বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। —নিজস্ব চিত্র।
রাজনৈতিক ক্ষেত্র আলাদা হলেও বিজেপি-র সঙ্গে আদতে এ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের কোনও ফারাক নেই। শাসকদল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগে এ দাবি করলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। তাঁর মতে, গোটা দেশের মতো এ রাজ্যেও গণতন্ত্র বিপন্ন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় গণতন্ত্রকে হত্যা করছে বিজেপি। এবং একই ভাবেএ রাজ্যে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। ফলে দু’দলের কাজের ক্ষেত্র আলাদা হলেও তাদের দৃষ্টিভঙ্গি একই রকমের। সেই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, রাজ্যে স্বয়ং অগণতান্ত্রিক কার্যকলাপে যুক্ত থেকে দেশ জুড়ে বিজেপি-র বিরুদ্ধে বিরোধীদের জোট বাঁধার ডাক দিচ্ছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা। যদিও বিমানের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন হুগলি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজেপি-র বিরুদ্ধে বামেরা আদৌ লড়াই করতে চায় কি না, তা নিয়েও সন্দিহান তাঁরা।
রবিবার রাজ্যের প্রাক্তন উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী সুদর্শন রায়চৌধুরীর স্মরণসভায় হুগলি জেলার শ্রীরামপুরের রবীন্দ্র ভবনে এসেছিলেন বিমান। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শাসকদলের পাশাপাশি তৃণমূল সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। বিমানের কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের একজোট হওয়ার ডাক দিচ্ছেন। অথচ তাঁর দল তৃণমূল রাজ্যে অগণতান্ত্রিক কার্যকলাপে যুক্ত থাকছে— দুটো একসঙ্গে হয় না। গণতান্ত্রিক পদ্ধতি-প্রকরণ মেনে যাঁরা চলতে পারেন, তাঁরাই একমাত্র বিরোধীদের একজোট হওয়ার কথা বলতে পারেন।”
সম্প্রতি বিজেপি-র বিরুদ্ধে ত্রিপুরা, অসমের মতো রাজ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে তৃণমূল। বিমানের মতে, দেশের অন্যান্য প্রান্তের মতো ত্রিপুরাতেও গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে বিজেপি। তবে বিজেপি-র থেকে কোনও অংশে পিছিয়ে নেই তৃণমূলও। তাঁর কথায়, “বিজেপি সব জায়গায় গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। আমাদের রাজ্যে বিজেপি-র মতো গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে তৃণমূলও। ফলে দু’দলের কাজের ক্ষেত্র আলাদা হলেও উভয়ের দৃষ্টিভঙ্গি একই রকমের, তা দেখা যাচ্ছে।”
বিমানের দাবি, এ রাজ্যের মতোই দেশ জুড়ে বিরোধীরা আক্রান্ত। তাঁর কথায়, “আজ দেশের অভ্যন্তরে বিজেপি-র সাম্প্রদায়িক ও ফ্যাসিবাদী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সমস্ত বিরোধী দলকে একজোট হতে হবে।” সে জোটের মুখ কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হবেন? প্রশ্নের সরাসরি উত্তর এড়িয়ে তিনি বলেন, “পথ চলতে চলতেই পথ তৈরি হবে।”
বিমানের আক্রমণের মুখে পড়ে বামেদের পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। হুগলি-শ্রীরামপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, “২০১৬ সালে বাংলায় সিপিএমের যে জনসমর্থন ছিল, তা ২০১৯ থেকেই কমতে থাকে। ’১৬-তে তাদের প্রায় ২ কোটি ভোট ছিল। '১৯-এ তা কমে ১ কোটি ৪৩ লক্ষ ভোট বিজেপি-তে চলে যায়। তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে গ্রামেগঞ্জে পরিকল্পিত ভাবে বিজেপি-কে শক্তিশালী করেছে সিপিএম। এতে ২০১৯ থেকেই বিজেপি-র হাত শক্ত হয়েছে। এবং বাংলা থেকে সিপিএম নিঃশেষিত হয়ে গিয়েছে। এরা বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়বে কী করে? বিজেপি-র বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই করছেন। সেই লড়াইতে এদের নিঃশর্ত ভাবে পাশে থাকা উচিত। কিন্তু এরা শর্ত চাপায়। তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা কথা বলে। এরা আদৌ বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়তে চায় কি না, তা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy