তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের আবির খেলা। বুধবার গোঘাটের কুমারগঞ্জে। — নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েতের বোর্ড নিয়ে ডামাডোল বাধল আরামবাগ মহকুমায়।
তৃণমূলের রাজ্যস্তরের নির্দেশ উপেক্ষা করে প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচন নিয়ে ভোটাভুটি হল পুরশুড়ার কেলেপাড়া এবং গোঘাট ২ ব্লকের হাজিপুর পঞ্চায়েতে। আবার ভোটাভুটি না হলেও খানাকুল-১ ব্লকের কিশোরপুর-২ পঞ্চায়েতে দলের পাঠানো নামকে হটিয়ে অন্য জনকে প্রধান করা হয়েছে। যে সব জায়গায় দলের নির্দেশ মানা হয়নি, সেখানে ‘উপযুক্ত ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রামেন্দু সিংহরায়।
বুধবার পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন প্রক্রিয়ার প্রথম দিন মহকুমার ছ’টি ব্লকের মোট ৬৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ২২টিতে প্রধান, উপপ্রধান এবং দলনেতা নির্বাচন হয়। সব ক’টি পঞ্চায়েতেই তৃণমূলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটাভুটি হয়েছে পুরশুড়া ব্লকের কেলেপাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান এবং উপপ্রধান দু’টি পদেই। তাতে প্রধান পদে দলের পাঠানো নাম ছিল সুপর্ণা পণ্ডিতের। তিনি জিতেছেন ৭-৩ ভোটে। তবে উপপ্রধান পদের দাবিদার শেখ আলাউদ্দিন ২ ভোটে হেরে যান। ওই পদে জিতেছেন শ্রীকান্ত মালিক। ওই পঞ্চায়েতে ১৬টি আসনের মধ্যে ৬টি জিতেছিল বিজেপি। তারা ভোটে যোগ দেয়নি।
১৫টি আসনের (৩টি পেয়েছে বিজেপি) হাজিপুরে পঞ্চায়েতে দলের মনোনীত প্রার্থী সোহরাব মণ্ডল ছাড়া শেখ সাজাহানের নাম প্রস্তাব করায় সেখানে ভোট হয়েছিল। সোহরাবই ৯-৩ ভোটে জিতে প্রধান হয়েছেন। বিজেপি ভোটাভুটিতে যোগ দেয়নি।
অন্য দিকে, কিশোরপুর-২ পঞ্চায়েতে দলের পাঠানো নাম রিয়া সামন্তের নাম কেউ প্রস্তাব না করায় বাকি ১২ জন সদস্যর সমর্থনে প্রধান হয়েছেন দলেরই শিউলি কোটাল। ১৬ আসনের আরামবাগের আরান্ডি ১ পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে তৃণমূলের ১০টি আসনের মধ্যে ১টি দলের যুব সংগঠনের। বাকি ৫টি বিজেপি এবং ১টি বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের নির্দল। নির্দল প্রার্থী, তৃণমূলের যুব সংগঠনের পাপিয়া খাতুনের নাম প্রস্তাব করায় ভোটাভুটির দাবি করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। পঞ্চায়েত সংলগ্ন এলাকায় দু’পক্ষের জমায়েত হয়। বিশাল পুলিশ বাহিনী অবশ্য তাদের হটিয়ে দেয়। সেখানে পাপিয়া কোনও সমর্থন না পাওয়ায় দলের মনোনীত প্রার্থীই প্রধান হন। একই ভাবে বদলগঞ্জ-১ পঞ্চায়েতে এক দল সুপ্রিয়া প্রামাণিককে প্রধান করার দাবি জানালেও দলের বাকিদের সমর্থন মেলেনি।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধান-উপপ্রধান পদের একাধিক দাবিদার থাকায় তৃণমূলের রাজ্য স্তরের নির্দেশ ছিল, ওই পদের জন্য কোনও ভোটাভুটি করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট পদগুলিতে দল যাঁদের নাম পাঠাবে, তাঁরাই সেই পদগুলির অধিকারী হবেন। সমস্ত বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রামেন্দু সিংহরায় বলেন, “স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা করে পঞ্চায়েত পদাধিকারীদের সমস্ত নাম রাজ্যস্তর থেকে এসেছে জেলা সভাপতি হিসাবে আমার কাছে। আমি সেই তালিকা ব্লক ও অঞ্চল সভাপতিদের দিয়েছি। তারপরেও যাঁরা দলের নির্দেশ মানেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এ দিন পঞ্চায়েতের বোর্ড পঠন প্রক্রিয়ার পদাধিকারী নির্বাচনে অধিকাংশ জায়গায় বিরোধী বিজেপি এবং সিপিএম হাজির হয়নি। কয়েকটি জায়গায় হাজির থাকলেও ভোটদান বা কোনও মতামত দানে বিরত ছিল তারা। দলের তরফেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ ও সিপিএমের গোঘাট-২ ব্লক এরিয়া কমিটির সম্পাদক সত্যসাধন ঘোষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy