মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের কোন দফতরে কত সংখ্যায় কর্মী কর্মরত রয়েছেন, সেই সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সব দফতরের কাছে তথ্য তলব করল কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার (প্রশাসনিক পরিভাষায় ‘পার’) দফতর। ওই দফতরটি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। নতুন বছরের শুরুতেই ওই দফতরের তরফে রাজ্যের সব দফতরকে পৃথক ভাবে চিঠি পাঠানো হয়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর, বিশেষত সচিবালয়গুলিতে লোয়ার ডিভিশন অ্যাসিস্ট্যান্ট (এলডিএ), আপার ডিভিশন অ্যাসিস্ট্যান্ট (ইউডিএ), হেড অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং সেকশন অফিসার পদে মোট অনুমোদিত পদ ও সেখানে কত জন কর্মী আছেন তার বিস্তারিত পরিসংখ্যান চাওয়া হয়েছে। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সেই তথ্য জমা দিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে।
আচমকা মুখ্যমন্ত্রী কেন এই বিস্তারিত তথ্য চেয়েছেন, তা নিয়ে প্রশাসনিক মহলে জল্পনা এবং আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রশাসনিক মহলের একাংশের বক্তব্য, আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রাজ্য প্রশাসনে নতুন কর্মী নিয়োগ করতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তাই কোন দফতরে কত সংখ্যক কর্মী প্রয়োজন, সেই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য চান তিনি। ওই বিষয়ে তাঁর হাতে স্পষ্ট এবং সর্বশেষ তথ্য দিতেই কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতর এই পদক্ষেপ করেছে।
যে কোনও নির্বাচনেই যুবসমাজের ভোট নিজেদের ঝুলিতে টানতে রাজনৈতিক দলগুলি কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেয়। গত বছর লোকসভা নির্বাচনে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় ভুগতে হয়েছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। তৃতীয় দফায় সরকার গড়লেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে বিজেপি। এক প্রশাসনিক আধিকারিকের ব্যাখ্যা, এই বিষয়টি মাথায় রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। তাই তিনি এ বছর রাজ্যের বিভিন্ন দফতরে শূন্যপদে নিয়োগের বন্দোবস্ত সেরে ফেলতে চান। যাতে আগামী বছরের নির্বাচনে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দফতরে শূন্যপদের সংখ্যা নিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ না পায়।
কর্মী সংক্রান্ত তথ্য চাওয়ার আরও একটি ব্যাখ্যা প্রশাসনিক মহলে শোনা যাচ্ছে। শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিই নয়, মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি ধারাবাহিক ভাবে সরব রয়েছে। ডিএ-র পাশাপাশি রাজ্যের শূন্যপদে কর্মী নিয়োগের বিষয়টিও তুলে ধরে সরকারপক্ষকে আক্রমণ করছে তারা। সেই বিষয়টিও মাথায় রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। আধিকারিকদের একাংশের অনুমান, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই শূন্যপদে নিয়োগ নিয়ে বড় ঘোষণা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই ‘কৌশলে’ একসঙ্গে বিরোধী শিবির এবং সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলির আক্রমণের ‘হাতিয়ার’ ভোঁতা করে দিতে চাইছেন মমতা। সেই সূত্রেই প্রশাসনের একটি অংশ ধরে নিচ্ছে, কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতরের তরফে যাবতীয় তথ্য জমা পড়ার কয়েক মাসের মধ্যেই সরকারি শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে নবান্ন।
‘গ্রুপ ডি’ পদে কর্মী নেওয়া হবে স্টাফ সিলেকশন কমিশনের মারফত। গ্রুপ সি-তে এলডিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে ক্লার্কশিপ পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়াও, পদোন্নতি দিয়ে বিভিন্ন উচ্চপদস্থ শূন্যপদগুলিতে নিয়োগ করার ভাবনাও রয়েছে নবান্নের। তবে আপাতত সব কিছুই নির্ভর করছে বিভিন্ন দফতরের রিপোর্টের ওপর। রিপোর্টের ভিত্তিতেই তৈরি হবে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের নীল নকশা। তার ভিত্তিতেই মুখ্যমন্ত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy