চলছে ডিজে বাজিয়ে উদ্যাপন। —নিজস্ব চিত্র।
হুগলিতে ইদানীং নানা উৎসব-অনুষ্ঠানে তারস্বরে বক্স বাজানো, বাজি ফাটানো কার্যত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন উদ্যাপন নিয়েও অন্যথা হল না। সোমবার বাঁশবেড়িয়ার কলবাজারে পুলিশের সামনে তারস্বরে বক্স বাজার অভিযোগ উঠল। জেলা জুড়ে বাজি ফাটারও অভিযোগ উঠেছে।
কলবাজার ছিল গেরুয়া পতাকায় মোড়া। রাম, হনুমান-সহ প্রায় সব মন্দিরে সাজো সাজো রব। সকাল থেকেই বিকট শব্দে বেজেছে ‘রাম-সঙ্গীত’। বক্স, মাইকের আওয়াজে কান পাতা দায় হয়েছে এলাকাবাসীর। দোসর ঘনঘন শব্দবাজি। কান ঝালাপালা হলেও প্রতিবাদের সাহস করেননি কেউ। এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম, রামের নামে সুন্দর উৎসব হবে। এ রকম তাণ্ডব চলবে, ভাবিনি। পুলিশ দেখছে। নালিশ কাকে জানাব!’’ স্থানীয় এক শিক্ষক নিজেকে রামভক্ত দাবি করে বলেন, ‘‘কিছু মানুষ উৎসবের নামে আইন ভাঙার রাজত্ব চালালেন। দেখল পুলিশ।’’
হুগলি গ্রামীণ পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘ওখানে ডিজে বা শব্দবাজি ফাটানোর মতো কিছু আমাদের চোখে পড়েনি। তবে, দেখছি।’’
এলাকায় উৎসবের আয়োজন সবচেয়ে বড় ছিল হনুমান মনস্কামনা সিদ্ধ মন্দিরে। দিনভর রাম-পুজো হয়। উদ্যোক্তাদের দাবি, ৫১ হাজার লাড্ডু বিলি করা হয়েছে। মন্দির লাগোয়া মিলের দুর্গাদালানেই ছিল চার জোড়া বড় বক্স। এ ছাড়াও সামনের অন্য একটি হনুমান মন্দির, পাশের কালীমন্দির, ক্লাবের সামনেও ডিজের দাপট চলেছে। প্রচুর চকলেট বোমা ফাটানো হয়েছে বলেও অভিযোগ। হনুমান মনস্কামনা সিদ্ধ মন্দিরের এক সদস্যের যুক্তি, ‘‘এত বছরের প্রাপ্তি রামমন্দির। সকলেই আনন্দে ভাসছেন। একটু জোরে রামের গান শুনলে অপরাধ কোথায়! কারও সমস্যা হয়নি।’’
উত্তরপাড়া, কোতরং, মাখলা, হিন্দমোটরে, ডানকুনির বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বড় পর্দা লাগানো হয়েছিল রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখানোর জন্য। উৎসাহের আতিশয্যে বাজি ফাটল পাল্লা দিয়ে। শ্রীরামপুর, চন্দননগরেও একই পরিস্থিতি। অনেক ক্ষেত্রেই উৎসবের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বিজেপি নেতারা। বাজি নিয়ে বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মন্দির নিয়ে সাধারণ মানুষের আবেগের বহিঃপ্রকাশ। তাও বেশি ফাটেনি।’’ যদিও উত্তরপাড়া শহর তৃণমূল সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ঘোষের দাবি, ‘‘দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রচুর বাজি ফেটেছে। পুলিশ অশান্তির আশঙ্কায় ওদের ঠেকাতে পা বাড়ায়নি।’’
চাঁপদানি, আরামবাগের নানা জায়গায় পুজো, হোম-যজ্ঞ হয়েছে। চাঁপদানিতে বিজেপির উদ্যোগে গঙ্গার ধারে ১১ হাজার প্রদীপ জ্বালানো হয়। বৈদ্যবাটীত শোভাযাত্রা হয়। ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ক্যুইজ় প্রতিযোগিতা, রামায়ণ নিয়ে চিত্র প্রদর্শনী।
বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তথা আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ জানান, বিভিন্ন গ্রামে নিরামিষ ভোজের আয়োজন করা হয়। আরামবাগ শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে বজরঙ্গ মন্দির থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে কালীপুর পর্যন্ত শ’খানেক মাইকের চোঙা বসিয়ে পুজোর মন্ত্র শোনানো হয়।
মাইক নিয়ে শোভাযাত্রাও হয় বিভিন্ন জায়গায়। গোঘাটের আনুড়ে ডিজেও বেজেছে। মিছিলকারীদের একাংশের হস্তক্ষেপে তা কিছুক্ষণের মধ্যেই বন্ধ হয়।
পাশাপাশি জেলার প্রায় সর্বত্রই সংহতি মিছিল করেছে তৃণমূল। সম্প্রীতির বার্তা দিতে অনেক জায়গায় বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এবং ধর্মগুরুদের শামিল করা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy