—প্রতীকী ছবি।
আইনি ব্যবস্থা নিলে ফল মিলবে এমন নিশ্চয়তা নেই। আবার ছেড়ে দিলে আরও বড় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। কার্যত শাঁখের করাতে পড়েছে রাজ্য শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন।
ক’জন অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকা ভর্তি রয়েছে প্রসূতি বিভাগে, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সরকারি হাসপাতালে যাচ্ছেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। তাতে প্রাথমিক ভাবে যে তথ্য উঠে আসছে, তা ‘স্বস্তিদায়ক’ নয় বলেই মনে করছেন তাঁরা। মালদহ ও মুর্শিদাবাদের কয়েকটি হাসপাতাল পরিদর্শন করে তাঁদের নজরে এসেছে, প্রসূতি বিভাগে ভর্তি হওয়া অন্তঃসত্ত্বাদের কম-বেশি ৩০ শতাংশই নাবালিকা।
কমিশনের প্রতিনিধিরা মনে করছেন, এ সব ক্ষেত্রে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইন বা নাবালিকাদের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ আইনে (পকসো) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে নাবালিকা বিবাহ বন্ধ করা যাবে, এমন নিশ্চয়তা নেই। উল্টে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার কমার আশঙ্কা রয়েছে। সে কারণে নাবালিকা বিবাহের প্রবণতা বেশি, এমন মহল্লায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে নামিয়ে সচেতনতা প্রচারে জোর দিয়েছে কমিশন। ‘বিয়ের এত তাড়া কেন’— প্রচারের প্রথম পর্যায়ে এই স্লোগানকে সামনে রাখছে তারা। পরের পর্যায়ের স্লোগান হবে, ‘এতে বিপদ আছে জেনো।’
নাবালিকা বিবাহ বন্ধে কিছু সাফল্য মিলেছে কম-বেশি সব জেলায়। তবে লুকিয়ে-চুরিয়ে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দেওয়া কিংবা কিশোরীদের পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার ঘটনা ঘটে হামেশাই। তার ফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ছে অনেক নাবালিকা। এতে অশনি সঙ্কেত দেখছে রাজ্য শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন। কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন তথা বর্তমান উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মাস তিনেক আগে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল পরিদর্শন শুরু করি। এখনও পর্যন্ত মালদহ ও মুর্শিদাবাদের কয়েকটি সরকারি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে গিয়ে বার্থ রেজিস্টার খতিয়ে দেখেছি। লক্ষ্য করা গিয়েছে, সেখানে অনেক ‘আন্ডার এজ ডেলিভারি’ (এক কথায় নাবালিকা অবস্থায় মা হওয়া) হয়েছে। ভর্তি হওয়া অন্তঃসত্ত্বাদের প্রায় ৩০ শতাংশই নাবালিকা।’’
তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের রাজ্যে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। এই প্রেক্ষিতে কড়া আইনি পদক্ষেপ করলে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব কমতে পারে। এমনও হতে পারে যে, ভীত হয়ে অনেক নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হাসপাতালে না এসে বাড়িতেই প্রসব করাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রাণের ঝুঁকি থেকে যায়। খুব সতর্ক হয়ে ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। নাবালিকা বিবাহের প্রবণতা বেশি এমন এলাকাগুলি চিহ্নিত করে সচেতনতা প্রচার ও কর্মশালায় জোর দেওয়া হচ্ছে। এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে মালদহ ও মুর্শিদাবাদ দিয়ে।’’ কমিশনের কাছে খবর, ওই দুই জেলায় নাবালিকা বিবাহের প্রবণতা বেশি। হাসপাতালের কাছে কমিশনের আর্জি, নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা এলেই তা যেন প্রশাসনকে জানানো হয়। কমিশন সূত্রের খবর, এখন অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকা ডাক্তারের কাছে এলে অনেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রশাসনকে জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy