Advertisement
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Singur CPIM

তরুণের সংখ্যা বাড়লেও সিপিএমের রোগমুক্তি হয়নি

সোমবার সিঙ্গুরে শেষ হয়েছে সিপিএমের জেলা সম্মেলন। নতুন ৬৫ জনের জেলা কমিটির সদস্যদের বয়সের গড় ৫৮.১ থেকে কমে হয়েছে ৫২.৫২।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

রাজীব চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:২৬
Share: Save:

সিপিএমে ‘বৃদ্ধতন্ত্রের’ ভিত আলগা হতে শুরু করেছে। জেলা কমিটিগুলিতে তরুণদের সংখ্যাও বাড়ছে। কিন্তু বাম জমানায় দলের অন্দরে যে সব রোগ সংক্রমিত হয়েছিল, তা থেকে এখনও সম্পূর্ণ মুক্ত হতে পারেনি সিপিএম। দলের হুগলি জেলা সম্মেলনে পেশ করা রাজনৈতিক সাংগঠনিক খসড়া দলিল ব্যাখ্যা করে এমন মত দলের অনেকেরই।

সোমবার সিঙ্গুরে শেষ হয়েছে সিপিএমের জেলা সম্মেলন। নতুন ৬৫ জনের জেলা কমিটির সদস্যদের বয়সের গড় ৫৮.১ থেকে কমে হয়েছে ৫২.৫২। কমিটিতে মহিলার সংখ্যা আট থেকে বেড়ে দশ হয়েছে। পুরনো কমিটি থেকে দশকে বাদ দিয়ে নতুন ১৪ জনকে আনা হয়েছে। কমিটিতে একত্রিশ বছরের নীচে এক জনকে রাখা হয়েছে। অনূর্ধ্ব ৪০ এবং ৫৫ বছরের সদস্য রয়েছেন যথাক্রমে ছ’জন ও ৩০ জন। দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের জেলা সভাপতি ও সম্পাদকদের জেলা কমিটিতে নেওয়া হয়েছে। রাজ্য কমিটির নির্দেশ ছিল— জেলা কমিটির মোট সদস্যের অন্তত এক তৃতীয়াংশের বয়স পঞ্চান্নর কম হতে হবে। সেই নির্দেশও পালিত হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি পাঁচ থেকে বেড়ে সাত হয়েছে। বেড়েছে জনজাতিদের প্রতিনিধিত্ব। ফের জেলা সম্পাদক করা হয়েছে দেবব্রত ঘোষকে। তিনি বলছেন, ‘‘জেলা কমিটিতে তরুণদের সংখ্যা বেড়েছে। এতে দল আরও সক্রিয় ও গতিশীল হবে।’’ জেলা কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য অর্ণবদাস (বাদশা)।

বেশ কিছু দোষত্রুটি থেকে এখনও দল মুক্ত হতে পারেনি বলে খসড়া প্রতিবেদনে স্বীকার করেছে সিপিএম। যেমন, দেখা গিয়েছে, এখনও দলের ২০-২৫ শতাংশ সদস্য নিষ্ক্রিয়। পাঁচ দফা কাজের ভিত্তিতে সদস্যপদ পুনর্নবীকরণের সিদ্ধান্ত অনেক ক্ষেত্রেই কার্যকর হয় না। দলের সতর্কবার্তা— নিষ্ক্রিয় সদস্যেরা সক্রিয়দের নিষ্ক্রিয় করে তোলেন। প্রতিবেদন বলছে, দলের একাংশ আয় গোপন করেন ‘লেভি’ কম দিতে। ‘আয় গোপন করার অর্থ দলকে মিথ্যা বলা’। অনেক সময়ে দলকে দু’দিনের আয় দিতে হয়। অনেকে একদিনের আয় দেন। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, ‘আয় থাকা সত্ত্বেও যাঁরা এক দিনের আয়ও দেবেন না, তাঁদের সদস্যপদ পুনর্নবীকরণ করা হবে না।’’ দলের মোট শাখার (৮৬২) দশ শতাংশ নিষ্ক্রিয়। ৮০ শতাংশ বুথে সংগঠন গড়ে তোলা গেলেও তা রক্ষা করা যায়নি।

দলে আসা তরুণদের ভূমিকার ঢালাও প্রশংসা করেছে সিপিএম। একই সঙ্গে প্রতিবেদনে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘প্রবীণেরা যে গুণ অর্জন করেছিলেন, (এলাকার মানুষকে চেনা, পার্টি সম্পর্কে ধ্যানধারনা গড়ে তোলা, রাজনৈতিক পড়াশোনা করা) এ সব সংস্কৃতি কি তাঁদের (তরুণদের) মধ্যে গড়ে তোলা যাচ্ছে? ভোটার লিস্টের কাজ কি মন দিয়ে করছেন? কৃষক, খেতমজুর, মহিলা ফ্রন্টের কাজে মনোনিবেশ করছেন? এ ক্ষেত্রে দুর্বলতা কাজ করছে।’ পার্টি শিক্ষা নিয়ে বড় অংশের মধ্যে অনীহা কাজ করে। এর মধ্যে নবীন-প্রবীণ, সব অংশই আছেন। কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাকেও ভাল চোখে দেখছে না জেলা কমিটি।

গত কয়েক বছরে পথে সিপিএমের দৃশ্যমানতা বাড়লেও ভোটবাক্সে তার প্রভাব বিশেষ মেলেনি। পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় বিজেপিকে তিনে ঠেলে প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে এসেছিল বামেরা। গত পুরভোটে জেলায় ১৩টি পুরসভার মধ্যে দশটিতে প্রধান বিরোধী হয় বাম। ভোটের শতকরা হার কোথাও কোথাও ৩০ শতাংশেও পৌঁছেছিল। কিন্তু লোকসভায় ফের তৃতীয় স্থানে নেমে আসে বামেরা। ঘুরে দাঁড়াতে ২০ দফা কর্মসূচি নির্ধারণ করেছে সিপিএম।

অন্য বিষয়গুলি:

Singur CPIM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy