রাজ্যে করোনা সংক্রমণের সাম্প্রতিক স্ফীতি এবং ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগের আবহে কৃষ্ণপুরের এই বিখ্যাত মাছের মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন।
ইলিশ, ভেটকি, কাতলা, বোয়াল। পারসে বাটা, আড়, কাঁকড়া, চিংড়ি। বিবিধ মাছ নিয়ে বিক্রেতা আসেন সেখানে। দরদাম করে মাছ কেনেন ক্রেতারা। এ কোনও মাছের বাজার নয়। মাছের মেলা। বিগত ৫১৫ বছর ধরে এই ভাবেই নদীর পাড় ঘেষা ব্যান্ডেলের দেবানন্দপুরের কৃষ্ণপুরে এই মেলার আয়োজন করে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাজ্যে করোনা সংক্রমণের সাম্প্রতিক স্ফীতি এবং ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগের আবহে কৃষ্ণপুরের এই বিখ্যাত মাছের মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন।
কথিত আছে, বহু বছর আগে এলাকার জমিদার গোস্বামী পরিবারের ছেলে রঘুনাথ দাস গোস্বামী ২৪ বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে সন্ন্যাস নিয়েছিলেন। তার পর তিনি যখন প্রথম বাড়ি ফিরেছিলেন, তাঁর জন্য বিশেষ রান্নার ব্যবস্থা করা হয়। মাছের নানা পদ তৈরির জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ গোস্বামী বাড়ি সংলগ্ন মাঠে মাছমেলার আয়োজন করেছিলেন। ওই দিনটি ছিল পয়লা মাঘ। তার পর থেকে প্রতি বছর মাঘ মাসের প্রথম দিনই এক দিনের মাছ মেলা বসে কৃষ্ণপুরে। সকাল থেকে শুরু করে মেলা চলে রাত পর্যন্ত। শুধু মাছ নয়, সংসারের নানা জিনিসও বিক্রি হয় ওই মেলায়। শুধু মাছ কিনে যাওয়া নয়, মাছ কিনে মাঠের পাশেই বনভোজনে বসে পড়েন অনেকে।
প্রতি বছরই বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ কৃষ্ণপুরের মাছের মেলায় আসেন। গত বছর অতিমারি আবহেও কোভিডবিধি মেনে এই মেলা হয়েছিল। কিন্তু এ বছর মূলত ওমিক্রন সংক্রমণের বিষয়টি নজরে রেখেই এই মেলা বন্ধ রাখা হল।
এ বছর মেলা যে বন্ধ রাখা হয়েছিল, তা অনেকেই জানতেন না। শনিবার সকাল সকালই মাছভর্তি ঝুড়ি নিয়ে মেলাপ্রাঙ্গনে চলে এসেছিলেন বিষ্ণু মণ্ডল। তিনি বলছেন, ‘‘আমি তো জানতাম না। এ বছর মেলা হবে না। কয়েক বছর ধরে এই মেলায় মাছ বিক্রির জন্য আসছি। বিভিন্ন আকারের মাছ নিয়ে আসি। তবে এখানে লাভ-ক্ষতির হিসেব করে আসি না। সারা দিন মাছ বিক্রি করে রাতে ফিরে যাই।’’
শুধু বিক্রেতারাই নন, চুঁচুড়া কাপাসডাঙা থেকে মেলায় মাছ কিনতে হাজির হন কমল রায়। তাঁর কথায়, ‘‘এ বছর মেলা হচ্ছে দেখা খুব খারাপ লাগছে। হরেক রকমের মাছ পাওয়া যায় এখানে। গত বছরও এসেছিলাম পরিবার নিয়ে। শুধু মাছ কেনাই নয়, এখানেই আমরা চ়ড়ুইভাতি করেছিলাম আগের বছর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy