অভিজিৎ দাস, দেবযানী দাস এবং তাঁদের মেয়ে সম্রাজ্ঞী। নিজস্ব চিত্র
ঘরের দরজা ভেঙে একই পরিবারের তিন জনের দেহ উদ্ধার হল হাওড়ায়। সম্পর্কে তাঁরা বাবা, মা ও মেয়ে। এই রহস্যমৃত্যুর তদন্তে নেমে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, স্ত্রী ও কন্যাকে খুন করে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন অভিজিৎ দাস (৪৭) নামের এক ব্যক্তি। তিনি পেশায় গ্যাসের ব্যবসায়ী ছিলেন। অভিজিতের স্ত্রী দেবযানী (৪২) এবং তাঁদের মেয়ে সম্রাজ্ঞী (১৩)-র রক্তাক্ত দেহও উদ্ধার করেছে পুলিশ। অভিজিতের প্রতিবেশীদের থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, লকডাউন পর্বে তাঁর ব্যবসা ভাল চলছিল না। তার জেরে আর্থিক অনটন দেখা দিয়েছিল। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে এ নিয়ে অভিজিতের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর মনোমালিন্যও দেখা দেয়। অভিজিত মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলেই প্রাথমিক ভাবে আঁচ করছেন তদন্তকারীরা।
অভিজিৎরা লিলুয়া থানার বেলগাছিয়া কে রোডের বাসিন্দা ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, স্ত্রী এবং মেয়েকে হাতুড়ি মেরে খুন করেছেন অভিজিৎ। তার পর গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে আটটা নাগাদ তাঁকে শেষ বার প্রতিবেশীরা দেখতে পেয়েছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ব্যবসায়ী অভিজিতের কর্মীরা গত ২৯ সেপ্টেম্বর তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কারণ অভিজিতের ফোন বন্ধ ছিল।
অভিজিতের শ্বশুরবাড়ি পাশের পাড়াতেই। অভিজিতের শ্বশুর মৃত্যুঞ্জয় মিত্রের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মেয়ে জামাইয়ের সঙ্গে শেষ বার কথা হয়েছিল মঙ্গলবার রাতে। তার পর থেকে ওদের আর ফোনে পাইনি। আমার মেয়ে অসুস্থ। তার চিকিৎসার জন্য আমিই টাকা দিয়েছিলাম। কী করে কী হয়ে গেল জানি না।’’
অন্য দিকে, শনিবার বিকেল পর্যন্ত অভিজিৎ, দেবযানী এবং সম্রাজ্ঞীকে দেখতে না পেয়ে তাঁদের ব্যাপারে উৎসাহী হয়ে পড়েন প্রতিবেশীরা। খোঁজ করতে গিয়ে তাঁরা দেখেন, অভিজিৎদের বাড়ির দোতলা থেকে নেমে আসা পাইপ বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়েছে। তখনই তাঁদের সন্দেহ হয়। বাড়িতে ঢুকে তাঁরা দেখেন, দোতলার ঘরের দরজায় ভিতর থেকে বন্ধ। এর পরেই তাঁরা পুলিশে খবর দেন। লিলুয়া থানার পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে তিন জনের দেহ উদ্ধার করে। ওই দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। কী কারণে এই খুন এবং আত্মহত্যা, তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। তবে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিজিৎই যদি স্ত্রী এবং মেয়েকে খুন করে থাকেন তা হলে তিনি কী ভাবে ওই কাণ্ড ঘটালেন তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে এলে এই তদন্তে গতি আসবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy