করে। কিন্তু এই এলাকায় গত দু’বছর ধরে চারা রোপণ করা যাচ্ছে না। অথচ, পুরনো গাছ কেটে ফেলতে হচ্ছে নানা প্রয়োজনে। প্রাকৃতিক দুর্যোগেও অনেক গাছ পড়ে গিয়েছে। পরিবেশের পক্ষে এটা অপূরণীয় ক্ষতি।’’
জেলায় জবকার্ডধারীর সংখ্যা প্রায় চার লক্ষ। প্রশাসন সূত্রের খবর, মজুরি এবং উপকরণের দাম বাবদ বকেয়া রয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। শুধু জবকার্ডধারীদের মজুরি বাবদই বকেয়া আড়াইশো কোটি টাকা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিভিন্ন সরকারি কাজে জবকার্ডধারীদের বহাল করা হলেও তা প্রকল্পের তুলনায় যে সিন্ধুতে বিন্দুর মতো— জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ।
বিজেপির পক্ষ থেকে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হয়েছে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে। দলের গ্রামীণ জেলা সভাপতি অরুণউদয় পাল চৌধুরী বলেন, ‘‘রাজ্য এই প্রকল্পে অনেক দুর্নীতি করেছে। যে টাকা পেয়েছে, তার হিসাব দেয়নি। তাই কেন্দ্র টাকা আটকেছে।’’
তৃণমূলের পাল্টা দাবি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই টাকা আটকে রেখেছে বিজেপি সরকার। পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী পুলক রায় বলেন, ‘‘কেন্দ্র বার বার এই রাজ্যে প্রকল্প পরিদর্শন করেছে। দুর্নীতির কোনও অভিযোগ পায়নি। আসলে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয় তারা মানতে পারেনি। সেই পরাজয়ের শোধ নিতে চাইছে গরিব মানুষের ভাত বন্ধ করে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy