আরামবাগের চাঁদুর বনাঞ্চল থেকে তোলা হচ্ছে বালি। বুধবার। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ ।
বেআইনি ভাবে বালি তোলার অভিযোগ এ বার আরামবাগ পুরসভার বিরুদ্ধেই।
ভূমি দফতরের অনুমতি ছাড়া আরামবাগের চাঁদুর বনভূমি সংলগ্ন দ্বারকেশ্বর নদের বাঁধ ভেঙে জমা বালি তোলার অভিযোগ উঠল আরামবাগ পুরসভার বিরুদ্ধে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বুধবার সকাল থেকে পুরপ্রশাসক স্বপন নন্দীর নেতৃত্বে অন্তত ৩০০ ট্রাক্টর বালি সরানো হয়েছে। গ্রামবাসীদের ক্ষোভ, ‘‘অনুমতি ছাড়া বালি তুললে সেটা তো চুরিই। সাইকেলে চাপিয়ে কেউ এক বস্তা বালি নিয়ে গেলে পুলিশ তাকে মামলা দিচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে পুলিশ কিছুই করল না!’’
পুলিশ জানিয়েছে, পুরসভার তরফে বালি তোলার জন্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে করা আবেদনপত্র তাদের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে কোনও অনুমোদন ছাড়াই যে এ দিন বালি তোলা হচ্ছে তা নিয়ে কোনও অভিযোগ মেলেনি।
মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক দিব্যসুন্দর ঘোষ বলেন, “পুরসভা থেকে বালির তোলার আবেদন পড়েছে। তা জেলায় পাঠানো হয়েছে। এখনও অনুমোদন হয়ে আসেনি। অনুমোদন ছাড়া পুরসভার বালি তোলার অভিযোগ পেয়েছি। ব্লক ভূমি রাজস্ব আধিকারিককে খতিয়ে দেখে রিপোর্ট পাঠাতে বলেছি। সেই অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক রাজশ্রী মান্না বলেন, “অনুমতি ছাড়াই অন্যায় ভাবে বালি তোলা হয়েছে। বিষয়টা দফতরকে জানানো হয়েছে।”
দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি থেকে বালি সরাতে গেলে দফতর থেকে জমা বালির পরিমাণ যাচাই করে উপযুক্ত রাজস্ব ধার্য করা হয়। আর সরকারি জমি হলে বালির পরিমাণ এবং রাজস্ব নির্ধারণ করে দরপত্র ডাকা হয়। অথচ এ ক্ষেত্রে সে সব প্রক্রিয়ার আগেই স্রেফ আবেদন করেই বালি তুলে নিয়েছে পুরসভা।
অভিযোগ আছে বন দফতরেরও। আরামবাগ রেঞ্জ অফিসার রবীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “বনভূমি থেকে ট্রাক্টর বোঝাই বালি বইতে রাস্তা ব্যবহারের জন্য দফতরের অনুমতি নেওয়ার কথা। তাও নেওয়া হয়নি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে দ্বারকেশ্বর নদের চাঁদুর বনভূমি সংলগ্ন বাঁধটির প্রায় ৬০ ফুট ভেঙে বন্যার জলের সঙ্গে বালি ঢুকে ৩০০ মিটার এলাকায় ২ থেকে ৪ ফুট বালির স্তর জমে। পুরপ্রশাসনক স্বপন নন্দীর সাফাই, ‘‘বন্যায় শহরের বিভিন্ন রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। সেগুলি সংস্কারের জন্য বাজারে বালি মিলছিল না। এই অবস্থায় চাঁদুর বনভূমিতে জমা বালি তোলার জন্য শনিবার দফতরে আবেদন করি। কাজগুলো জরুরি ভিত্তিতে করার প্রয়োজন ছিল। তাই অনুমোদন আসার আগেই বালি তোলা হয়েছে। ধার্য রাজস্ব মিটিয়ে দেব। বন দফতরের রাস্তার ক্ষতি হলেও রাস্তা সংস্কার করে দেওয়া হবে।’’
চুরির অভিযোগের উত্তরে পুরপ্রধানের জবাব, ‘‘এটা চুরি কেন হবে! আমরা তো নদী থেকে বালি তুলিনি! উন্নয়নের জন্যই তাড়াহুড়ো করেছি। আশা করি, এর জন্য জরিমানা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy