Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Cyclone ampan

আমপানের ৩ বছর পরেও মিলল না ঘর

বৃষ্টি হলে ঘরে জল পড়ে। গরমে রোদ ঢোকে। সবই সহ্য করতে হয়। আমপানের পরে পাঁচ হাজার টাকা সরকারি ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন।

মেলেনি ক্ষতিপূরণ, এই ভাবেই কোনও মতে দিন কাটাচ্ছেন বহু মানুষ।

মেলেনি ক্ষতিপূরণ, এই ভাবেই কোনও মতে দিন কাটাচ্ছেন বহু মানুষ। প্রতীকী চিত্র।

সুদীপ দাস
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৩ ০৮:৪৫
Share: Save:

ইটের দেওয়ালটুকুই যা রয়েছে। তিন বছর আগে আমপান ঝড়ে সেই যে একচিলতে ঘরের চালের প্লাস্টিক উড়ে গেল, এখনও তা জোগাড় হয়নি। আবাস যোজনার বাড়ি তো কোন ছার! ফুটোফাটা কিছু বস্তা দিয়ে ঘরের চাল ছেয়েছেন চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের কোদালিয়া-১ পঞ্চায়েতের বৃদ্ধা মায়ারানি বিশ্বাস।

বৃষ্টি হলে ঘরে জল পড়ে। গরমে রোদ ঢোকে। সবই সহ্য করতে হয়। আমপানের পরে পাঁচ হাজার টাকা সরকারি ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন। কিন্তু ঘরের জিনিসপত্র, টুকিটাকি কেনাকাটা করতেই সব শেষ। জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলেন। ঘরের হাল দেখে গিয়েছিলেন ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরাও। কিন্তু তিন বছর পরেও বৃদ্ধার মাথায় পাকা ছাদ নেই।

স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা তৃণমূলের ডলি ঘোষের বাড়ি মায়ারানির বাড়ির পাশেই। ডলি বলেন, ‘‘সত্যিই মায়ারানির সরকারি বাড়ি পাওয়া উচিত। আমরা আপ্রাণ চেষ্টাও করছি। কিন্তু কেন জানি না এতবার আবেদনের পরও ওঁর নাম আসছে না।’’ ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, "সাধারণত এমনটা হওয়ার নয়। এ ক্ষেত্রে কী কারণে আবাস যোজনায় নাম আসছে না দেখা হবে।’’

চুঁচুড়া স্টেশন রোড ধরে বঙ্কিম কাননের দিকে যেতে পেল্লাই সব বাড়ি-আবাসনের ভিড়ে মায়ারানির একচিলতে ঘর সহজে নজরে পড়ে না। স্বামী বহুদিন আগে মারা গিয়েছেন। ওই ঘরে সকলের নজর পড়ে ২০১৯-এর ২৭ সেপ্টেম্বর। উনুন থেকে আগুন লাগে ঘরে। বাড়ির চালের প্লাস্টিক পুড়ে যায়। এলাকাবাসী এবং পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় চালে নতুন প্লাস্টিক চাপে। কিন্তু আমপান সেটুকুও কেড়ে নেয়।

তিন বছর আগে আজকের দিনেই আমপানে ঘরের প্রায় সর্বস্ব খুইয়েছিলেন মায়ারানি। মেয়ে এবং তিন নাতি-নাতনিকে নিয়ে অথৈ জলে পড়েছিলেন। ঘর কার্যত ভেসে গিয়েছিল। এর চার বছর আগে জামাই মারা যান। গত বছর মেয়ে। এখন তিন নাতি-নাতনিই বৃদ্ধার ভরসা।

শুক্রবার ওই ঘরে গিয়ে দেখা গেল, ইটের মেঝেতে বসে পড়ছে মায়ারানির নাতনি, দেশবন্ধু গার্লস হাই স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুষমা মণ্ডল। তার বড়দা, অভিজিৎ রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করেন। ছোড়দা বিশ্বজিৎ রং মিস্ত্রি। মায়ারানি ঘরে ছিলেন না।

সুষমা বলে, ‘‘আমপানের কথায় এখনও ভয় লাগে। আমরা ঘরেই ছিলাম। ঝড়ে চালের প্লাস্টিক উড়ে যায়। এক কোণে দিদা ও মা আমাদের আঁকড়ে ধরে বসে ছিল। অনেক সরকারি কর্তাএসে আশ্বাস দিয়েছেন। কিছুই হয়নি।’’অভিজিতের আক্ষেপ, "তিন বারের বেশি ঘরের জন্য আবেদন করেছে দিদা। একবারও নাম এল না। আশ্চর্য!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone ampan Chinsurah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy