ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জে এ ভাবেই বিকোচ্ছে চকলেট। নিজস্ব চিত্র।
সূচহীন ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জে বিকোচ্ছে চকলেট!
হুগলির জেলাসদর চুঁচুড়ায় রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকা-সহ নানা জায়গায় দোকানে দোকানে আচমকা এই চকলেট ছোটদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, আদৌ কি ওই চকলেট খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত? সিরিঞ্জগুলি আসছে কোথা থেকে? সেগুলি কি আসল? আসল হলে কি ব্যবহৃত? বিপদের আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ।
ওই চকলেটের পোশাকি নাম ‘ডক্টর্স চকলেট’। তবে, নামের সঙ্গে চিকিৎসা বা চিকিৎসকের কোনও যোগ নেই। একটির দাম ৫ টাকা। মুখের মধ্যে সিরিঞ্জের অগ্রভাগ পুরে পিস্টনে চাপ দিলেই বেরিয়ে আসছে চকলেট। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় নড়ে বসেছে পুলিশ-প্রশাসন। সোমবার সকালে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট এবং জেলা খাদ্যসুরক্ষা বিভাগের আধিকারিকরা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন দোকানে হানা দেন। ভয় পেয়ে অনেক দোকানে চকোলেটের বাক্স সরিয়ে ফেলা হয়।
হুগলির খাদ্যসুরক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন দোকানে হানা দিয়েছিলাম। কিন্তু জানাজানি হতেই দোকানদারেরা চকলেটগুলি সরিয়ে ফেলেন। তবে, নজরদারি চলবে।’’ তদন্তকারীরা মনে করছেন, সিরিঞ্জের গায়ে ওষুধের মাপ নির্ধারক দাগগুলি তুলে দেওয়া হয়েছে। চুঁচুড়ায় দোকানে দোকানে এই চকলেট সরবরাহ করতে আসা রামকৃষ্ণ বিশ্বাস নামে এক সেলসম্যান বলেন, ‘‘নৈহাটি থেকে পাইকারি দরে কিনে হুগলির বিভিন্ন মুদিখানা, স্টেশনারি, পানের দোকানে এই চকলেট সরবরাহ করি। ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে, বেচব না।’’
ছোটরা এতে বেশ মজেছে। চকলেট খাওয়ার পরে সিরিঞ্জটি খেলনা হিসাবে ব্যাবহার করছে তারা। তবে, কোথা থেকে ওই সিরিঞ্জ আসছে, সেই উত্তর মেলেনি।
ওই চকলেট নিয়ে অনেকের মধ্যে কৌতূহলও তৈরি হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ একবারই ব্যবহারযোগ্য। অর্থাৎ, এক বার ব্যবহারের পরে নষ্ট করে দিতে হয়। ব্যবহারের পরে ঘুরপথে সিরিঞ্জগুলি এ ভাবে চলে আসছে কি না, সেই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ। চুঁচুড়ার বাসিন্দা শিপ্রা বসু বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে আমার ছেলে দোকানে গিয়ে ওই চকলেট দেখেই কেনার জন্য বায়না ধরে। চকলেট খাওয়ার পরে সিরিঞ্জ নিয়ে খেলবে বলেই ওটা ওর মনে ধরেছিল। সিরিঞ্জে ভরে চকলেট কেন বিক্রি হবে?’’
চুঁচুড়ার শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সত্যনারায়ণ মিত্রের বক্তব্য, অবিলম্বে সরকারের উচিত বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যবহারের পরে দুষ্টচক্রের হাত ধরে সিরিঞ্জ বাজারে আসছে কি না, কে জানে! তার উপরে, শিশুরা সিরিঞ্জ মুখে নিয়ে পিস্টনে জোরে চাপ দিলে ভিতরের আঠালো চকলেট গলার সংবেদনশীল অংশে আটকে বিপত্তি ঘটতে পারে। প্রাণহানি পর্যন্ত ঘটতে পারে। শিশুদের জীবনের কথা ভেবে খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের বিষয়টি দেখা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy