আশঙ্কা: এই স্কুল নিয়েই চিন্তিত গ্রামবাসী। নিজস্ব চিত্র।
আগে স্কুল থেকে গঙ্গার দূরত্ব ছিল প্রায় ৫০০ মিটার। এখন তফাৎ ১৫ ফুটের একটা রাস্তার। বৃষ্টি বাড়লে গ্রামবাসী আর শিক্ষক-শিক্ষিকারা ভয় পান, এই বুঝি রাস্তা ধসে ভেঙে পড়বে স্কুলবাড়ি। এমনই হাল শ্যামপুর-১ ব্লকের বেলাড়ি পঞ্চায়েতের বাসুদেবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
১৯৪৬ সালে পথচলা শুরু এই স্কুলের। গ্রামবাসীরা জানান, সেই সময় স্কুল থেকে অনেক দূরে ছিল গঙ্গা। তবে ভাঙনে বরাবরই এগিয়েছে নদী। মাস ছয়েক আগে গঙ্গার ভাঙনের চোটে ভেঙে গিয়েছিল প্রায় দেড়শো মিটার নদীর বাঁধ। সেই সময়ই কার্যত বাসুদেবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের দুয়ারে এসে দাঁড়িয়েছিল নদী। স্কুলভবন ভাঙার আশঙ্কায় তড়িঘড়ি পড়ুয়াদের সরিয়ে দিয়েছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
তারপর পাঠ চলত গ্রামের একটি হরিবাসরে। সেখানে অসুবিধা হওয়ায় এখন ক্লাস চলে গ্রামের একটি ক্লাবে। সেখানে দু’টি ঘরে চলে পাঁচটি শ্রেণির পড়াশোনা। স্কুলের এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘গাদাগাদি করে বসতে হয় পড়ুয়াদের। পড়াশোনাও ঠিক করে করানো যায় না।’’ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রিনা কর্মকার বলেন, ‘‘স্কুলের পড়াশোনা অন্যত্র কি ঠিক করে হয়? ভাঙনের চোটে স্কুলভবন কবে ভেঙে পড়বে, সেই চিন্তাতেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসনের তো এ বিষয়ে কোনও নজরই নেই।’’
তবে শ্যামপুর-১-এর বিডিও তন্ময় কারজি বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের সুরক্ষার কথা ভেবে স্কুল অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যতদিন না বাঁধ মেরামত হচ্ছে ততদিন স্কুলে তাদের ফিরিয়ে আনা বিপজ্জনক।’’
বাঁধ মেরামতি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন গ্রামের বাসিন্দারা। এক অভিভাবকের ক্ষোভ, ‘‘বাঁধটা পাকাপাকি সারানো হলে তো ছেলেমেয়েগুলো ফের স্কুলে ফিরতে পারে। সেই কাজটা করা হচ্ছে না কেন?’’ অন্য আর এক মহিলার কথায়, , ‘‘শুধু তো স্কুল নয়। এ ভাবে গঙ্গা এগোলে তো বাড়িও ভাঙতে শুরু করবে! আমরা তখন কোথায় যাব?’’
হুগলির বলাগড়ের জিরাট পঞ্চায়েতের চর খয়রামারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেও গিলে নিচ্ছিল গঙ্গা। বিষয়টি জানতে পেরে হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, রেজিস্ট্রার জেনারেলকে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করার নির্দেশ দেন। সেখানে সম্প্রতিপরিদর্শনে গিয়েছিলেন সরকারি আধিকারিকরা। পরিস্থিতির উন্নতির আশা করছেন ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ।
অবশ্য বাসুদেবপুরকে তেমন আশার কথা অবশ্য শোনাননি সেচ দফতরের আধিকারিক চন্দ্রশেখর রপ্তান। তিনি বলেন, ‘‘যতদিন না পর্যন্ত নদী ড্রেজ়িং করা হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত স্থায়ী ভাবে বাঁধ মেরামত করা অসম্ভব। আপাতত বাঁধকে বাঁচানোর জন্য যা যা প্রয়োজনীয়, সেটা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy