কালো পতাকা দেখানো হচ্ছে স্মৃতি ইরানিকে। নিজস্ব চিত্র
তিন দিনের হুগলি সফরের শেষদিন, বুধবার জাঙ্গিপাড়ায় সভা করে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। সকালে বোড়হল মোড় থেকে জাঙ্গিপাড়া বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত স্বাধীনতার ‘অমৃত মহোৎসব’ উপলক্ষে বিজেপির পদযাত্রায় যোগ দেন তিনি। পদযাত্রা শেষে বাস স্ট্যান্ডে সভা হয়।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা করতে স্মৃতি বলেন, ‘‘তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবাইকে ধমকেছে, যাতে আজকের অনুষ্ঠানে কেউ না আসেন। তৃণমূলের চোখরাঙানি উপেক্ষা করে আপনারা এসেছেন। রাতের অন্ধকারে যারা যায়, তারা ভিতু।’’
অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী তথা জাঙ্গিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘হুমকি দেওয়ার প্রশ্নই নেই। জাঙ্গিপাড়ায় বিজেপির লোক কোথায়? যেটুকু ভোট ওরা পেয়েছিল, তা সিপিএমের। সভায় লোক নেই দেখে মুখ বাঁচাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বস্তাপচা অভিযোগ করছেন।’’
এ দিন রাজবলহাট-২ পঞ্চায়েতের নস্করডাঙা এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। দিন কুড়ি আগে আঁটপুর পঞ্চায়েতের বিলাড়ায় তৃণমূলের হামলায় শুভেন্দু পণ্ডিত নামে এক বিজেপি কর্মী আহত হন বলে অভিযোগ। তাঁর পা ভাঙে। হাতেও চোট লাগে। এ দিন বাড়িতে তাঁকে দেখতে যান স্মৃতি। শুভেন্দুর বাড়ি অসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে। ওই কাজ শেষ করার জন্য দেড় লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। রাজবলহাটের মালিকপাড়ায় দলের কর্মী অরুণ মালিকের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারেন মন্ত্রী। মেনুতে ছিল সাদা ভাত, ডাল, শাক ভাজা, পটল ভাজা, উচ্ছে ভাজা, শুক্তো, আলু পোস্ত, পাঁপড় এবং টোম্যাটো ও খেজুরের চাটনি।
বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, অরুণের বাবা আনন্দ মালিক বাম জমানায় (২৯ বছর আগে) সিপিএমের হাতে খুন হন। সন্ধ্যায় শ্রীরামপুরে বিজেপির সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে স্মৃতি বলেন, ‘‘নিহত ওই বিজেপি কর্মীর স্ত্রী অনেক কষ্টে দুই সন্তানকে মানুষ করেছেন। তাঁর লড়াইয়ের পাশে বিজেপি থাকবে।’’
রাজ্যের অরাজক পরিস্থিতি, নিয়োগে, বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি, কাটমানি প্রভৃতির অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়েননি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি। কংগ্রেসেরও কড়া সমালোচনা করেন। দলের শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে দলের নেতাদের নিয়ে এ দিন বৈঠকও করেন তিনি।
স্মৃতির তোলা দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে স্নেহাশিস পাল্টা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের অজস্র দুর্নীতি রয়েছে। ব্যাঙ্কের কোষাগার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিজেপির ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিরা বিদেশে পালিয়েছেন। তাঁদের সেই সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি নেতারা দুর্নীতির পাহাড়ে বসে আছেন। আগে এর জবাব ওঁরা দিন।’’
সাংবাদিক সম্মেলনে রান্নার গ্যাসের দামবৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের অসুবিধার প্রশ্নে সরাসরি উত্তর না দিয়ে কোভিড পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে কী ভাবে দাঁড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার, স্মৃতি তার ফিরিস্তি তুলে ধরেন। এ প্রসঙ্গে কংগ্রেসের সময়ের সঙ্গে মোদী জমানার তুলনা করেও ওই দলকে একহাত নেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
কলকাতায় ফেরার পথে ডানকুনির চাকুন্দিতে স্মৃতি ইরানিকে কালো পতাকা দেখান কংগ্রেসের কিছু লোক। কনভয়ের সামনে গ্যাস সিলিন্ডার বসিয়ে দেওয়া হয়। ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয়। ডানকুনি শহর কংগ্রেসের সভাপতি শেখ হিসাবুদ্দিন রহমান বলেন, ‘‘কংগ্রেস কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতায় থাকার সময় স্মৃতি ইরানি রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সরব হয়েছিলেন। রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার নিয়ে লোকসভার বাইরে আন্দোলন করেছিলেন। আজ রান্নার গ্যাস-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া। তিনি তার সাফাই গাইছেন। সেই কারণেই ওঁকে কালো পতাকা দেখানো হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy