অপহরণকারীদের হাত থেকে উদ্ধার হওয়ার পর রবিশঙ্কর কেশরী। —নিজস্ব চিত্র।
সমাজমাধ্যমে চাকরির টোপ দিয়ে এক যুবককে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ছক কষেছিল দুষ্কৃতীরা। ঘটনার তদন্তে নেমে মঙ্গলবার তিন অভিযুক্ত গ্রেফতার করল হাওড়ার লিলুয়া থানার পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে অপহৃত যুবককেও। তিনি শারীরিক ভাবে সুস্থ রয়েছেন বলেই খবর।
পুলিশ সূত্রে খবর, লিলুয়া থানার জগদীশপুর দেবীপাড়ার বাসিন্দা রবিশঙ্কর কেশরী সমাজমাধ্যমে চাকরি সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেখে যোগাযোগ করেছিলেন। ৩৫ বছরের ওই যুবককে একটি কোম্পানির সুপারভাইজ়ার পদে চাকরির টোপ দেওয়া হয়। বলা হয়েছিল মাসিক বেতন হবে ১৭ হাজার ২০০ টাকা। কথা মতো সোমবার দুপুর ৩টে নাগাদ চাকরির আবেদনপত্র এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে লিলুয়ার ভট্টনগর বাসস্ট্যান্ডে যান। রবিশঙ্করের দাবি, তিনি কথা মতো বাইক নিয়ে ভট্টনগরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে সেখানে অস্ত্র উঁচিয়ে ভয় দেখিয়ে আটক করে কয়েক জন। সূর্যনগরে একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয়। তাঁর ফোন থেকে স্ত্রীর কাছে ফোন করে অভিযুক্তেরা। হুমকি দেওয়া হয়, অবিলম্বে মুক্তিপণের ৪০ হাজার টাকা না দেওয়া হলে রবিশঙ্করকে খুন করে দেওয়া হবে।
হুমকি ফোন পেয়ে চমকে যান রবিশঙ্করের পরিবারের লোকজন। নিম্নবিত্ত ওই পরিবারের সদস্যেরা রবিশঙ্করকে ছাড়িয়ে আনতে গয়না বন্ধক রেখে ২০ হাজার টাকা জোগাড় করেন। সেই টাকা তাঁরা অপহরণকারীদের দেওয়া একটি মোবাইল নম্বরে ইউপিআই করেন। রবিশঙ্করের অভিযোগ, টাকা পাওয়ার পরেও তাঁর উপর অত্যাচার করা হয়। পরে তিনি যাতে পুলিশে অভিযোগ না করেন, সে জন্য তাঁকে বিবস্ত্র করে ছবি তোলা হয়। হুমকি দেওয়া হয়, পুলিশের কাছে গেলে ওই ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। অন্য দিকে, টাকা পাঠিয়ে দেওয়ার পর রবিশঙ্করের পরিবার লিলুয়া থানার আউটপোস্টে যায়। ঘটনার বিবরণ জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তারা। অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসে পুলিশ।
সোমবার রাতেই অপহরণকারীদের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে দুষ্কৃতীদের খোঁজ পান তদন্তকারীরা। ভট্টনগর থেকে তিন দুষ্কৃতীকে হাতেনাতে পাকড়াও করে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় রবিশঙ্করকেও। হাওড়া সিটি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার কে শবরীরাজ কুমার বলেন, ‘‘ধৃতদের বিরুদ্ধে অপহরণ-সহ একাধিক ধারায় মামলা শুরু করেছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মুক্তিপণ হিসাবে যে টাকা নিয়েছিল তারা, সেগুলোও উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবারই ধৃতদের হাওড়া আদালতে তোলা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy