টিকার লাইন। সোমবার গোঘাটের কামারপুকুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
করোনার তৃতীয় ঢেউ এখন মাঝপর্বে। ওমিক্রনের সংক্রমণ ক্ষমতা দেখে স্তম্ভিত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা। কেউ ছাড় পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় সাবধানতা অবলম্বনে কী করণীয়? কী বলছেন চিকিৎসকেরা? আজ, দ্বিতীয় তথা শেষ কিস্তি।
২০১৯ সালে চিনের উহান প্রদেশে করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটে। ভারতে তা হানা দেয় ২০২০ সালে। ওই বছরের জুলাই-অগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে তা প্রবল আকার নেয়। বহু মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।
প্রথম ঢেউয়ের একেবারে প্রথম দিকের দিনগুলিতে ভাইরাসের পাশাপাশি এক মহাআতঙ্কও রোগীদের গ্রাস করেছিল। ফলে, মানসিক ভাবে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, রোগী— সকলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। যার প্রভাব পড়ে পুরো স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উপরেই।
দ্বিতীয় ঢেউ ছিল রীতিমতো আগ্রাসী। বহু মানুষকে ফুসফুসে মারাত্মক সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় অতি বিপজ্জনক ভাবে এবং দ্রুত। ফলে, হাসপাতালগুলিতেও বাড়তি চাপ তৈরি হয়। গত বছরের মার্চ থেকে মে পর্যন্ত দ্বিতীয় ঢেউয়ের ঝাপটা আমাদের রাজ্যকে ভুগিয়েছে ভালই।
সেই পর্ব পেরিয়ে এখন আমরা করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মুখোমুখি। এই পর্বে ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা অসম্ভব বেশি হলেও মারণ ক্ষমতা এখনও পর্যন্ত সে ভাবে লক্ষণীয় নয়। এমনও দেখা যাচ্ছে, একটি পাড়ার এক জনের জ্বর হলে পাড়াশুদ্ধ লোক একই উপসর্গে ভুগতে শুরু করছেন। কিন্তু হাসপাতালে তেমন ভর্তি হতে হচ্ছে না।
তবে, তার মানে এই নয়, আমাদের নিশ্চিন্ত হওয়ার সময় এসে গিয়েছে। কারণ, শরীরে করোনাভাইরাস যত দিন সক্রিয় থাকে তৃতীয় ঢেউ এখনও তত দিন পার হয়ে যায়নি। সাধারণ মানুষের এক ও একমাত্র কাজ— যথাসম্ভব সতর্ক ও সচেতন থাকা। অর্থাৎ, আরও কিছু দিন আমাদের নিয়ম মেনে চলতেই হবে। যেমন— যথাযথ ভাবে নাক-মুখ চেপে মাস্ক পরতে হবে। পকেটে ভরে বা থুতনিতে ঝুলিয়ে রাখলে চলবে না। কথা বলার সময় যদি যথাযথ ভাবে নাক-মুখ ঢেকে দু’জন মানুষ মাস্ক ব্যবহার করেন, তা হলে সংক্রমণের সম্ভাবনা প্রায় শূন্যে নেমে আসে।
খাওয়ার আগে, নাকে-মুখে-চোখে হাত দেওয়ার আগে সাবান দিয়ে অন্তত চল্লিশ সেকেন্ড সময় নিয়ে ভাল করে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। বেশি জনসমাগম হয়, এমন কোনও সামাজিক ক্ষেত্র, যেমন বাজার, ধর্মস্থান, উৎসবগৃহ, রেস্তরাঁ, গণ-পরিবহণ বা অন্য কোনও জমায়েতে অংশ নিতে বাধ্য হলে বাড়ি ফিরে পোশাক সাবান-জলে অন্তত কুড়ি মিনিট ভিজিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। গরম জলে সাবান মেখে স্নান সেরে নিতে হবে। বাইরে বেরোলে যথাসম্ভব শারীরিক দূরত্ব বিধি মেনে চলতে হবে।
তার পরেও জ্বর, শুকনো কাশি, সর্দি হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। একান্তই চিকিৎসকের পরামর্শ না পেলে জ্বর ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট হলে শুধু প্যারাসিটামল খেতে পারেন। চার ঘণ্টা অন্তর শরীরের তাপমাত্রা মেপে তা লিখে রাখুন। সঙ্গে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-সি খেতে পারেন। লেবু জাতীয় ফল খান। হাল্কা পুষ্টিকর খাবার খান। মনে রাখতে হবে, মানুষ সচেতন হলেই দ্রুত জব্দ হবে ভাইরাস।
লেখক: অর্ণব মাইতি, জেনারেল ফিজ়িশিয়ান, তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতাল
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy