উদয়নারায়ণপুর কুরচি মুচিপাড়ায় রাস্তার উপর দিয়ে দামোদরের জল ঢুকছে গ্রামে। ছবি: সুব্রত জানা
বৃষ্টির জেরে দক্ষিণবঙ্গে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ অব্যাহত। নতুন করে জলবন্দি হয়েছে কিছু এলাকা।
রবিবার দুপুর থেকে ভারী বর্ষণের জেরে জল জমেছে নদিয়ার বেশ কিছু নিচু এলাকায়। কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর, নবদ্বীপ ও রানাঘাটের কিছু ওয়ার্ডে বেশ কিছুক্ষণের জন্য জল দাঁড়িয়ে যায়। ভাগীরথী, চূর্ণী ও জলঙ্গি লাগোয়া কিছু নিচু এলাকাও প্লাবিত হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে নদীর জলস্তরও বাড়ছে।
নদিয়ায় রবিবার সকাল পর্যন্ত ভাগীরথীর জলস্তর ছিল ৭.৬৭ মিটার। যদিও তা বিপদসীমার (৮.৪৪ মিটার) নীচে ছিল। সকালে হাঁসখালিতে চূর্ণীর জলস্তর ছিল ৪.৫৩ মিটার। কল্যাণী ও শান্তিপুরে ভাগীরথীর পাড়ে ভাঙনও শুরু হয়েছে কয়েক জায়গায়। সেচ দফতর জানিয়েছে, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। নদীবাঁধের নজরদারি করা হচ্ছে।
মুর্শিদাবাদেও ভাগীরথী বিপদসীমার নীচে ছিল। তবে, সুতি থেকে ঝাড়খণ্ড যাওয়ার রাস্তা দিয়ে জল বইছে। পথ এক রকম বিচ্ছিন্ন। মুণ্ডেশ্বরীর জলের ধাক্কায় তিনটি সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে হাওড়ার ‘দ্বীপাঞ্চল’ বলে পরিচিত আমতা-২ ব্লকের ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান এবং ভাটোরা— দুই পঞ্চায়েত এলাকাও। বিপাকে পড়েছেন কয়েক হাজার বাসিন্দা। কারণ, জেলার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তাঁদের ভরসা ছিল বাঁশের ওই সাঁকোগুলিই। বৃষ্টির জের এবং ডিভিসি-র ছাড়া জলের ধাক্কায় মুণ্ডেশ্বরীর জলস্তর বাড়ে। সঙ্গে প্রবল স্রোতও। তার ধাক্কায় সাঁকোগুলি ভেঙে যাওয়ায় রবিবার গ্রামবাসীদের অনেকেই বাকসিতে সাপ্তাহিক হাটে যেতে পারেননি। নতুন করে সাঁকো তৈরি না-হওয়া পর্যন্ত যাতায়াতে এখন নৌকাই তাঁদের একমাত্র অবলম্বন।
হুগলিতে যথারীতি সেচ দফতরের উদ্বেগ বাড়িয়েছে খানাকুল-২ ব্লক। রূপনারায়ণ কানায় কানায় পূর্ণ। ভৌগোলিক ভাবে নিচু ওই এলাকায় বৃষ্টির জমা জল, মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাড়তি জল নামতে পারছে না। উল্টে রূপনারায়ণের জলই ঢুকে পড়ছে ব্লকের ধান্যগোড়ি, মাড়োখানা এবং জগৎপুর— তিন পঞ্চায়েত এলাকায়। অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
কম বৃষ্টি হওয়ায় বাঁকুড়ায় দ্বারকেশ্বর ও গন্ধেশ্বরী নদীর জলস্তর আগের থেকে নেমেছে। তবে, বাঁকুড়া শহর লাগোয়া সতীঘাট, মানকানালি, ভাদুল ও মিনাপুর কজ়ওয়ে এ দিনও ছিল জলের তলায়। জেলার নদী তীরবর্তী এলাকাগুলিতে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন।
নতুন করে কোনও এলাকা প্লাবিতও না হলেও পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের জলবন্দি দশা কাটেনি। এ দিনও শিলাবতী নদীর জল প্রাথমিক বিপদসীমার উপরেই ছিল। প্লাবিত গ্রামগুলিতে পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তবে ঝুমি নদীর জল কমতে শুরু করেছে। ঘাটাল পুর-শহরেও নতুন করে জলস্তর বাড়ার খবর নেই। ঘাটালের মহকুমাশাসক শৌভিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্লাবিত এলাকাগুলিতে শুকনো খাবার ও ত্রিপল বিলি করা হচ্ছে। জলমগ্ন এলাকায় চাষ-সহ সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নেওয়া হচ্ছে।” টানা চারদিন ঘাটাল ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় থাকায় বাদাম ও পাট চাষে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy