Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Drivers on Protest

মজুরির দাবিতে ধর্মঘট পুরসভার গাড়িচালকদের

পুরসভায় সবমিলিয়ে প্রায় ৪০ জন গাড়িচালক রয়েছেন। সকলেই অস্থায়ী। সকালে চালকদের বোঝাতে চুঁচুড়ার কারবালা মোড়ের গ্যারাজে যান পুর-পারিষদ (স্বাস্থ্য) জয়দেব অধিকারী।

মজুরি সংক্রান্ত দাবী মেটানোর জন্য পুরসভার চালকদের আলোচনা।

মজুরি সংক্রান্ত দাবী মেটানোর জন্য পুরসভার চালকদের আলোচনা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৯:৩৯
Share: Save:

মাস শেষ হতে চলল। এখনও পর্যন্ত তাঁরা নভেম্বর মাসের মজুরি পাননি, এই অভিযোগে শনিবার সকাল থেকে ধর্মঘট শুরু করেন হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার গাড়িচালকেরা। দুপুরে পুরপ্রধান অমিত রায়ের সঙ্গে তাঁরা বচসায় জড়ান। অমিতের দাবি, মজুরি দেওয়া হয়ে গিয়েছে। তা মানতে পারেননি গাড়িচালকেরা। তাঁদের দাবি, পুরপ্রধান মিথ্যা বলছেন। ধর্মঘট চালিয়ে নিয়ে যাবেন বলে তাঁরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ফলে, আজ, রবিবার থেকে পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্স, জলের গাড়ি, সাফাই গাড়ি রাস্তায় নামবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। তেমন হলে পুর পরিষেবা বিঘ্নিত হবে বলে আশঙ্কা করছেন শহরবাসীর অনেকে।

পুরপ্রধান অবশ্য আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘গাড়িচালকদের মজুরি দেওয়া হয়েছে। এরপরেও যদি তাঁরা কাজ না করেন, তা হলে মজুরি কাটা যাবে। প্রয়োজনে অন্য লোককে দিয়ে কাজ করানো হবে।’’

পুরসভায় সবমিলিয়ে প্রায় ৪০ জন গাড়িচালক রয়েছেন। সকলেই অস্থায়ী। সকালে চালকদের বোঝাতে চুঁচুড়ার কারবালা মোড়ের গ্যারাজে যান পুর-পারিষদ (স্বাস্থ্য) জয়দেব অধিকারী। বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেও তিনি চালকদের ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেননি।

জয়দেব বলেন, "পুরসভার ভাঁড়ারের অবস্থা ভাল নয়। তাই মজুরি দিতে দেরি হচ্ছে। চালকদের সিদ্ধান্ত অনৈতিক নয়। পুরপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

এর ঘণ্টাদুয়েক পরেই পুরপ্রধান সাংবাদিকদের জানান, মজুরি দেওয়া হয়ে গিয়েছে। দুপুরে পুরসভায় যান গাড়িচালকেরা। সূত্রের খবর, পুরপ্রধানের ঘরে ঢুকে মজুরি মেলার দিনক্ষণ জানতে চান তাঁরা। তা নিয়েই অমিতের সঙ্গে বচসায় জড়ান। এক গাড়িচালকের কথায়, "কর্মীরা টাকা পেয়েছে কি পায়নি, জানেন না! এমন চেয়ারম্যান দেখিনি! উনি (অমিত) মিথ্যা কথা বলছেন।’’ আর এক চালক বলেন, ‘‘পুরপ্রধানের কাছ থেকে ভাল ব্যবহার আশা করেছিলাম। উনি পরিষ্কার বলে দিলেন, কাজ না করলে অন্য লোককে নেওয়া হবে। মজুরি না পাওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট থেকে আমরা সরছি না।’’

মজুরি নিয়ে গোলমাল এই পুরসভায় অবশ্য নতুন নয়। পুরসভা সূত্রে খবর, প্রায় ২২০০ অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন এখানে। তাঁদের প্রাত্যহিক মজুরি ন্যূনতম ২৭০ টাকা। এঁদের মধ্যে প্রায় ৬০০ জনের মজুরি দেয় রাজ্য নগরোন্নয়ন সংস্থা (সুডা)। বাকি, প্রায় ১৬০০ জনের মজুরির জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় পুরসভা থেকে। সঙ্গে রয়েছে পেনশন। সুডা-র টাকা ধরে পুরসভা থেকে মাসিক মজুরি ও পেনশনের জন্য ব্যয় হয় ২ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। কিন্তু পুরসভার মাসিক আয় মাত্র ৭০ লক্ষ টাকার মতো। মিউটেশন বাবদ অতিরিক্ত আয় হলে সেই টাকা দিয়েই ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করা হয়।

এ দিনের ঘটনা শুনে হুগলি লোকসভার বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, "গোটা রাজ্যের সঙ্গে এই পুরসভাও দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে। এখানকার প্রতিনিধিরা পকেট ভরছেন। অস্থায়ী কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না।’’ দুর্নীতির অভিযোগ পুর কর্তৃপক্ষ মানেননি।

অন্য বিষয়গুলি:

Chinsurah Hooghly Chinsurah Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy