Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Hooghly River Waterway Cooperative Society

নিষ্পত্তি হয়নি দুর্নীতির অভিযোগের, ভোট জলপথ সমবায়ে

সংস্থার বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ আসায় বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছিল চার মাস আগে। সেই রিপোর্ট এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।

An image of corruption

—প্রতীকী চিত্র।

দেবাশিস দাশ
হুগলি শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩০
Share: Save:

বাজারে সংস্থার ঋণ আছে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। কর্মচারীদের বেতন হয়নি তিন মাস ধরে। সংস্থার বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ আসায় বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছিল চার মাস আগে। সেই রিপোর্ট এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। তার মধ্যেই আচমকা আগামী ২৮ মার্চ পরিচালকমণ্ডলীর নির্বাচনের দিন ঘোষণা করায় হুগলি নদী জলপথ সমবায় সমিতির কর্মীদের মধ্যে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে।

সমিতির সদস্য ও কর্মচারীদের অভিযোগ, অভিযুক্তদের আড়াল করতেই তড়িঘড়ি এই নির্বাচন। এমনকি, ইতিমধ্যেই যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে বহু সদস্যকে না জানিয়ে যেমন নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, তেমনই এমন অনেকের নাম রয়েছে যাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে পরিচালকমণ্ডলী ভেঙে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। এই নিয়ে ওই সংস্থার কর্মী ও সদস্যদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

হুগলি নদী জলপথ সমবায় সমিতি সূত্রের খবর, সংস্থার পরিচালকমণ্ডলীর শেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৫ সালে। কিন্তু সমিতি পরিচালনার ক্ষেত্রে চরম অবহেলা ও আর্থিক দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ ওঠায় ওই পরিচালকমণ্ডলী ভেঙে দিয়ে ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সমবায় দফতর থেকে এক জন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। রাজ্য সমবায় দফতরের নিয়োগ করা প্রশাসকেরাই এত দিন সমবায়টি চালিয়ে এসেছেন।

কিন্তু অভিযোগ, এর পরেও সমবায়ের কোনও উন্নতি হয়নি। ওই সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দু’বছর ধরে ৩০০ কর্মীর তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, কাঠের লঞ্চের ভাড়া, তেলের ভাড়া, অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের বকেয়া-সহ নানা খাতে বাকি রয়েছে পাঁচ কোটি টাকারও বেশি। ইতিমধ্যে বছরের পর বছর ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণ না করায় বাতিল হয়ে গিয়েছে সংস্থার আটটি লঞ্চ। বর্তমানে সংস্থার তিনটি বড় লঞ্চ ও পরিবহণ দফতরের দেওয়া পাঁচটি লঞ্চ চালিয়ে সংস্থাটি চালু রাখা হয়েছে।

এরই মধ্যে গত বছরের অক্টোবরে কর্মীদের পক্ষ থেকে ফের লক্ষ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ-সহ ২২ দফা অভিযোগ তুলে রাজ্যের সমবায় মন্ত্রীর কাছে চিঠি দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই মাসে রেজিস্ট্রার অব কোঅপারেটিভ সোসাইটির সহ-সচিব বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু কর্মীদের অভিযোগ, চার মাস কেটে গেলেও তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়েনি। এর মধ্যেই নির্বাচন ঘোষণা করা হল। প্রকাশ করা হয়েছে ২১০ জন সদস্যের খসড়া ভোটার তালিকাও। যার মধ্যে ২০২ জন ব্যবহারকারী সদস্য ও মাত্র ৮ জন স্থায়ী কর্মী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেন, ‘‘দুর্নীতি চাপা দেওয়ার জন্য অবৈধ ভাবে বোর্ড তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে। কারণ, সমবায়ের আইন অনুযায়ী ব্যবহারকারী সদস্য ও কর্মচারীদের সদস্য সংখ্যা ৬৬ শতাংশ এবং ৩৩ শতাংশ থাকার কথা। এ ছাড়া, ২৪-২৫ জন ব্যবহারকারী সদস্যের নাম উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে অভিযোগও দায়ের হয়েছে।’’

কিছু নাম যে বাদ গিয়েছে, তা মানছেন হাওড়ার দায়িত্বে থাকা অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার অব কোঅপারেটিভ সোসাইটি অসিত বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘হ্যাঁ, এটা জানি। এর জন্য আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি বাদ পড়া সদস্যদের শুনানিতে ডাকা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত সরকারি অফিসার বা কর্মীদের দিক থেকে নজর সরাতে এই নির্বাচন করা হচ্ছে, এই অভিযোগ ঠিক নয়। তদন্তের সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক নেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

financial corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy