আরামবাগের নেতাজি স্কোয়ারে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের সভা। নিজস্ব চিত্র।
মঞ্চ থেকে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিতে বুথ ধরে তৃণমূলের ছোট ছোট ‘চোরদের পাড়াছাড়া করার’ পরামর্শ দিচ্ছিলেন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। আর মঞ্চের কাছে রাস্তার ধারে ঠায় দাঁড়িয়ে সেই বক্তৃতা শুনছেন বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা!
মঙ্গলবার বিকেলে প্রায় নজিরবিহীন এই দৃশ্য দেখা গেল আরামবাগের নেতাজি স্কোয়ারে। আয়োজকেরা মনে করেছিলেন, সভায় হাজার দুয়েক মানুষের জমায়েত হবে। সেই মতো শহরের বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন ওই জায়গায় বামনেত্রীর সভার আয়োজন করা হয়। বিকেল ৪টে নাগাদ সভা শুরুর সময়ে প্রবল গরমের মধ্যেও শহরের মূল রাস্তায় প্রায় ৪ হাজার মানুষ জড়ো হয়ে যান বলে সিপিএমের দাবি। অনেককেই দূরে সরিয়ে দিতে হয় দলের স্বেচ্ছাসেবক এবং পুলিশকে।
কিন্তু শ্রোতার দলে যে তৃণমূলের কিছু নেতাও থাকবেন, ভাবতে পারেননি সিপিএম নেতৃত্ব। দেখা যায়, বিভিন্ন দোকানে বা গলিতে দাঁড়িয়ে মীনাক্ষীর বক্তব্য শুনছেন তৃণমূল নেতারা। তাঁদের মধ্যে দলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সদস্য চিন্ময় ঘোষ বলেন, “কেন ওঁর সভায় এত ভিড় হয়, কেন তাঁকে যুব সমাজের আইকন বলছেন নতুন ছেলেরা, জানার খুব ইচ্ছা ছিল। যদিও আমাদের আগাগোড়া চোরবলে গেলেন, তবে বক্তব্যের বাঁধন বেশ আকর্ষণীয়। এটা অস্বীকার করে লাভ নেই।”
রাস্তার শ্রোতার দলে থাকা আরামবাগের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বুথ স্তরের তৃণমূল নেতা শেখ বাপনও বলেন, “ভাল বলেন দেখলাম। আগে আমাদের সোনালি গুহ যেমন চটকদার বক্তব্য পেশ করতেন, তার চেয়েও ভাল লাগল।” মহকুমা বাসচালক এবং কর্মী সংগঠনের তৃণমূল নেতা সফিকুল ইসলাম ওরফে মেজকা বলেন, “খুব আশা নিয়ে শুনতে চাইছিলাম। আমাদের নেত্রীরসঙ্গে টক্কর দেওয়ার চেষ্টা কেমন করছেন, সেটাই শুনছিলাম।দেখলাম, বক্তব্য যা-ই হোক, মানুষকে ধরে রাখার ক্ষমতা নেত্রীরধারে-পাশে নেই।”
সভার স্লোগান ছিল ‘লুটের পঞ্চায়েত হটাও, জনগণের পঞ্চায়েত গড়ে তোলো’। প্রথম বক্তব্য পেশ করেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ। শাসক দল নির্বাচন করতে চাইছে না বলে তিনি অভিযোগ তোলেন। দেবব্রতের পরের বক্তা ছিলেন মীনাক্ষী। প্রথমেই তাঁর পরামর্শ, ‘‘প্রতিটি বুথে গিয়ে আজ থেকে ছোট অনুব্রত হতে চাওয়া চোরগুলোকে পাড়াছাড়া করুন।’’
২০১৩ ও ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ শোনা গিয়েছে মীনাক্ষীর গলাতেও। এ ছাড়া শাসক দলের তরফে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের টাকা লুট, নিয়োগ দুর্নীতি-সহ নানা প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। বিজেপিকেও একহাত নেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার পক্ষেও সওয়াল করেন বামনেত্রী।
মীনাক্ষীর বক্তব্য শুনতে তৃণমূল নেতারা দাঁড়িয়ে ছিলেন, এ কথা শুনে সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভালই তো। এতে যদি ওঁদের চৈতন্যোদয় হয়, সেটা তো ভালই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy