হোগলা বন মাথা তুলে আছে। প্রকল্প এলাকার ভিতরে সিঙ্গুরের এই জমিকেই চাষযোগ্য করার দাবি উঠেছে। নিজস্ব চিত্র।
সামনেই বর্ষার মরসুম। চাষিদের আবেদনে সাড়া দিয়ে সিঙ্গুরের প্রকল্প এলাকার সেই জমির ২৫০ একরকে ফের চাষযোগ্য করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু এখনও কাজই শুরু হল না। তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন চাষিরা। এ বারও বর্ষায় জমি ডুববে, এই আশঙ্কা তাঁদের অনেকেরই। অবিলম্বে চাষিরা ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলছেন।
মাস কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার এখানকার তিনটি মৌজার জমি পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করেন। সেচ দফতরকে দায়িত্ব দেওয়া হয় সরকারি দফতরে রাখা পুরনো নকশা সংগ্রহ করে টাটাদের প্রকল্পের আগে যে নিকাশি ব্যবস্থা ছিল তা ফিরিয়ে আনতে।
কিন্তু সেই কাজ এ পর্যন্ত শুরু করা গেল না কেন?
মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান কৃষি উপদেষ্টা বলেন, ‘‘সেচ দফতরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সিঙ্গুরের ওই জমির টেন্ডার করে ব্যবস্থা নিতে। মাঝে করোনার জন্য কাজ পিছিয়ে গিয়েছিল।’’ জেলা সেচ দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘ওই জমিতে সমীক্ষার কাজ এবং টেন্ডার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু করোনার জন্য সবকিছু পিছিয়ে গিয়েছে। তবে ওই কাজ হবে।’’ টাটাদের গাড়ি কারখানার জন্য বাম আমলে সিঙ্গুরের প্রায় হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল পাঁচটি মৌজা থেকে। তার মধ্যে প্রধান তিনটি মৌজা— গোপালনগর, বেড়াবেড়ি এবং খাসেরভেড়ি। এখনও যে ২৫০ একর জমি চাষযোগ্য হয়নি তার বেশিরভাগটাই রয়ে গিয়েছে ওই তিন মৌজায়।
সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ দুধকুমার ধাড়া এখানকার জমি রক্ষার আন্দোলনে অন্যতম প্রধান মুখ ছিলেন। তিনি শনিবার বলেন, ‘‘এখনই তিনটি মৌজার অন্তত ২৫০ বিঘে জমিকে চাষের উপযুক্ত করে দেওয়া জরুরি। ওই কাজের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কাজ হয়নি। আগামী বর্ষার মরসুমেও চাষিরা চাষ করতে পারবেন না প্রকল্প এলাকায়।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চাষি বলেন, ‘‘আমরা কৃষিনির্ভর সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। আমরা চাইছি, রাজ্য সরকার বহুবার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, এখন তা রক্ষা করুক।’’
বাম আমলে টাটাদের গাড়ি কারখানার জন্য অধিগৃহীত ওই জমি শীর্ষ আদালতের নির্দেশে তৃণমূল সরকার ২০১৬-তে ফিরিয়ে দেওয়ার সময় তা ‘চাষযোগ্য’ করে দেওয়া হয় বলে দাবি করেছিল। কিন্তু ওই জমির অনেকাংশেই চাষ হয়নি। নিকাশি ব্যবস্থা না-থাকায় বর্ষার জল দীর্ঘদিন জমে থাকে বলে অভিযোগ চাষিদের। ফলে, তাঁরা চাষ করতে পারছেন না।
জমি পুরোপুরি চাষযোগ্য না হওয়ায় বিজেপি বারবারই রাজ্য সরকারকে দুষেছে। বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় একাধিকবার অভিযোগ করেছেন, ‘‘রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েও ওই জমিকে চাষযোগ্য করে দিল না। পুরোটাই ভাঁওতা।’’ পক্ষান্তরে, শাসক দলের শ্রীরামপুর-হুগলি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘হুগলির সাংসদ সিঙ্গুরের বিষয়ে কী জানেন? তৃণমূল ওখানে চাষিদের পাশে আছে। আগে কাজ হয়েছে। যে কাজ বকেয়া রয়েছে, তা-ও বিবেচনা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy