—ফাইল চিত্র
একের পর এক সরকারি হাসপাতাল টাকা চেয়ে চিঠি পাঠাচ্ছে স্বাস্থ্য ভবনে। রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা বুঝে উঠতে পারছেন না, করোনা সামাল দেবেন, নাকি সর্বস্তরের হাসপাতালে অর্থাভাবের মোকাবিলা করবেন।
স্বাস্থ্য দফতরের খবর, তহবিল তলানিতে পৌঁছনোয় ওষুধ এবং গ্লাভস, ইসিজি পেপার, গজ, ব্যান্ডেজ, রি-এজেন্টের মতো চিকিৎসাসামগ্রী কেনা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করছে বিভিন্ন হাসপাতাল। কিছু মেডিক্যাল কলেজে স্টেন্ট, পেসমেকারের কয়েক কোটি টাকা বাকি পড়েছে। দীর্ঘদিন টাকা না-পেয়ে ক্যানসার ও ডায়াবিটিসের ওষুধ, রি-এজেন্ট, গ্লাভস প্রস্তুতকারী সংস্থা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। নিজেরা কিনে নেবে (‘লোকাল পারচেজ’), সেই টাকাও অনেক হাসপাতালের হাতে নেই বলে অভিযোগ। ফলে বিশেষ করে জেলায় পরিষেবা ধাক্কা খাচ্ছে মারাত্মক ভাবে।
‘‘কেনাকাটার পরে টাকা মেটাতে সরকারি স্তরে ৫-৭ মাস দেরি হয়েই থাকে। সম্প্রতি অর্থ দফতর বেশ কিছু টাকা ছেড়েছে। টাকার অভাব নেই। যদি কোথাও সমস্যা হয়ে থাকে, সেটা স্থানীয় প্রশাসনিক ত্রুটির জন্য হচ্ছে। খোঁজ নিচ্ছি,’’ বলেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ বিভিন্ন সরবরাহকারী সংস্থা অবশ্য অন্য তথ্য দিচ্ছে। গ্রামীণ এলাকার হাসপাতালে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ওষুধ কেনার প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা মেটাতে পারেনি সরকার। বাকি আছে ২০১৮-১৯ সালের প্রায় ১০ কোটি, ২০১৭-১৮ সালের প্রায় ১৫ কোটি টাকা। শহুরে হাসপাতালে অগস্টে কিছু টাকা মিটিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তার পরেও প্রচুর টাকা বাকি আছে।
পেসমেকার-সহ নানান সামগ্রী সরবরাহকারী সংস্থার গত আর্থিক বর্ষের শেষ তিন মাসের প্রাপ্য টাকা মেটায়নি সরকার। চলতি অর্থবর্ষে এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত শুধুই ‘শ্যাডো পেমেন্ট’ হয়েছে অর্থাৎ স্বাস্থ্য দফতর খাতায়-কলমে টাকা অনুমোদন করলেও সরবরাহকারীরা সেই টাকা হাতে পায়নি। শুধু পেসমেকারেরই সাড়ে ১০ কোটি টাকা মেটানো বাকি। তার মধ্যে এসএসকেএমের প্রায় প্রায় কোটি, আরজি করের দেড় কোটি, বর্ধমান মেডিক্যালের প্রায় এক কোটি ৩০ লক্ষ, নীলরতনের প্রায় ৬৫ লক্ষ, কল্যাণী গাঁধী হাসপাতালের প্রায় ৭০ লক্ষ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এক কোটি টাকা আছে। তাদের পক্ষে আর পেসমেকার দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে সরবরাহকারী সংস্থা।
টাকার অভাবে ক্যানসারের ওষুধ কিনতে পারছে না নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ। ক্যানসারের অতি জরুরি একটি ওষুধের (এক মাসের কোর্স) দাম এক লক্ষ টাকা। ১৯ নভেম্বর স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে ১০ কোটি টাকা চেয়েছে এনআরএস। আরজি কর চেয়েছে ১২ কোটি টাকা, ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ চেয়েছে প্রায় ছ’কোটি। ৫ নভেম্বর মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ জানিয়েছে, চলতি বছরের তৃতীয় আর্থিক পর্বে তাদের ১৮ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে।
মালদহ মেডিক্যাল দেড় লক্ষ জোড়া, হুগলি জেলা রিসার্ভ স্টোর (ডিআরএস) ৮০ হাজার জোড়া, হাওড়া ডিআরএস ৪০ হাজার জোড়া, বর্ধমান মেডিক্যাল ও নদিয়া ডিআরএস ৫০ হাজার জোড়়া, ন্যাশনাল মেডিক্যাল ৫০ হাজার জোড়া গ্লাভস চেয়েছে। কিন্তু প্রচুর বকেয়া থাকায় সরবরাহকারী সংস্থা গ্লাভসও দিচ্ছে না। বাজারে ওই জিনিসের দাম অনেক বেড়েছে। কিন্তু বেশি খরচ হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর পুরনো দরপত্র নবীকরণের রাস্তায় হাঁটছে না। ‘রেট’-ও বাড়াচ্ছে না বলে অভিযোগ। ফলে সংস্থাগুলিও জিনিস দিচ্ছে না। ভুগছেন সাধারণ মানুষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy