—ফাইল চিত্র।
দলত্যাগ-বিরোধী আইন প্রয়োগ করে মুকুল রায়ের বিধায়ক-পদ খারিজের দাবিতে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ‘তথ্য-প্রমাণ’ জমা দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। স্পিকার আগামী ৩০ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। বিরোধী দলনেতা জানিয়েছেন, স্পিকার যত বার শুনানিতে ডাকবেন, তত বারই তাঁরা যাবেন। কিন্তু অনন্ত কাল এই প্রক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা না করে প্রয়োজনে আদালতেরও দ্বারস্থ হতে পারেন। তারই পাশাপাশি, লোকসভায় দলবদলু সাংসদ হিসেবে শিশির অধিকারী ও সুনীল মণ্ডলের সদস্যপদ খারিজের জন্য যে তৃণমূল সক্রিয়, তারাই রাজ্যে মুকুলবাবুর জন্য পৃথক ফল করছে— এই অভিযোগ জাতীয় স্তরেও তুলে ধরতে চায় বিজেপি। সংসদের আসন্ন অধিবেশন চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন দিল্লি যেতে পারেন, সেই সময়েই বাংলায় বিরোধীদের কণ্ঠরোধের অভিযোগ নিয়ে রাজধানীতে দরবার করতে পারে বিজেপির প্রতিনিধিদল।
মুকুলবাবু তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে তাঁর বিধায়ক-পদ খারিজের যে আবেদন বিজেপি করেছিল, তার ভিত্তিতে শুক্রবার প্রথম শুনানির দিন ঠিক করেছিলেন স্পিকার। তাঁর ঘরে গিয়ে মুকুলবাবুর দল বদলের পক্ষে ৬৪ পাতার তথ্য-প্রমাণ জমা দিয়েছেন শুভেন্দু। পরে তিনি বলেন, ‘‘শুনানি নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। ওটা আইনের বিষয়। দলবদলের ঘটনা গত ১০ বছরে ৫০টা ঘটেছে। সারা দেশে আর কোথাও যেমন ভুয়ো টিকা পাওয়া যায় না, তেমনই দলত্যাগ-বিরোধী আইন একমাত্র পশ্চিমবঙ্গে কার্যকর করা হয় না!’’ স্পিকারের ডাকা শুনানিতে অংশগ্রহণ করলেও শুভেন্দু বলেছেন, তৃণমূল পরিচালিত ব্যবস্থার উপরে তাঁদের আস্থা নেই। সিপিএমের দলত্যাগী বিধায়ক দীপালি বিশ্বাসের ক্ষেত্রে ২৩ বার শুনানি করেও নিষ্পত্তি না হওয়ার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বলছি, এ ভাবে নিষ্পত্তি হয় না। বিজেপির পক্ষ থেকে প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেব।’’ কিন্তু বিধানসভার বিষয়ে স্পিকারের সিদ্ধান্তের আগে আদালত কি হস্তক্ষেপ করতে পারে? বিরোধী দলনেতার ব্যাখ্যা, আদালতে গিয়ে তথ্য-প্রমাণ দিয়ে তাঁরা নিষ্পত্তির জন্য সময় বেঁধে দেওয়ার আর্জি জানাবেন।
শুভেন্দু যে দিন শুনানিতে উপস্থিত, সে দিনই স্পিকারের ডাকা বিধানসভার স্ট্যান্ডিং ও হাউস কমিটিগুলির নতুন চেয়ারম্যানদের বৈঠকে যোগ দিতে বিধানসভায় এসেছিলেন মুকুলবাবু। বিজেপির অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘যেখানে খুশি যাক না! যাওয়ার জায়গা যখন আছে, যেতেই পারে।’’ মুকুলবাবুকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান করার প্রতিবাদে বিধানসভার ৮টি কমিটির দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন বিজেপির ৮ বিধায়ক। পদত্যাগী বিজেপি বিধায়কদের জায়গায় মদন মিত্র, সুদীপ্ত রায়, হুমায়ুন কবীর-সহ তৃণমূলের ৮ জন বিধায়কের নাম কমিটিগুলির চেয়ারম্যান হিসেবে এ দিন ঘোষণা করেছেন পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একই সঙ্গে বিজেপি বিধায়কদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।
বিজেপির অভিযোগ, সাংসদ শিশির-সুনীলের বিরুদ্ধে তৃণমূল দলত্যাগ-বিরোধী আইনে অভিযোগ তোলার পরে লোকসভার সচিবালয় দু’জনকে নোটিস পাঠিয়েছে। কিন্তু বিধানসভায় মুকুলবাবুর ক্ষেত্রে তেমন কোনও প্রক্রিয়া হয়নি। এই বিষয়ে স্পিকারের ব্যাখ্যা, বিজেপির অভিযোগ ‘গ্রহণযোগ্য’ বলে বিবেচিত হওয়ার পরে নোটিস দেওয়ার কথা ভাবা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy