প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রীয় ‘কিসাননিধি’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হতে চান হুগলি জেলার বহু চাষি। ভোটের দিন ঘোষণার আগে পর্যন্ত হুগলি জেলার বিভিন্ন ব্লকের কৃষি দফতরে ভিড় সে কথাই বলেছে। কিন্তু এই প্রকল্প নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে প্রচারের ঘাটতি রয়েছে বলে চাষিদের অনেকের অভিযোগ। তাঁরা বলছেন, কেন্দ্রীয় প্রকল্পটি নিয়ে রাজ্য সরকার লুকোছাপা করতে চাইছে। এ পর্যন্ত যা প্রচার, তা শুধুই মুখে মুখে।
কেন্দ্রের এই প্রকল্পে রাজ্য সরকার প্রথমে সায় দেয়নি। এতে কৃষকদের সুফল পেতে তৃণমূল পরিচালিত সরকার বাধা দিচ্ছে বলে ভোটের মুখে জোর সমালোচনা শুরু করে বিজেপি। অবশ্য সম্প্রতি রাজ্য সরকার প্রকল্পটি মেনে নিয়েছে। হুগলিতে পয়লা ফেব্রয়ারি থেকে প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে, রাজ্য সরকারের নিজস্ব যে ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্প আছে, প্রচার শুধু তাকে ঘিরেই।
কেন্দ্রীয় প্রকল্পটির নিয়ম বলছে, যে সব চাষির জমির পরচা আছে, তাঁরা বছরে তিনটি কিস্তিতে মোট ৬ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য পাবেন। রাজ্যের অন্যতম ধান ও আলু উৎপাদক জেলা হুগলি। ব্যাঙ্ক বা মহাজনের থেকে ঋণ নিয়ে বহু চাষি চাষ করেন। কেন্দ্রীয় প্রকল্পটির অন্তর্ভুক্ত হতে পারলে, তাঁরা উপকৃত হতে পারতেন বলে মনে করছেন। তাঁদের অনেকে অবশ্য রাজ্য সরকারের ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পে
শামিল হয়েছে।
গোঘাটের দেওয়ানগঞ্জের শ্যামল পাল, আরামবাগের তিরোলের শেখ ইয়াসিন, পুরশুড়ার সোদপুরের বিমল মাইতি, খানাকুলের ঘোষপুরের শুকুর আলি প্রমুখ চাষির বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের মতোই কেন্দ্রের ‘কিসাননিধি’ প্র কল্পও কৃষকদের আর্থিক সহায়তার জন্য। কৃষকবন্ধুর জন্য সরকারি ভাবে মাইকে প্রচার, শিবির করা হচ্ছে। পোস্টার-ফেস্টুন লাগানো হচ্ছে। কিসাননিধি নিয়ে এই উদ্যোগ নেই।’’
প্রত্যাশিত ভাবে বিজেপিও একই অভিযোগ তুলেছে। দলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, ‘‘ মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর দল নিজেদের কৃষকদরদি হিসাবে প্রচার করেন। তা যে মিথ্যা, কৃষকরা টের পাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় প্রকল্পটির জনপ্রিয়তা খর্ব করতেই পরিকল্পিত ভাবে প্রচার করা হয়নি। এতে চাষিদেরই ক্ষতি হচ্ছে। ভোট মিটে গেলে আমরাই প্রচারে নামব।’’ সম্প্রতি রাজ্য সফরে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অর্থমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, কিসাননিধি প্রকল্প থেকে কোনও কৃষক বঞ্চিত হবেন না। এ রাজ্যের চাষিদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার তার ব্যবস্থা করবে।
প্রচারের অভাব যে রয়েছে, জেলার বিভিন্ন ব্লক কৃষি দফতরের সূত্র তা মানছে। কৃষি দফতরের বিভিন্ন স্তর থেকে বলা হয়, কেন্দ্রীয় প্রকল্পটির প্রচার নিয়ে রাজ্য সরকারের কোনও নির্দেশিকা নেই। প্রশ্ন রয়েছে তৃণমূলের অন্দরেও। গোঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোরঞ্জন পাল বলেন, ‘‘প্রচারের নির্দেশ এলেই করা হবে। তবে আমার ব্যক্তিগত মত, কৃষকদের যেখানে উপকার, সেখানে প্রচার করা যেতেই পারত।’’ একই বক্তব্য পুরশুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মমিনউদ্দিন মিদ্দারও।
রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার অবশ্য বলেন, ‘‘যাদের ইতিমধ্যে পোর্টালে নাম আছে, ফোন করে তাঁদের ডেকে নেওয়া হচ্ছে। এখন নতুন করে তালিকাভুক্ত করার কিছু নেই। আমাদের কাছে চাষিদের তথ্য, টেলিফোন নম্বর রয়েছে। প্রচার কিসের!’’
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কিসাননিধি প্রকল্পে যাঁরা আগে অনলাইনে আবেদন করেছিলেন, তাঁদের ডাকা হচ্ছে। কৃষকবন্ধু প্রকল্পে নথিভুক্ত হয়েছেন, তাঁদের নামও কিসাননিধি পোর্টালে তোলা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য যাঁরা আধার কার্ড সহযোগে আবেদন করেছিলেন, তাঁদের নামই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের পোর্টালে তোলা হচ্ছে। কেননা, এই প্রকল্পে নথিভুক্তির জন্য আধার কার্ড জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। আগে যাঁরা আধারকার্ড দিয়ে আবেদন করেছিলেন, তাঁদের নামের তালিকা চলে এসেছে। যাচাইয়ের পরে বাকি চাষিদের পরবর্তী দফায় নথিভুক্ত করা হবে হবে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫২ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে
জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy