Advertisement
E-Paper

জল নামছে, খানাকুলে ফের তিন জনের মৃত্যু

দু’দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন খানাকুল ১ ব্লকের রামনগর গ্রামের রাজু বটব্যাল(৪২) নামে এক ব্যক্তি। শনিবার তাঁর দেহ মেলে বন্যার জলে কোনও ভাবে পরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান।

বন্যা দুর্গত এলাকায়  মানুষেরা এাণ না পাওয়ার জন্য ক্ষোভ- বিক্ষোভ। রবিবার খানাকুল -১ ব্লক অফিসের সামনে ।

বন্যা দুর্গত এলাকায় মানুষেরা এাণ না পাওয়ার জন্য ক্ষোভ- বিক্ষোভ। রবিবার খানাকুল -১ ব্লক অফিসের সামনে । ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০১
Share
Save

আগেই জমা জল নেমেছে আরামবাগ ও পুরশুড়া থেকে। অবশেষে খানাকুলের দু’টি ব্লক থেকেও ধীর গতিতে জল নামতে শুরু করেছে। রবিবার খানাকুল ১ ব্লকের ১৩টি পঞ্চায়েতের জল ফুট চারেক নেমে গেলেও খানাকুল ২ ব্লক এলাকা এ দিনও বিচ্ছিন্ন। এখানকার ১১টি পঞ্চায়েত এলাকায় এখনও ৬-৮ ফুট জল দাঁড়িয়ে। প্লাবনের কারণে শনিবার থেকে খানাকুল ১ ব্লকের তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।

দু’দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন খানাকুল ১ ব্লকের রামনগর গ্রামের রাজু বটব্যাল(৪২) নামে এক ব্যক্তি। শনিবার তাঁর দেহ মেলে বন্যার জলে কোনও ভাবে পরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। রবিবার একই ব্লকের ঘোষপুরের গোপাল মান্না (৪৮) সর্পদষ্ট হয়ে এবং স্মৃতিধর দাঁ (৬৮) বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। পুলিশ জানায়, এলাকা জলমগ্ন থাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা ছিল। স্মৃতিধর ট্রান্সফর্মারে উঠে বিদ্যুৎ সংযোগের চেষ্টা করলে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

এ দিন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বন্যা পরিদর্শনে এলেও খানাকুল ২ ব্লক এলাকায় যেতে পারেননি। পুরশুড়া এবং খানাকুল ১ ব্লকে পরিদর্শন সেরে দুপুরে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে প্রশাসনিক বৈঠক সারেন। পরিদর্শনকালীন ত্রাণ নিয়ে সরাসরি ক্ষোভ-বিক্ষোভের মুখে তিনি না পড়লেও তা অব্যাহত ছিল এ দিনও।

খানাকুল ১ ব্লকের মূল ফটকের সামনে বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকার কয়েকশো মানুষ জমায়েত হয়ে বিক্ষো‌ভ দেখান। লাউসর, সোনাটিকরি, কেদারপুর, জয়রামচক ইত্যাদি গ্রামের কাশীনাথ মালিক, আক্তার আলি, বিমল সরকার প্রমুখের ক্ষোভ, ১০-১২টি গাড়ি নিয়ে নানা স্তরের আধিকারিক, মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধিরা আসছেন, নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। কিন্তু জলের পাউচ ছাড়া কিছুই মেলেনি। এ দিন হরিণখোলা ১ পঞ্চায়েত এলাকা পরিদর্শন করে মুখ্যসচিব খানাকুলের দিকে রওনা হওয়ার পর তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী ত্রাণে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে নিজেদের মধ্যে বচসায় জড়ায়। পরে দুই গোষ্ঠীর নেতা তথা বর্তমান প্রধান পার্থ হাজারী এবং প্রাক্তন প্রধান আব্দুল আজিজ বচসা মেটান। তাঁরা জানান, সমস্যা মিটে গিয়েছে। সবাই ত্রাণ পাবেন।

তালিতে যাঁদের বাড়ি গিয়েছে বন্যার জলে, তাঁদের তরফে কাশীনাথ বাগ বলেন, “লুঙ্গি, জামাকাপড়, হাঁড়ি ইত্যাদি দিয়েছেন মুখ্যসচিব। পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। আর কিছু নয়।’’ গ্রামের আর এক গৃহহারা শম্পা পাত্র বলেন, “শুনেছিলাম আপৎকালীন সাহায্য হিসাবে মুখ্যসচিব আমাদের গৃহহারা পরিবারগুলিকে ১ লক্ষ টাকার চেক দেবেন। সেটা পেলাম না। তবে, পোশাক এবং ছেলেমেয়ের বই দিয়েছেন।” ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, ১ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের চেক যাঁদের দেওয়ার কথা তাঁদের সোমবারই প্রশাসনের তরফে দেওয়া হবে।

বিভিন্ন জায়গায় মরা ইঁদুর, সাপ আর ঝোপঝাড় পচার দুর্গন্ধে দূষণ ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। পঞ্চায়েত বা স্বাস্থ্য দফতর থেকে প্রয়োজনীয় ব্লিচিং পাউডার মিলছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন খানাকুলের দু’টি ব্লকের বন্যাপীড়িত মানুষ। হেলান গ্রামের সুফল দোলুই বলেন, “পাড়ার লোকরা চাঁদা তুলে ব্লিচিং কিনে সাধ্যমতো এলাকা দূষণমুক্ত করার চেষ্টা করছি।” বিক্ষিপ্ত ভাবে ডায়রিয়া, জ্বর, চর্মরোগ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঘোষপুরের শেখ ইব্রাহিম।

মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর থেকে বলা হয়েছে, প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসকের কিছুটা ঘাটতি থাকলেও পরিষেবা যথাযথ দেওয়া হচ্ছে। প্রতি দলে প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী থাকছেন। জটিল রোগের খবর পেলে চিকিৎসকও পৌঁছে যাচ্ছেন।

flood Khanakul

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}