Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Higher Education Department

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনি পদক্ষেপ প্রসঙ্গে নির্দেশ

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনি খরচের বরাদ্দ থেকে ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার মামলায় খরচ করা যাবে না।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

মধুমিতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৪ ১০:৪৫
Share: Save:

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আইনি খরচ কী ভাবে হবে, সে ব্যাপারে কার্যত নির্দেশিকা জারি করেছে উচ্চশিক্ষা দফতর। বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলা লড়ার জন্য আইনজীবী যাতে সরকারি প্যানেল থেকে নেওয়া হয়, সে ব্যাপারেও জোর দিয়েছে সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ‘স্বশাসন’ আইনে স্বীকৃত। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ কী ভাবে হবে এবং আইনজীবী কোথা থেকে নেওয়া হবে তা সরকার বেঁধে দিতে পারে কি না, শুরু হয়েছে বিতর্ক।

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সরকারি বরাদ্দের মধ্যে থেকেই চালাতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনি খরচ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনি খরচের বরাদ্দ থেকে ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার মামলায় খরচ করা যাবে না। রাজ্য সরকারি প্যানেল থেকে যাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আইনজীবী নিয়োগ করে, সেই ‘অনুরোধ’ করা হয়েছে। এই নির্দেশিকার পিছনে শিক্ষা মহলের একাংশ নবান্ন বনাম রাজভবনের ‘সংঘাত’ দেখছে। তাঁদের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য বনাম রাজ্যপাল মামলায় রাজ্যপালের পক্ষে খরচ বহনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে টাকা দিতে বলেছিল রাজভবন। দেখা গিয়েছিল, ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় এই আইনি খরচ দিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে জানুয়ারিতে চার সদস্যের দু’টি তদন্ত কমিটি গড়ে উচ্চশিক্ষা দফতর।

অনেকেই এই নির্দেশিকাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বশাসনে ‘হস্তক্ষেপ’ হিসেবে দেখছেন। আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্তের মতে, “সরকার টাকা দিচ্ছে, তাই আইনজীবী সরকারি প্যানেল থেকে নেওয়ার অনুরোধ করতেই পারে। কিন্তু এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বশাসনের প্রশ্ন আছে। টাকা দেওয়া হচ্ছে বলেই সরকার হস্তক্ষেপ করবে, এমন পদক্ষেপ নৈতিক কি না, তা ভেবে দেখা জরুরি।” বিজেপির আইনজীবী-নেত্রী সুস্মিতা সাহা দত্তের মতে, “সরকার টাকা দিলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বশাসনে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না, সে ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে।” তাঁর ব্যাখ্যা, রাজ্য সরকারি প্যানেলের আইনজীবীরা রাজ্যের হয়ে কথা বলবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু স্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় যে সব সময় সরকারের তালে তাল মিলিয়ে চলবে, তা নয়। তাই সরকারি আইনজীবীদের পরামর্শ নিলে বা নিয়োগ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনি পদক্ষেপের নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে থাকবে।

স্বশাসনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরেও উঠছে। অনেকে বলছেন, কোন মামলায় কোন আইনজীবীকে নিয়োগ করা হবে, সেই সিদ্ধান্তের স্বাধীনতা বিশ্ববিদ্যালয়ের থাকা উচিত। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির হয়ে বহু মামলায় লড়া আইনজীবীদের সম্মান-দক্ষিণা তুলনায় কম। সরকারি প্যানেলের আইনজীবীদের নিয়োগ করলে সেই খরচ বাড়বে। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন যে, এই নির্দেশে সরকারি প্যানেলভুক্ত শাসক দলের ঘনিষ্ঠ আইনজীবীদের মামলা বৃদ্ধির সুযোগ করা হচ্ছে কি?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE