— প্রতীকী চিত্র।
নতুন বছরে রাজনীতির নতুনত্বের চর্চায় থাকছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই চর্চার মূল প্রশ্ন, কোন পথে তৃণমূল?
বিশেষ করে ইংরেজি নববর্ষের দিনই দলের জন্মদিন হওয়ায় এই চর্চার প্রধান উপকরণ হয়ে উঠতে চলেছে দলের অভ্যন্তরে মাথা তুলতে থাকা নতুন নতুন বিষয়। তাই আজ, ২৮তম প্রতিষ্ঠা দিবসে সরকার ও সংগঠনের আগামী নেতৃত্ব এবং পথ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে চলেছে ২০২৫ সাল জুড়ে।
বিদায়ী বছরের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক গতিপ্রকৃতি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ছিল তৃণমূলের জন্য। শাসক হিসেবে তৃণমূলের বিপক্ষে বাড়তে থাকা প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার কঠিন পরীক্ষা ছিল ২০২৪ সালেই। লোকসভা ভোটের সেই পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হলেও আগামীর ভাবনাই এখন প্রধান হয়ে উঠেছে রাজ্যের শাসক দলের। এই সাফল্যের চাবিকাঠি চিহ্নিত করে দল যা চূড়ান্ত করবে, পরবর্তী বিধানসভা ভোট পর্যন্ত তা-ই হবে তৃণমূলের নির্ণায়ক। যে হেতু দলের অন্দরের নবীন-প্রবীণ টানাপড়েনই এই মূল্যায়নের অন্যতম উপাদান, তাই রাজনৈতিক শিবিরের নজর থাকছে সে দিকেই। জন্মদিন উদযাপনে নবীন-প্রবীণের অবস্থান কী হয়, তা নিয়েও কৌতূহল রয়েছে তৃণমূলের ভিতরে ও বাইরে। দলের এক নেতার ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘ব্যর্থতা থেকে বেরোনো সাফল্য রক্ষার থেকে অনেক সহজ।’’
তৃণমূল কোন পথে, এই প্রশ্ন আছে। সেই সঙ্গেই জড়িয়ে থাকছে আরও একটি অনিবার্য প্রসঙ্গ— কার পথে তৃণমূল? আরও নির্দিষ্ট করে বললে, কার হাতে তৃণমূল। কারণ, লোকসভা ভোটের সময় থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরসূরি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে নানা স্তরে আলোচনা হয়েছে। খুব গুরুত্বপূর্ণ কেউ না-হলেও দলের অন্দরে কারও কারও মুখে শোনা গিয়েছে তাঁর ভ্রাতুস্পুত্র তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘অভিষেকের’ দাবি। এবং তাকে কেন্দ্র করে দলীয় শৃঙ্খলায় যাতে ‘টান’ না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে ফের এক দফায় নিজের কর্তৃত্বের বার্তা দিতে সক্রিয় হয়েছেন মমতা স্বয়ং। একই ভাবে আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে দলের কাজকর্ম পরিচালনায় নিযুক্ত পরামর্শদাতা সংস্থার ভূমিকাও পুনর্বিবেচনা করছেন তিনিই।
একই ভাবে দলে যে সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে, নতুন পথে তা-ও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। পৌষ সংক্রান্তির পরেই দল ও স্থানীয় প্রশাসনে কিছু রদবদলের সিদ্ধান্ত হয়েছে তৃণমূলে। তা নিয়ে অভিষেকের দেওয়া প্রস্তাবের নিরিখে সেই রদবদলের রূপরেখা ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়ে চলেছে। দলের অনেকেই মনে করছেন, এই পরিবর্তনেই আগামীর মুখ ও পথ সুনির্দিষ্ট করে দেবেন তৃণমূল নেত্রী। এবং তা নিশ্চিত ভাবে তৃণমূলের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক চেহারায় বদল আনবে। প্রতিষ্ঠা দিবসে আজ দলের মূল অনুষ্ঠানে কী বার্তা আসে, সে দিকেও নজর থাকছে সকলের। সেখানে বক্তৃতা করার কথা মমতার নির্ভরযোগ্য ‘প্রহরী’ দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর।
এই প্রেক্ষাপটে দলের প্রসঙ্গ এড়িয়েই নতুন বছর নিয়ে বার্তা দিয়েছেন অভিষেক। সমাজমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘মানুষের নিঃস্বার্থ সেবায় সব রকম প্রতিকূলতা পেরোতে শিখিয়েছে ২০২৪ সাল। শক্তির সঙ্গে সব বাধা পেরোতে আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিয়েছে। বিভাজন আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়তে শিখিয়েছে।’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবেই বছরটি ছিল অগ্রগতির। যে গণদেবতার সমর্থন পেয়েছি, তা ছাড়া আমরা অসম্পূর্ণ।’ নতুন বছরে সধারণ ভাবে জনসেবার অঙ্গীকারের বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাও।
এই চর্চার মধ্যেই স্বভাবসুলভ ইঙ্গিতে তাৎপর্যপূর্ণ মাত্রা যোগ করেছেন রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। ‘সাপ-লুডো’র সঙ্গে নিজের ছবি দিয়ে সমাজমাধ্যমে কুণাল লিখেছেন, ‘আজ রাতে শুধু বছর বদল। সিঁড়ি আর সাপ জীবনে থেকে যাবে’! কুণাল অবশ্য এর সঙ্গে দল বা রাজনীতির সম্পর্ক আছে কি না, তা স্পষ্ট করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy