পথদুর্ঘটনার পর মাথায় ৮টি সেলাই নিয়ে হাসপাতালে বসেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন হুগলির সন্দীপ মাঝি। —নিজস্ব চিত্র।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনেই অঘটন। পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়লেন রাজ্যের দুই জেলায় ৬ জন পরীক্ষার্থী। অন্য আর এক জেলায় পরীক্ষা দেওয়ার সময় জ্ঞান হারালেন এক জন। মঙ্গলবার সকালে বীরভূম এবং পূর্ব মেদিনীপুরে পথদুর্ঘটনা হয়েছে ৬ পরীক্ষার্থীর। অন্য দিকে, পথদুর্ঘটনার পর প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সময় অচৈতন্য হয়ে যান হুগলির এক ছাত্র।
পুলিশ সূত্রে খবর, এক আত্মীয়ের মোটরবাইকে চেপে সিউড়িতে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাচ্ছিলেন বীরভূমের সদাইপুর থানার ভুরকুনা কবিগুরু হাইস্কুলের ২ ছাত্র-ছাত্রী। সিউড়ি থানার মিনস্টিল মোড়ের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তাঁরা। মঙ্গল দাস এবং মামনি দাস নামে ওই ছাত্র-ছাত্রী এবং তাঁদের আত্মীয়কে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসার পর দুই পরীক্ষার্থী জানান, তাঁরা পরীক্ষায় বসবেন। এর পর হাসপাতালেই তাঁদের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। তবে মঙ্গলের হাত জখম হওয়ায় তাঁর জন্য এক জন লেখকের ব্যবস্থা করা হয়। মামনি অবশ্য নিজেই পরীক্ষা দেবেন বলে জানিয়েছেন পরীক্ষাকেন্দ্রের ইনচার্জ চন্দন দাস।
বীরভূমের মতোই পূর্ব বর্ধমানের দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকালে জামালপুর থানার জোতশ্রীরাম এলাকায় দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন হেমন্ত ঘোষ, সায়ন ঘোষ, অরূপ মিদ্দা এবং অমরেশ ঘোষ নামে ৪ জন পরীক্ষার্থী।
জামালপুরে জোতশ্রীরাম হাই স্কুলের এই ছাত্রদের বাড়ি রায়না ২ নম্বর ব্লকের আদমপুর এলাকায়। পৃথক ২টি মোটরবাইকে চড়ে জামালপুরের বেরুগ্রাম হাইস্কুলের পরীক্ষা দিতে রওনা দিয়েছিলেন তাঁরা। পথে জোতশ্রীরাম সমবায় সমিতির সামনে আলুবোঝাই একটি ট্র্যাক্টরকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইক-সহ রাস্তায় ছিটকে পড়েন ছাত্রেরা। তাতে গুরুতর চোট পান তাঁরা। তাঁদের উদ্ধার করে পরীক্ষাকেন্দ্র পৌঁছে দেন স্থানীয়েরা। তবে পরীক্ষার্থীদের রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে দ্রুত তাঁদের জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানোর বন্দোবস্ত করা হয়। খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছন জামালপুরের বিধায়ক অলক মাঝি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভূতনাথ মালিক, ব্লক তৃণমূল সভাপতি মেহমুদ খান এবং জামালপুর থানার পুলিশ আধিকারিকেরা। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ঋত্বিক ঘোষের সঙ্গে আলোচনা করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই ছাত্রদের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
দুর্ঘটনার পর প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে পরীক্ষার হলে বসলেও সেখানে অচৈতন্য হয়ে পড়েন হুগলির ছাত্র সন্দীপ মাঝি। আলিনগর ইয়াসিন মণ্ডল শিক্ষা নিকেতনের ছাত্র সন্দীপের সিট পড়েছে পুইনান হাইস্কুলে। বাবা অমর মাঝির মোটরবাইকে চেপে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন সন্দীপ। তাতে গুরুতর জখম হন তিনি। সেখানে কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়াররা তড়িঘড়ি গাড়ি করে সন্দীপকে নিয়ে যান পোলবা গ্রামীণ হাসপাতালে। সন্দীপের মাথায় আটটা সেলাই পড়েছে।
চিকিৎসার পর সন্দীপকে তাঁর পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। তবে পরীক্ষায় বসতে না বসতেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন সন্দীপ। তাঁর মাথায় গুরুতর চোট লাগে। সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যান পুইনান স্কুলের প্রধানশিক্ষক। তাঁর মাথার সিটি স্ক্যান করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। সন্দীপের পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে গোড়ায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। তবে সিটি স্ক্যান করানোর পর কিছুটা সুস্থ বোধ করায় হওয়ায় হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দেন সন্দীপ। পুইনান স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘পরীক্ষার জন্য সন্দীপকে বাড়তি সময় দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy