সোমবার ধর্মতলার মঞ্চে অনশনরত চিকিৎসকদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার রিপোর্ট। —নিজস্ব চিত্র।
ডাক্তারদের অনশনের ২০৬ ঘণ্টারও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রয়েছেন অনশনরত অনিকেত মাহাতো, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য। উত্তরবঙ্গে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অলোক বর্মা। তবু ধর্মতলার অনশনমঞ্চে এখনও অনড় ছয় আন্দোলনকারী। সকলেরই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলেও মনোবল এখনও অটুট। কেমন আছেন অনশনকারীরা?
আপাতত দিনে দু’বার করে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হচ্ছে তাঁদের। সে সব পরীক্ষার রিপোর্ট বলছে, সকলেরই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে। মাথা ঘুরছে, কমছে রক্তের শর্করার মাত্রা। রক্তচাপ, পাল্স রেট ওঠানামা করছে। দেখা দিচ্ছে কিডনির সমস্যাও। ফলে অনশনকারীদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন ডাক্তার থেকে সাধারণ মানুষ— সকলেই।
১০ দফা দাবিতে গত ৫ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টা থেকে ধর্মতলায় ‘আমরণ অনশন’ শুরু করেছেন কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের ছয় জুনিয়র ডাক্তার। তাঁরা হলেন তনয়া পাঁজা, স্নিগ্ধা হাজরা, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, অর্ণব মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য। গত রবিবার অনশনে যোগ দেন আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোও। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের দুই ডাক্তার সৌভিক এবং অলোক বর্মাও অনশন শুরু করেছিলেন। শুক্রবার অসুস্থ হয়ে পড়েন অলোক। তাঁকেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শনিবার রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কলকাতা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয় অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়কে। পেটে যন্ত্রণা হচ্ছিল তাঁর। রবিবার অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন হন পুলস্ত্যও। এর মাঝে শুক্রবার রাতে নতুন করে অনশনে যোগ দিয়েছেন আরও দু’জন। তাঁরা হলেন পরিচয় পণ্ডা এবং আলোলিকা ঘোড়ুই। উত্তরবঙ্গেও অলোকের জায়গায় নতুন করে অনশনে বসছেন সন্দীপ মণ্ডল।
অনশনকারী ডাক্তারেরা মূলত জল খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। ফলে বার বার শৌচাগারে যেতে হচ্ছে তাঁদের। উপস্থিত অন্য সহযোদ্ধারা ধরে ধরে তাঁদের শৌচাগারে নিয়ে যাচ্ছেন। কারণ, অনশনকারীরা অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছেন। অনশনকারীদের মধ্যে সায়ন্তনীর অবস্থা তুলনামূলকভাবে সামান্য ভাল। বাকিদের রক্তে সিবিজির মাত্রা ভাবাচ্ছে সকলকেই। রবিবার রাতে জল খেয়েও বমি করেছেন স্নিগ্ধা। মাথা ধরা এবং দুর্বলতা রয়েছে তনয়ার। সোমবার সকালে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে তাঁর। শীঘ্রই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হতে পারে। শরীরে জলশূন্যতার কারণে পেশিতে টান ধরার মতো সমস্যা রয়েছে। আপাতত দিনে দু’বার করে তাঁদের রক্তচাপ, নাড়ির গতি, ক্যাপিলারি ব্লাড গ্লুকোজ (সিবিজি) মাপা হচ্ছে। সোমবার সকালেও অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়েছে। অনশনমঞ্চে টাঙানো বোর্ডে লেখা হয়েছে তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার সেই রিপোর্ট।
কেমন আছেন ধর্মতলার বাকি ছয় অনশনকারী? উত্তরবঙ্গে সৌভিকেরই বা শারীরিক অবস্থা কেমন?
এক নজরে, দশম দিনের রিপোর্ট:
অর্ণব মুখোপাধ্যায়, পিডিটি প্রথম বর্ষ, এসএসকেএম
রক্তচাপ ১২২/৮৪
নাড়ির গতি ১০০
রক্তে শর্করার মাত্রা (সিবিজি) ৬৮
সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, পিজিটি তৃতীয় বর্ষ, কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ
রক্তচাপ ছিল ১০০/৭৬
নাড়ির গতি ৮২
রক্তে শর্করার মাত্রা (সিবিজি) ৭০
স্নিগ্ধা হাজরা, সিনিয়র রেসিডেন্ট, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ
রক্তচাপ ১০৪/৭০
নাড়ির গতি ৮০
রক্তে শর্করার মাত্রা (সিবিজি) ৬৮
তনয়া পাঁজা, ইএনটি সিনিয়র রেসিডেন্ট, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ
রক্তচাপ ৯৮/৭০
নাড়ির গতি ৭৮
রক্তে শর্করার মাত্রা (সিবিজি) ৬৩
পরিচয় পণ্ডা, পিজিটি দ্বিতীয় বর্ষ, শিশুমঙ্গল হাসপাতাল
রক্তচাপ ১৪৪/৯৪
নাড়ির গতি ৯২
রক্তে শর্করার মাত্রা (সিবিজি) ৭৮
আলোলিকা ঘোড়ুই, পিজিটি প্রথম বর্ষ, কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ
রক্তচাপ ১০২/৭৮
নাড়ির গতি ৮৪
রক্তে শর্করার মাত্রা (সিবিজি) ৬৬
শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ
রক্তচাপ ১০০/৬২
নাড়ির গতি ৬৭
রক্তে শর্করার মাত্রা (সিবিজি) ৯০
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy