Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Paddy Field

বিল বকেয়া, মিনির বিদ্যুৎ কাটায় ধানের জমিতে ফাটল

বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, প্রায় ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে ওই মিনি বাবদ। দিন কুড়ি আগে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

এ ভাবেই ফাটল ধরেছে জমিতে। নিজস্ব চিত্র

এ ভাবেই ফাটল ধরেছে জমিতে। নিজস্ব চিত্র

দীপঙ্কর দে
চণ্ডীতলা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৩ ০৯:২৯
Share: Save:

দীর্ঘদিন ধরে বিল বকেয়া। তাই চণ্ডীতলা-১ ব্লকের আঁইয়া পঞ্চায়েতের গণেশপুরে খেতে জল দেওয়ার মিনি ডিপ-টিউবওয়েলের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর। জমিতে ধান বসানোর পরে জলের অভাবে এখন মাথায় হাত পড়েছে কয়েকশো চাষির। তাঁদের চোখের সামনে জমি ফেটে যাচ্ছে। চাষিদের অভিযোগ, তাঁরা মিনির খরচ বাবদ টাকা স্থানীয় তৃণমূল কর্মী প্রতাপ রানাকে মিটিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু প্রতাপ টাকা বিদ্যুৎ দফতরে জমা না-দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এ নিয়ে বিডিওর দ্বারস্থ হয়েছেন চাষিরা। প্রতাপ অভিযোগ মানেননি।

বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর, প্রায় ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে ওই মিনি বাবদ। দিন কুড়ি আগে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

চাষিরা জানান, মিনির জল দিয়ে ৪০-৪৫ বিঘা জমিতে চাষ হয়। শ’তিনেক চাষি ওই মিনির উপরে নির্ভরশীল। বিভিন্ন মরসুমের চাষের জন্য বিভিন্ন হারে তাঁদের থেকে মিনির বিদ্যুতের খরচ নেয় বিদ্যুৎ দফতর। রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে সেই টাকা তাঁরা তৃণমূল কর্মী প্রতাপ রানাকে দেন। কিন্তু সেই টাকা জমা দেওয়া হয়নি বলে চাষিদের অভিযোগ। তাঁরা বিডিওর দ্বারস্থ হয়েছেন।

বিডিও নরোত্তম বিশ্বাস বলেন, ‘‘একটা অভিযোগ পেয়েছি। চাষিদের যাতে ক্ষতি না হয়, বিষয়টি দেখা হবে।’’ চণ্ডীতলা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মলয় খান বলেন, ‘‘পুরনো তিন লক্ষ টাকার বেশি বকেয়া রয়েছে। সেই কারণে মিনির বিদ্যুৎ সংযোগ কাটা হতে পারে। বিদ্যুৎ দফতরের সঙ্গে বসে বিষয়টি দেখা হবে।’’

প্রতাপের দাবি, ‘‘২০১১ থেকে ’১৯ সাল পর্যন্ত মিনির দায়িত্বে ছিলেন দলীয় নেতা উৎপল ঘোষ। সেই সময় কয়েক বছর ওঁর হয়ে টাকা তোলার কাজ করেছি। সব টাকা তুলে ওঁকে দিয়েছি। বর্তমানে যে হেতু আমি মিনির দায়িত্বে, তাই উৎপল আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে কোনও সমস্যা হয়নি।’’

উৎপল ওই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন যুব তৃণমূল সভাপতি। তাঁর দাবি, ‘‘আমি কোনও দিন মিনির দায়িত্বে ছিলাম না। গ্রামের লোক হিসেবে আমাকে চাষিরা মিটিংয়ে ডাকতেন। কী করলে ওঁদের ভাল হবে, উপদেশ দিতাম। চার-পাঁচটা ছেলে মিনি চালাত। তাঁদের পরিচালনা করতাম আমি। আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। তাতে আমার কিছু যায় আসে না।’’

তন্ময় ঘোষ নামে এক চাষির ক্ষোভ, ‘‘চাষের জন্য সময়মতো টাকা এলাকার প্রায় সব চাষি মিটিয়ে দিয়েছেন। তৃণমূলের লোক সব টাকা আত্মসাৎ করে নিয়েছেন। কিছু বলতে গেলে পুলিশের ভয় দেখানো হচ্ছে। এমনিতেই ধারদেনা করে চাষ করেছি। চাষে ক্ষতি হলে আত্মহত্যা ছাড়া অন্য পথ থাকবে না।’’

বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন বিরোধীরা। বিজেপি নেতা দিলীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূলের চুরি যখন ধরা পড়ে গিয়েছে, এক নেতা অন্যের নামে দোষ চাপিয়ে বাঁচাতে চেষ্টা করছেন। চাষির কী হবে, কেউ ভাবছেন না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Paddy Field chanditala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy