ছেলে খুনে ধৃত মা। —নিজস্ব চিত্র।
কোন্নগরে আট বছরের শিশু খুনে গ্রেফতার হয়েছেন মা এবং মায়ের এক বান্ধবী। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে ‘সম্পর্কের টানাপড়েনের’ কথা। যদিও বুধবার আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে ধৃত শান্তা শর্মার দাবি, ছেলেকে তিনি খুন করেননি। পুলিশের ভ্যানে বসে মহিলার মন্তব্য, ‘‘নিজের বাচ্চাকে কেউ খুন করতে পারে?’’
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় হুগলির কোন্নগরের আদর্শনগরে বাড়িতে খুন হয় আট বছরের শ্রেয়াংশু শর্মা। ঘরে তখন টিভি দেখছিল ছেলেটি। বাড়ি থেকে ফোন পেয়ে কর্মস্থল থেকে দ্রুত বাড়িতে ফেরেন শিশুর বাবা পঙ্কজ শর্মা। শিশুর মা-ও কর্মসূত্রে তখন বাড়ির বাইরে ছিলেন বলে দাবি করেন। কিন্তু ছেলের খুনে তাঁকেই অভিযুক্ত করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, একমাত্র ছেলের খুনের পর দিন সকালে পোষ্যকে আদর করে বিস্কুট খাওয়াতে গিয়েছিলেন শান্তা। যদিও সেই বিস্কুট ছুঁয়েও দেখেনি কুকুরটি।
চার দিন তদন্তের পর কোন্নগরে শিশু খুনের ঘটনায় মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয় শান্তা এবং তাঁর এক বান্ধবী ইফফাত পারভিনকে। এই গ্রেফতারির পর কার্যত হতবাক এলাকাবাসী। প্রতিবেশীদের বক্তব্য, ‘‘সম্পর্কের টানাপড়েন কিংবা স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কে শীতলতা যাই থাক না কেন, সন্তানকে কোনও মা এ ভাবে খুন করতে পারেন?’’ বস্তুত, শিশুটিকে ইটের ঘা, ভারী মূর্তি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। খুনের সময় রড এবং সব্জি কাটার ছুরিও ব্যবহার করা হয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এই ‘নির্মমতা’ অবাক করে দিয়েছে এলাকাবাসীকে। তাঁরা দোষীদের কড়া শাস্তি চেয়ে শান্তি মিছিল করেন। এক প্রতিবেশীর কথায়, ‘‘বাচ্চাটির খুনিরা যাতে ধরা পড়ে সেটাই চেয়েছিলাম। কিন্তু খুনি যে স্বয়ং মা, সেটা কল্পনাও করতে পারিনি।’’ যদিও পুলিশ তদন্ত শুরু করার পর পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ দেখেই বুঝেছিল পরিচিত কেউ ওই খুনে যুক্ত। ফিঙ্গার প্রিন্ট, রক্তের নমুনা এবং ফোনের কল রেকর্ড খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। অভিযুক্তদের ফোনের টাওয়ার লোকেশন এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে যায় পুলিশ।
বুধবার শিশুর মা এবং বান্ধবীকে শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হয়। শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর প্রিজ়ন ভ্যানে আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে শান্তার দাবি, ‘‘আমি খুন করিনি। নিজের ছেলেকে কেউ খুন করতে পারে না।’’ তাহলে কি বান্ধবী খুন করেছেন? শান্তার জবাব,‘‘জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy