Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

আট দিনে হুগলিতে করোনা আক্রান্ত ১০ হাজারের কাছে

চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন, নাগরিকরা বিধিনিষেধ যথাযথ ভাবে মেনে চলতে থাকলে একটু একটু করে সংক্রমণ কমবে। সাযুজ্য রেখে কমবে মৃতের সংখ্যাও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রকাশ পাল
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২১ ০৭:১৬
Share: Save:

করোনাভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত রুখতে চলতি মাসের গোড়া থেকেই জনজীবনে কিছু বিধিনিষেধ জারি করে রাজ্য সরকার। গত ১৬ তারিখ থেকে তাতে আরও কড়াকড়ি করা হয়। তার পরেও হুগলিতে সংক্রমণ বেলাগামই। এক হাজারের উপরে দৈনিক সংক্রমণের পাশাপাশি মৃতের সংখ্যাও চিন্তায় রেখেছে জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরকে।

তবে, চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন, নাগরিকরা বিধিনিষেধ যথাযথ ভাবে মেনে চলতে থাকলে একটু একটু করে সংক্রমণ কমবে। সাযুজ্য রেখে কমবে মৃতের সংখ্যাও।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে দেখা যাচ্ছে, গত ১৬ মে থেকে রবিবার পর্যন্ত ৮ দিনে সংক্রমিত হয়েছেন ৯৮১১ জন। দৈনিক গড়ে ১২২৬ জন। শুক্র এবং রবিবার দৈনিক সংক্রমিত হয়েছেন এক হাজার তিনশোর বেশি লোক। গত ১৬ মে-ও তাই ছিল। বেড়েছে অ্যাক্টিভ আক্রান্তের সংখ্যাও। ১৬ তারিখে অ্যাক্টিভ আক্রান্ত ছিলেন ৭৬২৬ জন। রবিবার এই সংখ্যা বেড়ে ৮১৫২ জনে দাঁড়িয়েছে। এই ক’দিনে মারা গিয়েছেন ৫৬ জন। অর্থাৎ, দৈনিক গড়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, জনজীবনে কড়া বিধিনিষেধ কার্যকর হওয়ার কয়েক দিনেই এর সুফল বোঝা যাবে, তার কোনও মানে নেই। কেননা, শরীরে করোনাভাইরাস প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে উপসর্গ দেখা যায় না। কয়েক দিন সময় লাগে। কড়াকড়ি কার্যকর হওয়ার দু’-এক দিন আগে থেকে যাঁরা সংক্রমিত হন, তাঁদের মধ্যে উপসর্গ এখন প্রকাশ পাচ্ছে। তাই, সংক্রমণ অনেকটা বেশি বলে মনে হচ্ছে। শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট জয়ন্ত সরকার এই অভিমতের শরিক। তিনি মনে করেন, ‘‘আরও দিন দশেক পরে হয়তো জনজীবনে কড়া নিয়ন্ত্রণের সুফল বোঝা যাবে।’’

ওয়ালশে করোনা চিকিৎসা হয়। কোভিড পরীক্ষাও করা হয়। সেই নিরিখে জয়ন্তবাবুর বক্তব্য, ‘‘কোভিড পরীক্ষা করাতে আসা লোকজনের সংখ্যা অনেকটা কমেছে। আগে দৈনিক এক-দেড়শো জন পরীক্ষা করালে এখন ওই সংখ্যা অর্ধেকের কাছাকাছি। তার মানে উপসর্গযুক্ত রোগী কমেছে। পরীক্ষার পজ়িটিভিটির হার অল্প হলেও কমেছে।’’

জেলাশাসক দীপপ্রিয়া পি বলেন, ‘‘সংক্রমণ যাতে কমে, তার জন্য সব ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে। জনজীবনে যে বিধিনিষেধ রয়েছে, তা যাতে ঠিকঠাক ভাবে সবাই মেনে চলেন, তা দেখা হচ্ছে। আগের থেকে বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া যাচ্ছে।’’

এ দিকে, কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আসছে। তবে, বিভিন্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ঘূর্ণিঝড়ের জন্য কোভিড চিকিৎসার ব্যবস্থাপনায় সমস্যা হবে না। একটি হাসপাতালের এক কর্তার কথায়, ‘‘ঝড়ের জন্য রোগীদের যাতায়াতে হয়তো কিছুটা সমস্যা হতে পারে, তবে হাসপাতালে এলে চিকিৎসায় খামতি থাকবে না। তার জন্য আমরা প্রস্তুত।’’ তিনি জানান, আগামী কয়েক দিনের জন্য অক্সিজেন-সহ জরুরি ওষুধ মজুত করা হয়েছে। জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। চিকিৎসক, নার্স বা অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের হাসপাতালের কাছেই থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ওয়ালশের সুপার জয়ন্তবাবু বলেন, ‘‘যে ভাবে প্রস্তুতি সারা আছে, তাতে আগামী রবিবার পর্যন্ত আমাদের চলে যাবে।’’

ইয়াসের মোকাবিলায় এবং ক্ষয়ক্ষতি হলে দ্রুত পুনর্গঠনের লক্ষ্যে গত কয়েক দিন ধরে জেলা প্রশাসনের তরফে প্রস্তুতি বৈঠক করা হচ্ছে। সোমবার জেলাশাসক বিভিন্ন ব্লক এবং পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ যাতে করোনার সুরক্ষাবিধি মেনে করা হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক করে দেন জেলাশাসক।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy