Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
chanditala

জীবন ‘সংশোধিত’, দোকান করে প্রমাণ বাসুদেবের

১৯৮৫ সালের ১০ মে পারিবারিক বিবাদের জেরে খুনের অভিযোগ উঠেছিল বাসুদেবের বিরুদ্ধে। ঘটনার এক মাস পর শ্রীরামপুর আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন।

বাসুদেব বাবুর সঙ্গে হাত মিলিয়ে অভিনন্দন জানাচ্ছেন শ্রীরামপুর মহকুমাশাসক সম্রাট চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র

বাসুদেব বাবুর সঙ্গে হাত মিলিয়ে অভিনন্দন জানাচ্ছেন শ্রীরামপুর মহকুমাশাসক সম্রাট চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র

দীপঙ্কর দে
চণ্ডীতলা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩০
Share: Save:

তাঁর জীবনের ২২টা বছর বড় অন্ধকারের। ভবিষ্যতে আলোর সন্ধানে সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে স্বনির্ভরতার জীবন বেছে নিলেন চণ্ডীতলার গঙ্গাধরপুর বাজারের বাসিন্দা বছর ষাটের বাসুদেব শর্মা। তাঁকে সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে এনে অর্থনৈতিক ভাবে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে পাশে ছিল পশ্চিমবঙ্গ খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পরিষদ। একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক থেকে এক লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে গঙ্গাধরপুর বাজারে একটি লন্ড্রির দোকান খুলেছেন বাসুদেব। শুক্রবার সেই দোকান উদ্বোধনের মাধ্যমে শুরু হল বাসুদেবের নতুন যাত্রা।

১৯৮৫ সালের ১০ মে পারিবারিক বিবাদের জেরে খুনের অভিযোগ উঠেছিল বাসুদেবের বিরুদ্ধে। ঘটনার এক মাস পর শ্রীরামপুর আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। তিন মাস পর জামিন হয়। ১৩ বছর পর ১৯৯৮ সালে শ্রীরামপুর আদালত তাঁকে ২২ বছরের যাবজ্জীবন সাজা দেয়। আলিপুর সংশোধনাগারে ১২ বছর কাটান বাসুদেব। তারপর ১০ বছর ছিলেন লালগোলা মুক্ত সংশোধনাগারে। ২০২০ সালে মুক্ত হন তিনি।

মুক্ত সংশোধনাগারের নিয়ম অনুযায়ী, সাড়ে তিন মাস সেখানে থাকার পরই বাসুদেব একটা চায়ের দোকান করেছিলেন। সংশোধনাগারে তাঁর স্ত্রী সঙ্গে থাকতেন। ছেলে-মেয়ে মাঝেমাঝে দেখা করতে আসতেন। তবে ২০২১ সালের মার্চে বাসুদেবের স্ত্রী মারা যান। বাসুদেব বলেন, ‘‘স্ত্রী চলে যাওয়ার পর একা ভাল লাগছিল না। মনে হল, যতদিন বাঁচব সকলের সঙ্গে মিলে বাঁচি। প্রশাসনের কর্তারাও সাহায্য করলেন। তাই এই দোকান করলাম।’’

হুগলি জেলা ‘প্রবেশন অ্যান্ড আফটার কেয়ার’-এর আধিকারিক মনোজকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘বাসুদেবকে সমাজের মূল স্তরে ফিরিয়ে দেওয়া আমাদের লক্ষ্য ছিল। সংশোধনাগারে থাকাকালীন ওঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ ওঠেনি। প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের সকলে যাতে বাসুদেবের পাশে দাঁড়ান, সেই আবেদন রইল।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সন্দীপকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘বাসুদেবের জীবন যে সংশোধিত হয়েছে, শুক্রবারের ঘটনাই তার প্রমাণ। আমাদের সকলেরই উচিত, তাঁর পাশে দাঁড়ানো।’’

অন্য বিষয়গুলি:

chanditala Murderer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy