এই সব গাছ কাটা নিয়েই ক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
নিয়মের তোয়াক্কা না করে সরকারি প্রকল্পের জন্য সিঙ্গুর ব্লকের বাগডাঙা-ছিনামোড় পঞ্চায়েতের হাকিমপুরে দিন কয়েক আগে কিছু গাছ কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে পরিবেশকর্মীরা সরব হয়েছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নসিবপুর থেকে চন্দননগর যাওয়ার রাস্তায় ওই জায়গায় বৈদ্যুতিক করাত দিয়ে প্রাচীন অশ্বত্থ-সহ বেশ কিছু গাছ কাটা হয়। ওই কাজের শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা জানতে পারেন, গ্যাসের পাইপ বসবে বলে গাছ কাটা হচ্ছে। পরিবেশকর্মীদের আপত্তিতে গাছ কাটা সাময়িক বন্ধ হয়। সরকারি আধিকারিকেরা যান ঘটনাস্থলে। বন দফতরের লোকজন, পুলিশও যায়।
হুগলি বন দফতরের বিট অফিসার সোমেশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের কাজ। পূর্ত দফতরের রাস্তা। ওরা অনুমতি নিয়েছে। বন দফতরে কাজগপত্র জমা দিয়েছে প্রকল্পের কাজে যুক্ত কেন্দ্রীয় সংস্থা।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, মোট ২১১টি গাছ কাটার কথা বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার একাধিক পরিবেশ কর্মী পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখেন। হাকিমপুর থেকে নান্দা হয়ে ছুটিপুর খেলার মাঠ এলাকায় তাঁরা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। পরিবেশকর্মীদের আর্জি, গাছ বাঁচিয়ে প্রকল্প করার কথা ভাবা হোক। প্রয়োজনে প্রযুক্তির ব্যবহারে গাছ পাশে সরানো হোক। ওই দলে থাকা পরিবেশকর্মী শুভ্রকান্তি সামন্ত বলেন, ‘‘সরকারি বড় প্রকল্পে গাছ বাঁচিয়ে বা স্থানান্তরের পথে না গিয়ে নির্বিচারে কাটা হলে তো পরিবেশের দফারফা হবে। আমরা বিষয়টি লিখিত ভাবে জানিয়েছি বন-সহ সরকারি সব দফতরে।’’
পরিবেশকর্মীদের বক্তব্য, বন দফতর মুখে বলছে, দু’শোর কিছু বেশি গাছ কাটার অনুমতি রয়েছে। অথচ, গাছের গায়ে যে নম্বর দেওয়া আছে, তা সাড়ে চারশোরও বেশি। সে ক্ষেত্রে বাড়তি দু’শোর বেশি গাছে নম্বর দিতে হল কেন? সেগুলিও কেটে ফেলা হবে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
ঘটনাস্থল ঘুরে এসে পরিবেশকর্মী গৌতম সরকার বলেন, ‘‘৫০-৬০টি গাছ কাটা হয়েছে। তাতে দু’শো বছরের পুরনো গাছও রয়েছে। অনেক গাছের গায়ে চিহ্ন দেওয়া রয়েছে।’’ বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার মহকুমাশাসককে (চন্দননগর) চিঠি দেওয়া হয়।
হুগলি জেলা সভাধিপতি রঞ্জন ধাড়া বলেন, ‘‘প্রকল্পটি নিয়ে বিশদে জানি না। যত কম সংখ্যক গাছ কাটা যায়, পরিবেশের পক্ষে ততই মঙ্গল। প্রকল্প আধিকারিকদের সঙ্গে এ নিয়ে আমি কথা বলব।’’
পরিবেশকর্মীদের খেদ, দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে সম্প্রসারণ-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে বহু গাছ কাটা হয়েছে। পরিবর্তে যত গাছ লাগানো হয়েছে, তা নিতান্তই অল্প। কাটার বিনিময়ে যত গাছ লাগানোর কথা, ওই সংখ্যা তার ধারেকাছেও যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy