Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
coronavirus

এ বারও জমল না ইদ, অক্ষয় তৃতীয়ার বাজার

অক্ষয় তৃতীয়ার আগেও সোনার দোকানে সাজ সাজ ভাব উধাও।

ইদের বাজারে ভিড় নেই উলুবেড়িয়ায় ।

ইদের বাজারে ভিড় নেই উলুবেড়িয়ায় । নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া-উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২১ ০৬:৩৯
Share: Save:

এ বারে লকডাউন নেই, কিন্তু বিধিনিষেধ আছে। তাই করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় এ বারেও মার খেল দুই জেলার অক্ষয় তৃতীয়া এবং ইদের বাজার। আজ, শুক্রবার জোড়া উৎসব। তার আগে বৃহস্পতিবার দুই জেলার বড় বাজারগুলিতে সে ভাবে ক্রেতার দেখা মিলল না।

বৃষ্টি, দোকান খোলার সময় বাঁধা এবং ট্রেন বন্ধ—এই ত্র্যহস্পর্শেই এ বার ব্যবসা জমল না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। করোনা পরিস্থিতির জন্য সকাল ৭টা থেকে ১০টা এবং বিকেল ৫টা থেকে ৭টা— দু’বেলা মিলিয়ে এই পাঁচ ঘণ্টা রাজ্য সরকারের তরফে দোকান খোলার ছাড়পত্র রয়েছে। কিন্তু তাতে ব্যবসা জমে না বলে দাবি অনেক ব্যবসায়ীরই। একটানা পাঁচ-ছ’ঘণ্টা দোকান খোলার ছাড়পত্র দেওয়ার দাবি তুলেছেন তাঁরা।

হুগলির অন্যতম বড় বাজার শ্রীরামপুর। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে ইদের বাজার এখানে একেবারেই জমেনি বলে ব্যবসায়ীদের খেদ। অক্ষয় তৃতীয়ার আগে যে কেনাকাটা হয়, তা-ও হয়নি। ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশের বক্তব্য, গ্রাম থেকে অনেকেই ট্রেনে করে শ্রীরামপুরে কেনাকাটা করতে আসেন। ট্রেন বন্ধ থাকায় তাঁরা আসতে পারছেন না। তার উপর দোকান খোলার যে সময় প্রশাসনের তরফে নির্দিষ্ট করা হয়েছে, তাতে পোশাক বা জুতোর ব্যবসা জমে ওঠা সম্ভব নয়।

শ্রীরামপুর স্টেশনের কাছে নেতাজি সুভাষ অ্যাভিনিউর এক পোশাক বিক্রেতার কথায়, ‘‘সকালের ওই তিন ঘণ্টায় লোকে আলু-পটল, মাছ-মাংস কেনে। তখন কে আর পোশাক কিনতে আসবেন?’’ দুলাল রায় নামে আর এক পোশাক বিক্রেতা বলেন, ‘‘সকালে বিক্রি হয় না। তা ছাড়া দোকান সাজাতেই আধ ঘণ্টার উপরে সময় লাগে। ফলে, বিকেলে ঘণ্টাখানেক দোকানদারির সুযোগ থাকে। এইটুকু সময়ে ক্রেতাও পাঁচটা দোকান ঘোরার সুযোগ পান না। আমরা উৎসবের দিকে তাকিয়ে থাকি। এ বার ভোটের জন্য চৈত্র সেলের বাজার মার খেয়েছে। এখন ইদের বাজার মার খেল। অক্ষয় তৃতীয়া উপলক্ষেও কেনাকাটা নেই। খুব খারাপ অবস্থা।’’

ভদ্রেশ্বরে অ্যাঙ্গাস ও চাঁপদানি বাজারের পোশাকের দোকানে ক্রেতার দেখা মেলেনি। চাঁপদানি বাজারের ব্যবসায়ী রাজকুমার সাউ বলেন, ‘‘দোকান খুব কম সময় খোলা থাকছে। সে জন্যেই কেনাকাটা করতে আসছেন কম। মানুষ বেরোচ্ছেন না বাইরে। মানুষের হাতে পয়সাও কম। বেচাকেনা না হওয়াটাই স্বাভাবিক।’’

হুগলি চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বসুর বক্তব্য, দোকান খোলার সময় নিয়ে প্রশাসনের ভাবা উচিত। দূর থেকে যে দোকানদার বা কর্মীরা আসেন, তাঁদের পক্ষে দু’বার আসা খুবই কঠিন। সেই কারণে সকাল ১০টা অথবা ১১টা থেকে টানা কয়েক ঘণ্টা দোকান খোলা থাকলে ক্রেতা-বিক্রেতা সকলেরই সুবিধা। সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘গোটা জেলাতেই ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েছেন। ইদের আগে ভালই বিক্রি হয়। অক্ষয় তৃতীয়াতেও হয়। এ বার কিছুই হল না।’’

উলুবেড়িয়ার অভিজাত বস্ত্র ব্যবসায়ী দেবাশিস বেজের কথায়, ‘‘কর্মীদের বেতন-সহ সব খরচ মিটিয়ে দোকান টিকিয়ে রাখাই অসুবিধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বছর লকডাউনের জন্য বেচাকেনা হয়নি। এ বছরও সেই করোনা আতঙ্কে মানুষ দোকানেই আসছেন না। গত ক’দিনের বৃষ্টিতে তো বাজার পুরো নষ্ট।’’

করোনা পরিস্থিতিতে গত বছর সোনার দাম ভরিতে ৫০ হাজার ছাড়িয়েছিল। এ বছর সেই দাম কিছুটা কমে ৪৫-৪৬ হাজারের কাছে ঘোরাফেরা করছে। এই পরিস্থিতিতে অক্ষয় তৃতীয়ার আগেও সোনার দোকানে সাজ সাজ ভাব উধাও। উলুবেড়িয়ার স্বর্ণ ব্যবসায়ী সৈকত দাস বলেন, ‘‘গত বছর থেকেই ব্যবসা ভাল চলছে না। মানুষ ভয়ে সোনা কিনছেন না। কবে যে ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াবে, অপেক্ষা তারই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

eid Akshaya Tritiya coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy