Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Calcutta High Court

দুই-এক লাইনে নির্দেশে  নিষেধাজ্ঞা হাইকোর্টের

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:২৪
Share: Save:

সমাজে অপরাধ প্রতিরোধে বা শান্তিরক্ষায় নির্দেশ দিতে পারেন জেলাশাসক বা তাঁর অধীনস্থ এগ্‌জ়িকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা। কিন্তু সেই নির্দেশনামায় যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে হবে। দুই-এক লাইনে শুধু নির্দেশ দিলে হবে না। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি মহম্মদ নিজামুদ্দিন। এই রায়ের প্রতিলিপি হাইকোর্ট প্রশাসন মারফত সব জেলাশাসকের কাছে পাঠাতে বলেছেন তিনি।

আদালত সূত্রের খবর, জলপাইগুড়িতে একটি জমি সংক্রান্ত বিবাদের মামলায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী, শান্তি বজায় রাখার নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট এগ্‌জ়িকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় এক পক্ষ। মামলাকারীর আইনজীবীদের বক্তব্য ছিল, এই নির্দেশ ঘোষণার সময় এগ্‌জ়িকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট তাঁদের মক্কেলের বক্তব্য শোনেননি। কেন এই নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে তারও কোনও ব্যাখ্যা নির্দেশনামায় নেই। বিচারপতি মহম্মদ নিজামুদ্দিন দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ বাতিল করে দিয়েছেন।

আদালতের পর্যবেক্ষণ, কোনও বিচারবিভাগীয় বা আধা-বিচারবিভাগীয় (কোয়াসি-জুডিশিয়াল) প্রতিষ্ঠান যখন কোনও রায় বা নির্দেশ দেয়, তখন সেই রায় বা নির্দেশ দেওয়ার পিছনে যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা প্রয়োজন। সেটা বিচার ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এ ছাড়াও, এগ্‌জ়িকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর আদালতে মামলা হলে কেন রায় দেওয়া হয়েছিল, বিচারপতিরা তা স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারবেন না। শুধু তাই নয়, নির্দেশের সময় ম্যাজিস্ট্রেট সব পক্ষের বক্তব্য শুনেছেন কি না, সেটাও বোঝা জরুরি।

আইনজীবীরা বলছেন, যে কোনও বিবাদে কোনও নির্দেশ দিতে গেলেই শুনানি হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু জমি সংক্রান্ত বা অন্যান্য বিবাদে শান্তিবজায় রাখার নির্দেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেটেরা সেই সব খুঁটিনাটি প্রক্রিয়া এড়িয়ে যান। আইনজীবীদের অনেকে এ-ও বলছেন, বহু সময়েই ১৪৪ ধারা জারির ক্ষেত্রেও জেলাশাসক বা প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেটরা একতরফা নির্দেশ দিয়ে দেন।

বস্তুত, বেশ কিছু ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে কোনও ধরনের গণ-আন্দোলন হওয়ার আগেই তড়িঘড়ি ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ-প্রশাসন এবং সেই নির্দেশিকা অমান্য করায় আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করা হয়। গত জানুয়ারি মাসেই সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে একটি নির্দেশিকা দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বিরুদ্ধ স্বর দমন করার জন্য অহিংস আন্দোলনের ক্ষেত্রে ইচ্ছে মতো ১৪৪ ধারা জারি করা যাবে না। জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের মামলায় বিচারপতি নিজামুদ্দিনের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতেও সে কথা বলছেন আইনজীবীদের অনেকে। তাঁদের মতে, ১৪৪ ধারা জারি করার ক্ষেত্রেও তা হলে প্রশাসনকে নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে।

প্রশাসনিক সূত্রের অবশ্য দাবি, তারা নির্দেশিকা জারি করার সময় নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দেন। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনায় কোনও কোনও প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেটের ‘ভুল’ হতে পারে। আদালতের নির্দেশ মেনে সেই ‘সামান্য’ ভুলও শুধরে নেওয়া হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court District magistrate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy