Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
SSC

SSC: স্কুলের আরও ৫৭৩ কর্মীর চাকরি বাতিল

এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের ভূমিকারও সমালোচনা করেছে আদালত। তাদের পর্যবেক্ষণ, কমিশন কাউকে সুপারিশপত্র দেয়নি বলে দাবি করেছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৫৯
Share: Save:

আগে ২৫ জনের চাকরি বাতিল করে দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। স্কুলে ‘গ্রুপ ডি’ বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ মামলায় বুধবার আরও ৫৭৩ জনের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, সংশ্লিষ্ট জেলা পরিদর্শকেরা বেতন বন্ধ করবেন ওই কর্মীদের। বেতন বাবদ এ-পর্যন্ত তাঁদের নেওয়া টাকা ফেরত নিতে হবে আইনানুগ পদ্ধতিতে।

নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে কি না, তার অনুসন্ধানে এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে কমিটি গড়েছিল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। কমিটি নির্দিষ্ট সময়ে রিপোর্ট না-দেওয়ায় এ দিন অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি। তাঁর নির্দেশ, ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তদন্তের অবস্থা জানিয়ে অন্তর্বর্তী রিপোর্ট দিতে হবে।

২০১৬ সালে স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বেরিয়েছিল। মামলাকারীদের অভিযোগ, ২০১৯ সালে প্যানেলের মেয়াদ ফুরোনোর পরেও তালিকায় তাঁদের নীচে থাকা প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে। মামলাকারীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত, বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্কদেব বিশ্বাস ও দীপা আচার্য কোর্টে জানান, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের পরে নিয়োগ হয়েছে। এমনকি, অনেকে ২০২১ সালেও নিয়োগপত্র পেয়েছেন। কমিশন অবশ্য কোর্টে জানায়, তারা মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে কাউকেই নিয়োগপত্র দেয়নি।
তা হলে ওই ৫৭৩ জন কী ভাবে নিযুক্ত হলেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে। ওই ৫৭৩ জনকে মামলায় যুক্ত করা হলেও তাঁদের কোনও কৌঁসুলি এ দিন এজলাসে উপস্থিত ছিলেন না। এ দিন কোর্টে নির্দেশ দেয়, ওই ৫৭৩ জন আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। সে-ক্ষেত্রে কে তাঁদের সুপারিশপত্র দিয়েছিলেন এবং কে নিয়োগপত্র দিয়েছিলেন, তা বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে হলফনামা পেশ করতে হবে।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই সব পদে নিয়োগ নিয়ে সিবিআই-কে অনুসন্ধানের নির্দেশ দিলেও হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তা খারিজ করে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গড়ে দেয়। কমিটিকে দু’মাসের মধ্যে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনও কোনও রিপোর্ট জমা পড়েনি। সময় বাড়ানোর আর্জি জানিয়ে কমিটি একটি আবেদনপত্র ডিভিশন বেঞ্চে জমা দিয়েছে। সময় বৃদ্ধির বিষয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কোনও মন্তব্য করেননি। তবে এ দিন তাঁর এজলাসে কমিটির কোনও প্রতিনিধি উপস্থিত না-থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। সেই সঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবীদের জানান, এ দিনের নির্দেশের প্রতিলিপি কমিটির শীর্ষে থাকা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির কাছে পাঠাতে হবে।

এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের ভূমিকারও সমালোচনা করেছে আদালত। তাদের পর্যবেক্ষণ, কমিশন কাউকে সুপারিশপত্র দেয়নি বলে দাবি করেছে। আবার পরবর্তী কালে হলফনামায় মামলাকারীদের উদ্দেশ্য এবং আইনি অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এগুলি পরস্পরবিরোধী বক্তব্য। কোর্টের প্রশ্ন, কমিশন কি কোনও অনিয়ম এবং দুর্নীতিকে আড়াল করতে চাইছে?

এ দিনের নির্দেশের পরে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “চাকরি নিয়ে দোকানদারি হয়েছে। কিন্তু ওই ৫৭৩ জনের মধ্যে সকলে বেআইনি ভাবে চাকরি পাননি। যাঁরা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চাকরি পেয়েছেন, প্রশাসনিক অব্যবস্থার কারণে যাঁদের চাকরি পেতে কিছুটা দেরি হয়েছে, তাঁদের চোখের জল মোছাবে কে? এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট দফতর দায়ী। এই ভুল থেকে বেরোনোর রাস্তা সরকারকেই বার করতে হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

SSC High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy