Advertisement
০৩ জুলাই ২০২৪
Land Encroachment

জবরদখলে নিকাশির ক্ষতি, পরিদর্শনে ব্যবস্থার ইঙ্গিত

দিল্লি রোডের ধারে কোথাও নয়ানজুলির উপরে কংক্রিটের পিলার তুলে ঢালাই করে তৈরি হয়েছে হোটেল।

সরেজমিনে পুরসভার আধিকারিকরা।

সরেজমিনে পুরসভার আধিকারিকরা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বৈদ্যবাটী শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪ ০৮:২৭
Share: Save:

রাজ্য জুড়ে বেআইনি নানা কাজ বন্ধ করতে প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট দফতরকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই সরকারি জমি জবরদখল, নয়ানজুলি ভরাটের অভিযোগ নিয়ে নড়ে বসল বৈদ্যবাটী পুরসভা। শনিবার এ ব্যাপারে সরেজমিনে অনুসন্ধান করেন পুরসভার আধিকারিকেরা।

এই শহরে রাস্তার ধার, নয়ানজুলি জবরদখলের অভিযোগ নতুন নয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, জবরদখল নিয়ে সংশ্লিষ্ট পুরসভা, পঞ্চায়েত, পুলিশ উদাসীন। তাদের জানিয়ে লাভ হয় না। ফলে, নিকাশি ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। সামান্য বৃষ্টিতে এলাকা ভাসছে। নিচু এলাকায় বছরভর জল জমে থাকছে। ক্ষতি হচ্ছে জীবন-জীবিকার। এ বার পুরসভার পদক্ষেপে অনেকেই কিছুটা আশ্বস্ত। তবে, শেষ পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হয় কি না, তাঁরা সে দিকে তাকিয়ে।

পুরসভার সূত্রে খবর, পুরপ্রধানের নির্দেশেই এই পরিদর্শন। দেখা গিয়েছে, দিল্লি রোডের ধারে কোথাও নয়ানজুলির উপরে কংক্রিটের পিলার তুলে ঢালাই করে তৈরি হয়েছে হোটেল। কোথাও নয়ানজুলি ভরাট করে পাকা নির্মাণ করতে নিকাশির জন্য সরু পাইপ বসানো হয়েছে। তারকেশ্বর রোডের দু’পাশে সরকারি জায়গায় দোকান, নয়ানজুলি ভরাট এবং জবরদখল করে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। জিটি রোডের দু’পাশে নিকাশি নালার উপরে দোকান। তাতে বিপর্যস্ত হয়েছে নিকাশি ব্যবস্থা।

পুরসভার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নোডাল অফিসার উজ্জ্বল শেঠ ও স্যানিটারি ইনস্পেক্টর কৃষ্ণেন্দু কুন্ডু বলেন, ‘‘দিল্লি রোডের পাশে সরকারি জায়গায় কোনও অনুমতি ছাড়াই অবৈধ ভাবে এই কার্যকলাপ চলছে। এই শহরে দেড় লক্ষ মানুষের বাস। বেআইনি দখলের ফলে নিকাশি ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। রাস্তার পাশে সরকারি জায়গায় বা নর্দমার উপরে বেআইনি ভাবে দোকান নির্মাণকারীদের নোটিস দেওয়া হবে। পূর্ত দফতরেও জানানো হবে, যাতে তাদের আওতায় থাকা জায়গা জবরদখলমুক্ত হয়।’’

পুরপ্রধান পিন্টু মাহাতো বলেন, ‘‘জবরদখল নিয়ে মৌখিক অভিযোগ আসছে। যেতে-আসতে আমাদেরও চোখে পড়ছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে দখলকারীদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করা হয়েছে। নয়ানজুলি আটকে কোনও কাজ বরদাস্ত করা হবে না। পূর্ত দফতরের অনুমতি নিয়ে কারখানার মালিক ও ব্যবসায়ীদের বক্স কালভার্ট নির্মাণ করতে বলা হবে।’’

স্থানীয় বিধায়ক তথা তৃণমূলের শ্রীরামপুর-হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এমন কাজ কোথায় হচ্ছে, আমার জানা নেই। কোথাও হলে স্থানীয় পুরসভা বা পঞ্চায়েতে জানাব। রাতের অন্ধকারে মাটি ফেলে নয়ানজুলি ভরাট হলে, পুলিশ দেখবে।’’ চন্দননগর কমিশনারেটের ডিসি (শ্রীরামপুর) অর্ণব বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে জানাব।’’

বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মোহন আদকেক মন্তব্য, ‘‘সরকারি জমি দখলমুক্ত করা নিয়ে যে নির্দেশ, তা পুরোটাই ভাঁওতার রাজনীতি। কে নয়ানজুলি ভরাট করছে, কে রাতের অন্ধকারে মাটি পাচার করছে, কে সরকারি জমি বিক্রি করছে— সকলেই জানেন। সবটাই তৃণমূল।’’

পুলিশ-প্রশাসনের নজর এড়িয়ে এই সব কাজ চলছে কী ভাবে, প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Baidyabati drainage system
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE