Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
TMCP

TMCP: টিএমসিপি-র বসন্তোৎসবে মারামারি, দোকানে হামলা

পুলিশ আধিকারিকদের দাবি, মাঠে পুলিশ ছিল না। বাইরের রাস্তায় গাড়িতে টহল দিচ্ছিল।

ঘটনার পরে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ ব্যবসায়ীদের।

ঘটনার পরে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ ব্যবসায়ীদের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২২ ০৮:০৭
Share: Save:

শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের উদ্যোগে চলছিল বসন্তোৎসব। মাঠ জুড়ে ডিজে বাজিয়ে চলছিল উদ্দাম নাচ। ছন্দপতন হল শেষ পর্বে। আনন্দ বদলে গেল বিশৃঙ্খলায়। তা থেকে লাঠিসোটা নিয়ে মারামারি। এক জনের মাথা ফাটল। ভাঙচুর হল একটি দোকান। আতঙ্কিত হলেন সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী।

বৃহস্পতিবার, দোলের আগের বিকেলে এই ঘটনার সাক্ষী রইল শ্রীরামপুর স্টেশন সংলগ্ন গান্ধী ময়দান। তৃণমূলের একাংশের দাবি, শ্রীরামপুর কলেজে কাদের আধিপত্য থাকবে, তা নিয়েই সংগঠনের দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল হয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য ‘বহিরাগত তত্ত্ব’ খাড়া করতে চেষ্টার কসুর করছেন না। ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করেন ব্যবসায়ীরা।

শ্রীরামপুর থানা সূত্রের খবর, এক জনকে আটক করা হয়েছে। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক সন্ধ্যায় বলেন, ‘‘দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। একটি দোকানের একটা কাচ ভেঙে গিয়েছে। কোনও লিখিত অভিযোগ থানায় জমা পড়েনি। পড়লে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ নিষিদ্ধ ডিজে বক্স বাজিয়ে অনুষ্ঠান হলেও পুলিশ কেন তা বাজেয়াপ্ত করল না, সেই প্রশ্ন উঠছে। এ ক্ষেত্রে পুলিশের সাফাই, তাদের কাছে কেউ
অভিযোগ করেনি।

কয়েক দিন আগেই বিপুল জনাদেশ পেয়ে শাসক দল তৃণমূল শ্রীরামপুর পুরসভার ক্ষমতায় ফিরেছে। নতুন পুরবোর্ড গঠন হয়নি এখনও। তার মধ্যেই এই ঘটনা তৃণমূল নেতৃত্বের লাগাম নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিল।

পুরপ্রধান পদে গিরিধারী সাহার নাম ঘোষণা করেছে তৃণমূল। ঘটনার পরে তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, বসন্তোৎসব চলাকালীন কিছু বহিরাগত এসে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের আক্রমণ করে এবং কয়েক জন আহত হন। তিনি ঘটনার নিন্দা করছেন এবং প্রশাসনকে অবিলম্বে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। শহর তৃণমূল সভাপতি শান্তনু গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুব নিন্দনীয় ঘটনা। খোলা মাঠে অনুষ্ঠান হচ্ছিল। কিছু লোক বাইরে থেকে ঢুকে বিশৃঙ্খলা করতে পারে। গোটা বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’

শ্রীরামপুর শহর তৃণমূল এবং শ্রীরামপুর কলেজ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) উদ্যোগে এ দিন বসন্তোৎসবের আয়োজন করা হয় গান্ধী ময়দানে। সদ্য নির্বাচিত তৃণমূল কাউন্সিলরদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য, প্রথম দিকে সুষ্ঠু ভাবেই অনুষ্ঠান চলছিল। সময় যত গড়াতে থাকে, উদ্দামতা বাড়তে থাকে। বিকেলে আচমকাই মারামারি শুরু হয়ে যায়। অনেকের হাতেই লাঠিসোটা ছিল।

এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘৪০-৫০ জন হকি স্টিক, বাঁশ নিয়ে এসে মারধর করে।’’ মেয়েদের গায়ে হাত পড়ে বলেও অভিযোগ। পুলিশের সামনেই বিশৃঙ্খলা হয়। এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘প্রথম বার বচসা হয়। দ্বিতীয় দফায় মারামারি। দোকানে ঢুকে পর্যন্ত মারামারি চলে। দেখে মনে হল, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।’’ অন্য এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘অনেকেই নেশা করেছিল। মারামারির জের দোকানদারদের উপরে কেন? এটা বসন্তোৎসবের নমুনা! আগামী দিনে এমন উৎসব যাতে মাঠে করার অনুমতি না দেওয়া হয়, সেটা দেখা হোক।’’

পুলিশ আধিকারিকদের দাবি, মাঠে পুলিশ ছিল না। বাইরের রাস্তায় গাড়িতে টহল দিচ্ছিল। গোলমালের খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

শহরে সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে যুক্ত লোকজন ঘটনার নিন্দা করেছেন।
এক সাংস্কৃতিক কর্মীর কথায়, ‘‘শ্রীরামপুর কলেজ দু’শো বছর পেরিয়ে গিয়েছে। ছাত্র সংগঠনের কলেজ ইউনিট অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা। এমন ঘটনায় কলেজের নাম জড়িয়ে যাওয়াও দুর্ভাগ্যের।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMCP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy