Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
flood

flood: রূপনারায়ণের জলে আবার বাড়ল দুর্ভোগ

গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত মোট ৭৫ জন দুর্গতকে ধান্যগোড়ি হাইস্কুলের ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে এনেছে পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসন।

গবাদি পশু নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেন দুর্গতেরা। খানাকুলের কাকনান কালীতলা এলাকায়।

গবাদি পশু নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছেন দুর্গতেরা। খানাকুলের কাকনান কালীতলা এলাকায়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।

পীযূষ নন্দী
খানাকুল শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:১২
Share: Save:

দুর্ভোগ আর পিছু ছাড়ছে না!

মাসদেড়েক আগে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল খানাকুল-২ ব্লকে। সেই জল পুরোপুরি নেমেছে গত মাসের মাঝামাঝি। বন্যা পরবর্তী পুনর্গঠনের কাজ সবে শুরু হয়েছিল। এর মধ্যে ফের নিম্নচাপের বৃষ্টিতে রূপনারায়ণের জলস্তর বাড়ায় প্লাবিত হল এখানকার চারটি পঞ্চায়েতের (ধান্যগোড়ি, মাড়োখানা, জগৎপুর এবং রাজহাটি-১) অন্তত ২৪টি গ্রাম। ফের ঘর ছাড়তে হল কিছু গ্রামবাসীকে। সঙ্কট জীবিকাতেও।

গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত মোট ৭৫ জন দুর্গতকে ধান্যগোড়ি হাইস্কুলের ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে এনেছে পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসন। তাঁদেরই একজন ধান্যগোড়ির জেলেপাড়ার ফুল্লরা সামন্ত। বন্যায় তাঁদের দোতলা পাকা বাড়ির অধিকাংশটাই ভেঙে পড়েছিল। অবশিষ্ট অংশে ছাউনি দিয়ে দিন গুজরান করছিলেন। সেটাও আর হল না। তাঁর খেদ, ‘‘ঘরে ফিরে থিতু হতে না হতেই ফের ত্রাণ শিবিরে আসতে হল। বন্যা আমাদের সর্বস্বান্ত করে দিল।’’

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বারকেশ্বর এবং রূপনারায়ণের বাঁধের মোট ৬ জায়গা ভেঙে এবং অসংখ্য জায়গায় ‘ঘোগ’ (গর্ত) হয়ে প্লাবিত হয়েছিল খানাকুলের দু’টি ব্লক। ধান্যগোড়িতেই রূপনারায়ণের তিন জায়গায় বাঁধ ভাঙে। গত বৃহস্পতিবার ফের অতিবৃষ্টির জেরে দ্বারকেশ্বর নদ এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের দিক থেকে আসা শিলাবতী জলে ফুলে উঠে রূপনারায়ণ। সেই বাড়তি জলই জেলেপাড়ার ভাঙন দিয়ে ঢুকে প্লাবিত করেছে আরামবাগ মহকুমার সবচেয়ে নিচু এই চার পঞ্চায়েত এলাকা।

ধান্যগোড়িতে প্রায় ৬ ফুট জল জমেছে। রাস্তাও ডুবে যাওয়ায় বন্দর পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ হয়েছে। বাকি তিন পঞ্চায়েত এলাকাতে অনেক জায়গাতেই একহাঁটু জল। কোথাও কোথাও আরও বেশি।

পরিস্থিতির জন্য প্রশাসনকে দায়ী করেছেন দুর্গতদের একাংশ। তাঁদের মধ্যে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া জেলেপাড়ার লতিকা সামন্ত এবং ঘোড়াদহের পঞ্চানন জানার অভিযোগ, ‘‘ভাঙা বাঁধ সংস্কার না হওয়াতেই মাসখানেকের মধ্যে ফের দুর্ভোগে পড়তে হল।’’

জল জমেছে চাষজমিতেও। ফলে, অনেকেরই চাষ নষ্ট হয়েছে। এরপর কী করবেন, তাঁরা জানেন না। ঘোড়াদহের দীনবন্ধু জানা নামে এক দুর্গতের খেদ, “বন্যায় রোয়া ধান নষ্ট হয়েছে। জল নামতে কষ্ট করে আমন ধানের বীজ কিনে ফের রোপণ করেছিলাম। ফের নষ্ট হল। জমিতে প্রায় ৬ ফুট জল।”

ধান্যগোড়ির উপপ্রধান দিলীপ সানকি জানান, বন্যার জল নামতে এলাকায় প্রায় ৩০০ বিঘা জমিতে ফের ধান চাষ হচ্ছিল। অনেকে পুকুর সংস্কার করে ফের মাছ চাষ করেছিলেন। সব নষ্ট হল। আগের দফায় ক্ষতিপূরণ এখনও মেলেনি। তারমধ্যেই ফের বিপর্যয়। একই রকম অসহায়তার কথা শোনা গিয়েছে বাকি পঞ্চায়েতের প্রধানদের মুখেও। মারোখানার উপপ্রধান শেখ আব্বাস আব্বাস বলেন, ‘‘এখানে শশাপোতা মৌজার কিছুটা জেগে থাকলেও বাকি সব জলের তলায়। জল বাড়ছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

flood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy