—প্রতীকী চিত্র।
রাতের অন্ধকারে এলাকার একটি পুকুর বুজিয়ে ফেলতে সেখানে আবর্জনা ফেলছিল এক দল দুষ্কৃতী। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন প্রৌঢ় গৃহকর্তা। অভিযোগ, যার পরিণতিতে ওই প্রৌঢ়ের মুখে একটি থান ইট দিয়ে সপাটে আঘাত করে দুষ্কৃতীরা। এর পরে তাদের শাগরেদদের ডেকে এনে ওই প্রৌঢ়ের বাড়িতে ঢুকে মারধর ও ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। অভিযোগ, প্রৌঢ়ের স্ত্রীকে যৌন হেনস্থা করা হয়। ঘটনা এখানেই শেষ হয়নি। খবর পেয়ে পুলিশ এলে তাদের সামনেই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় অভিযুক্তেরা। শেষে ভোরে বাড়ির পিছন দিকের একটি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় তারা।
শনিবার গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটেছে রাজ্যের প্রধান সচিবালয় নবান্ন থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে, শিবপুরের সীতানাথ ব্যানার্জি লেনে। হাওড়া শহরে জমি-মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য ঠিক কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে, এই ঘটনায় তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তদন্তে নেমে পুলিশ তিন জমি-মাফিয়ার নাম জানতে পেরেছে, যারা এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। পুলিশ সূত্রের খবর, এর মধ্যে এক জনের বিরুদ্ধে একাধিক পুকুর ভরাট করে বহুতল তৈরির অভিযোগ রয়েছে।
সোমবার বাড়িতে শুয়ে আক্রান্ত ওই প্রৌঢ় জানান, এর আগেও তিনি এবং এলাকার লোকজন একাধিক বার ওই পুকুরটি ভরাট করার চেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। শনিবার রাতে ফের কয়েক জন যুবক পুকুরটি ভরাট করার উদ্দেশ্যে সেখানে জঞ্জাল ফেলছিল। ঘটনাটি দেখে বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রতিবাদ করেন প্রৌঢ়। অভিযোগ, তখন এক দুষ্কৃতী একটি থান ইট দিয়ে তাঁর ডান চিবুকে সজোরে আঘাত করে। আঘাতের জেরে প্রৌঢ় মাটিতে পড়ে যান। তাঁর চিৎকারে বাড়ির লোকজন বেরিয়ে এলে দুষ্কৃতীরা তখনকার মতো চলে যায়। কিন্তু, কিছু ক্ষণের মধ্যেই তারা ১৫-২০ জন লোক এনে প্রৌঢ়ের বাড়িতে চড়াও হয়। ভাঙচুর করা হয় জানলার কাচ, জলের পাইপ। ইট ছুড়ে অ্যাসবেস্টসের চালও ভাঙার চেষ্টা করে অভিযুক্তেরা। রেয়াত করা হয়নি প্রৌঢ়ের ছেলেকেও। তিনি বাধা দিতে এলে তাঁকে বেধড়ক পেটায় দুষ্কৃতীরা। আরও অভিযোগ, প্রৌঢ়ের স্ত্রীকেও অভিযুক্তেরা যৌন হেনস্থা করে।
এ দিকে, চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা বেরিয়ে এলে তখনকার মতো চলে যায় দুষ্কৃতী দলটি। শিবপুর থানা থেকে পুলিশ এলে ফের তারা ঘটনাস্থলে ফিরে আসে। প্রৌঢ় বলেন, ‘‘পুলিশ যখন আমাদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনছিল, সেই সময়ে ওই দুষ্কৃতীরা পুলিশের সামনেই হুমকি দেয়, আমাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেবে। ভোরে সত্যিই তারা বাড়ির পিছনে একটি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। আমরা সকলে মিলে সেই আগুন নেভাই।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে হামলাকারীরাই প্রথমে থানায় গিয়ে ওই পরিবারটির বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করে। পরদিন, রবিবার প্রৌঢ় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু দীর্ঘ টালবাহানার পরে পুলিশ অভিযোগ নথিবদ্ধ করে বলে দাবি তাঁর।
প্রৌঢ় বলেন, ‘‘স্থানীয় তিন প্রোমোটারের নেতৃত্বে এলাকার দুষ্কৃতীরা বহু দিন ধরে পুকুরটি বোজানোর চেষ্টা চালিয়ে আসছে। আমি প্রতিবাদ করায় ওরা হামলা চালায়।’’ হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বললেন, ‘‘দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে। তবে এটা ঠিক যে, পুকুর বোজানোর প্রতিবাদ করাতেই এই আক্রমণ। নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছি। অভিযুক্তেরা শীঘ্রই ধরা পড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy