বন্যায় প্লাবিত এলাকার একটি ছবি। প্রতীকী চিত্র।
মার্চ মাস শেষ হতে চলল। আরামবাগ মহকুমায় বন্যা মোকাবিলায় ‘আরামবাগ মাস্টার প্ল্যান’-এর দ্বিতীয় দফার কাজ এখনও শুরুই হল না। ফলে, বর্ষার আগে সেই কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন সাধারণ গ্রামবাসী। বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রধানরাও মনে করছেন, বর্ষার আগে কাজ শেষ না হলে ভুগতে হতে পারে।
গত বছর নভেম্বরে মহকুমাশাসকের (আরামবাগ) অফিসে ‘আরামবাগ মাস্টার প্ল্যান’-এর দ্বিতীয় দফার কাজ নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছিল। বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রধানদের দাবি ছিল, বর্ষার আগেই ওই কাজ শুরু এবং শেষ করার। প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে কী কী কাজ গুরুত্বপূর্ণ, সেই সুপারিশও তাঁরা সেচ দফতরের কাছে করেছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে, অরোরো খালের শেষ ১২ কিমি সংস্কার, ধান্যগোড়ির প্রায় সাড়ে ৫ কিমি বাঁধ মজবুত করে বাঁধা, বন্দর থেকে পানশিউলি পর্যন্ত রূপনারায়ণ নদের পাড় বরাবর ১২ কিমি পুরো কংক্রিটের দেওয়াল, দ্বারকেশ্বর কিছু বাঁধ, স্লুস গেট এবং সেতু তৈরি।
খানাকুল-২ ব্লকের ধান্যগোড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান বীণাপাণি ভৌমিক বলেন, ‘‘বৈঠকের পর ৪ মাস পেরোতে চলল। কোনও কাজই শুরু হয়নি। অন্তত মাস্টার প্ল্যানের প্রথম দফার কাজে বাদ পড়া অরোরা খালের শেষ ১২ কিমি অংশ সংস্কার করা হলে আমাদের দক্ষিণের ৪টি পঞ্চায়েত এলাকা-সহ মহকুমার বিপন্নতা অনেকটা কাটত। ওই খাল দিয়ে মহকুমার সব জমা জল রূপনারায়ণে পড়ে।’’ একই রকম ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন আরও কয়েকটি পঞ্চায়েতের প্রধানও।
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অরোরা খালের শেষ ১২ কিমি সংস্কারের জন্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা এবং শসাখালিতে স্লুস গেট ও সেতু নির্মাণের জন্য প্রায় ৮ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
জেলা সেচ দফতরের এগ্জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবেন্দ্র কুমার সিংহ বলেন, ‘‘অরোরা খালের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি আরামবাগ মাস্টার প্ল্যানের দ্বিতীয় পর্যায়ে ধরা হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। অনুমোদন মিললেই দরপত্র ডেকে কাজ শুরু করা হবে।’’
খানাকুলের মাড়োখানার শেখ ইশা, ধান্যগোড়ির বিমল সামন্ত, জগৎপুরের সুমন্ত সরকারের মতো বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, বন্যা প্রতিরোধে প্রতি বছর মার্চ মাসে থেকেই প্রশাসনিক তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু এ বার এখনও ভাঙা এবং দুর্বল নদীবাঁধ চিহ্নিত করার কাজও শুরু হয়নি বলে তাঁদের উদ্বেগ বাড়ছে।
মহকুমার জল নিকাশিতে গুরুত্বপূর্ণ মজা খালগুলিকে সংস্কার করতে ‘আরামবাগ মাস্টার প্ল্যান’ প্রকল্প নেয় রাজ্য সরকার। প্রথম পর্যায়ে কাজ শুরু হয় ২০১৯-এর নভেম্বরে। শেষ হয় ২০২১ সালের গোড়ায়। মোট ৩৯ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকায় ওই দফায় আরামবাগের কানা দ্বারকেশ্বর, কানা মুণ্ডেশ্বরী, মলয়পুর খাল, কাটা খাল, ভোমরা খাল, অরোরা খাল সংস্কারের পরিকল্পনা হয়। কিন্তু যে খাল শেষ পর্যন্ত সব জল বয়ে নিয়ে রূপনারায়ণে ফেলে সেই অরোরার ১৬ কিলোমিটারের মধ্যে প্রকল্পের আওতায় এসেছিল মাত্র গোড়ার ৪ কিলোমিটার। যেখানে জলটা রূপনারায়ণ নদে পড়ে, সেই শেষ ১২ কিমি বাদ থাকায় প্রকল্পের কোনও সুফল মেলেনি বলে প্রধানদের অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy