সাক্ষী সাউ
আবর্জনা ফেলার ডাম্পারের নীচে পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক স্কুলছাত্রীর। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার বেলগাছিয়া কিউ রোডের মোড়ে। মৃত ছাত্রীর নাম সাক্ষী সাউ (১২)। সে স্থানীয় একটি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ ওই বালিকা যখন শিক্ষকের কাছ থেকে পড়ে বাড়ি ফিরছিল, সেই সময়ে ডাম্পারটি পিছোতে গিয়ে তাকে পিষে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা সাক্ষীকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার পরে উত্তেজিত বাসিন্দারা ডাম্পারটি ভাঙচুর করেন। কিছু ক্ষণ পথ অবরোধও হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কিউ রোডের মোড়ে একটি ভ্যাট থেকে আবর্জনা তোলার জন্য ডাম্পারটি যখন পিছোচ্ছিল, তখন ওই বালিকা কিউ রোড ধরে বাড়ি ফিরছিল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পিছনে কেউ আছে কি না, ডাম্পারচালক তা না দেখেই গাড়ি পিছোতে গিয়ে মেয়েটিকে সজোরে ধাক্কা মেরে পিষে দেন। পথচারী ও আশপাশের দোকানদারেরা ঘটনাটি দেখতে পেয়ে চিৎকার করায় ডাম্পারচালকের হুঁশ ফেরে। তিনি ডাম্পার ফেলে চম্পট দেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভ্যাট উপচে আবর্জনা ওই রাস্তায় ছড়িয়ে থাকায় যাতায়াতের পথ সরু হয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই ঘটেছে এ দিনের দুর্ঘটনা। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, ডাম্পারটি খালি ছিল। সেটি ময়লা তুলতে আসছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চালক পালিয়ে গেলেও ডাম্পারটি আটক করেছে লিলুয়া থানা।
সাক্ষীর কাকা উমেশ সাউ এ দিন বলেন, ‘‘ভাইঝি গাড়িটির পিছন দিয়ে যখন আসছিল, তখন ডাম্পারের চালক লুকিং গ্লাসে না দেখেই গাড়ি ব্যাক করছিলেন। যার জন্য এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল। আমরা ডাম্পারচালকের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’ উমেশ জানান, সাক্ষীর বাবা সন্তোষ সাউ প্লাস্টিকের বস্তা বিক্রি করে সংসার চালান। হতদরিদ্র পরিবারে সাক্ষীর দুই বোন ও এক ভাই রয়েছে। আকস্মিক দুর্ঘটনায় মেয়ের মৃত্যু মেনে নিতে না পেরে এ দিন বার বার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন সাক্ষীর মা পূজারানি সাউ। কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না সন্তোষও।
আবর্জনা ফেলার ডাম্পারের ধাক্কায় বালিকার মৃত্যুর প্রসঙ্গে হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। খোঁজ নিয়ে প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছি, ডাম্পারটি একটি বেসরকারি সংস্থার। তারা পুরসভার বিভিন্ন ভ্যাট থেকে ময়লা তুলে নিয়ে ফেলার কাজ করে। এ দিন ওই ডাম্পারটি পুরসভার আবর্জনা ফেলার কাজ করতে গিয়েই মেয়েটিকে ধাক্কা মেরেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তা করতে গিয়ে এমন দুর্ঘটনা ঘটে থাকলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে পুর প্রশাসন।’’ মৃত বালিকার পরিবারকে সাহায্যেরও আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্য প্রশাসক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy