Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Launch Service

মেট্রোর জেরে যাত্রী কমেছে জলপথ পরিবহণে, মাথায় হাত সমবায়ের

বর্তমানে গঙ্গায় হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায়ের নিজস্ব লঞ্চ চলছে পাঁচটি, তিনটি লঞ্চ ভূতল পরিবহণ সংস্থার। ইতিমধ্যে আটটি লঞ্চ পুরোপুরি বসে গিয়েছে।

—প্রতীকী চিত্র।

দেবাশিস দাশ
হাওড়া শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৪৪
Share: Save:

একেই দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চলছে তীব্র অর্থসঙ্কট। সেই সঙ্গে হাওড়া ময়দান থেকে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চালু হওয়ার পরে যাত্রীর অভাবে প্রায় ২৫ শতাংশ আয় কমেছে
হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায়ের। ফলে মাথায় হাত পড়েছে সম্প্রতি ওই সমবায়ের দায়িত্ব নেওয়া রাজ্য সরকার মনোনীত পরিচালকমণ্ডলীর। তাই রাজ্য সরকারের কাছে এই জলপথ পরিবহণ সংস্থার ৩০০ জন কর্মী ও তাঁদের পরিবারকে বাঁচাতে আরও সার্ভিস রুট বাড়ানোর পাশাপাশি, লঞ্চ বাড়ানোর আবেদন করে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।

বর্তমানে গঙ্গায় হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায়ের নিজস্ব লঞ্চ চলছে পাঁচটি, তিনটি লঞ্চ ভূতল পরিবহণ সংস্থার। ইতিমধ্যে আটটি লঞ্চ পুরোপুরি বসে গিয়েছে। সংস্থার ঋণ প্রায় ৫ কোটি টাকা। এই পরিস্থিতিতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাজ্য সমবায় দফতরের পক্ষ থেকে ১২ জনের মনোনীত পরিচালকমণ্ডলী গঠিত হয়। যা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক রয়েছে। ওই পরিচালকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান হন হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য এবং প্রাক্তন তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি রাইচরণ মান্না ওরফে বাপি মান্না। উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বাপি এই সমবায়ের দায়িত্বে আসার পরেই হাওড়া ময়দান-ধর্মতলা রুটের মেট্রো চালু হয়। এর পরেই শুরু হয় যাত্রী-সঙ্কট। বাপি বলেন, ‘‘মেট্রো চালু হওয়ার পরে দেখা যাচ্ছে, আমাদের দৈনিক যাত্রী-সংখ্যা ক্রমশ কমছে। আয়ও প্রায় ২৫ শতাংশ কমেছে। লোকে আগে লঞ্চ পেরিয়ে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় যেতেন। এখন ট্রেন থেকে নেমেই হাওড়া স্টেশন থেকে মেট্রোয় উঠে পড়ছেন।’’

হুগলি নদী জলপথ সমবায় সূত্রের খবর, ডিজ়েলের দাম যখন লিটারপ্রতি ৪৮ টাকা ছিল, তখন জলপথে টিকিটের মূল্য ছিল ৬ টাকা। বর্তমানে ডিজ়েলের দাম লিটারপ্রতি ৯০ টাকা ছাড়ালেও টিকিটের মূল্য বাড়েনি। একই সঙ্গে কোভিডের জন্য তিন বছর ধরে চলা যাত্রী-সঙ্কটে ক্রমাগত পঙ্গু হয়ে গিয়েছে জলপথ পরিবহণ সমবায়। তখনও টিকিটের মূল্য বাড়িয়ে সমবায়টিকে বাঁচানোর চেষ্টা হয়নি বলে অভিযোগ।

এ জন্য বর্তমান পরিচালকমণ্ডলীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ভেন্টিলেশনে থাকা রোগীকে বাঁচানোর দায়িত্ব তাঁদের দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শুরুতেই মেট্রোর জন্য ২৫ শতাংশ যাত্রী কমে যাওয়া তাঁদের চিন্তা আরও বাড়িয়েছে। তবে মৃতপ্রায় এই সমবায় সংস্থাকে বাঁচানো চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছেন নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের কাছে অবিলম্বে আরও লঞ্চ চেয়ে চিঠি দিচ্ছি। ইতিমধ্যে বাউড়িয়ার ভেঙে যাওয়া জেটি সারাতে ২৯ লক্ষ টাকা রাজ্যের থেকে জোগাড় করেছি। সার্ভিস রুট আরও বাড়িয়ে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে লঞ্চ ভাড়া দিয়ে এবং আরও কী কী ভাবে আয় বাড়ানো যায়, তা ভাবছি।’’ তবে হাওড়া থেকে মেট্রো চালু হওয়ার পরে লঞ্চে যাত্রী-সংখ্যা কমতে থাকলে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করা আদৌ কী ভাবে সম্ভব, সেই প্রশ্ন থাকছেই।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy