রবিবার সন্ধ্যায় ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের অনশনমঞ্চ। —নিজস্ব চিত্র।
যত দিন যাচ্ছে ততই শরীরে জটিলতা বাড়ছে। ধর্মতলা এবং উত্তরবঙ্গে অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে। প্রায় প্রত্যেক অনশনকারীর শরীরেরই কিটোন বডির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। তার মাত্রা বাড়ছে। যা যথেষ্ট উদ্বেগের বলে জানাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। আনশনকারীদের প্রতি দিন অন্তত দু’বার করে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়। সেই স্বাস্থ্যপরীক্ষায় কী ফলাফল, তা অনশনমঞ্চে টাঙানো বোর্ডে লিখে জানাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।
ধর্মতলায় প্রথম দিন থেকে অনশনে রয়েছেন অর্ণব মুখোপাধ্যায়, স্নিগ্ধা হাজরা এবং সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা। রবিবার তাঁদের ‘আমরণ অনশন’ ষোড়শ দিনে পড়ল। তাই তাঁদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে সকলের মনে। শরীর ক্রমেই ভাঙছে তাঁদের। সর্ব ক্ষণ যন্ত্রণা হচ্ছে। সঙ্গে দুর্বলতা রয়েছে। তবু অনশন বন্ধ করতে নারাজ অর্ণবেরা। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা জানাচ্ছেন, মানসিক শক্তিতেই তাঁরা অনশন করে চলেছেন। তাঁদের দেখে মনের জোর পাচ্ছেন পরিচয় পণ্ডা, অলোলিকা ঘোডুই, রুমেলিকা কুমার, স্পন্দন চৌধুরী এবং সন্দীপ মণ্ডল। এখন ১০ দফা দাবিতে অনশন করছেন মোট আট জন জুনিয়র ডাক্তার।
গত ৫ অক্টোবর ধর্মতলায় অনশনে বসেছিলেন মোট ছ’জন। তবে তাঁদের মধ্যে এসএসকেএমের অর্ণব, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের স্নিগ্ধা এবং কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের সায়ন্তনী এখনও অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। বাকিরা অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। তাঁদের মধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়ে আবার আন্দোলনে ফিরেছেন। পরে আরও কয়েক জন জুনিয়র ডাক্তার একে একে অনশনে যোগ দেন। ১১ অক্টোবর থেকে অনশন করছেন কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগের পিজিটি অলোলিকা এবং ভিআইএমএস (শিশুমঙ্গল) হাসপাতালের ইনএনটি (নাক, কান, গলা) বিভাগের পিজিটি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র পরিচয়। রবিবার তাঁদের অনশন নবম দিনে পড়ল। জুনিয়র ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, আলোলিকা এবং পরিচয়ের শরীরেও বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। ১৫ অক্টোবর থেকে অনশনে বসা রুমেলিকা কুমার এবং স্পন্দন চৌধুরীর শরীরও ভেঙে পড়েছে। তবে নিজেদের দাবিতে অনড় সকলেই। অন্য দিকে, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে গত ১৪ অক্টোবর থেকে অনশন করছেন জুনিয়র ডাক্তার সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে। শনিবার সকালে তাঁর তলপেটে ব্যথা শুরু হলে পরীক্ষা করাতে তাঁকে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। ধরা পড়েছে লিভারের সমস্যা। মূত্রে মিলেছে কিটোন বডিও। যদিও অনশন মঞ্চ ছাড়তে নারাজ সন্দীপ।
শুধু জল খেয়ে দিন কাটছে অনশনকারীদের। শরীর দুর্বল, মাথা ঘুরছে। কখনও কখনও উঠে বসতে পারছেন, কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই দুর্বলতার কারণে শুয়েই কাটচ্ছে তাঁদের দিন। আপাতত দিনে দু’বার করে অনশনকারীদের রক্তচাপ, নাড়ির গতি, ক্যাপিলারি ব্লাড গ্লুকোজ (সিবিজি) মাপা হচ্ছে। রোজকার মতো শুক্রবারও অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়েছে। তবে সেই রিপোর্ট যথেষ্টই আশঙ্কাজনক।
অর্ণব মুখোপাধ্যায়
রক্তচাপ: ১২৪/৮৮
নাড়ির গতি: ৯২
সিবিজি: ৬৫
মূত্রে কিটোন বডির মাত্রা বেড়েছে
সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা
রক্তচাপ: ৯০/৬৮
নাড়ির গতি: ৮০
সিবিজি: ৬৫
মূত্রে কিটোন বডির মাত্রা বেড়েছে
স্নিগ্ধা হাজরা
রক্তচাপ: ৯৪/৭৪
নাড়ির গতি: ৭২
সিবিজি: ৬০
মূত্রে কিটোন বডির মাত্রা বেড়েছে
পরিচয় পণ্ডা
রক্তচাপ: ১২৮/৯০
নাড়ির গতি: ৮৮
সিবিজি: ৭১
মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি
আলোলিকা ঘোড়ুই
রক্তচাপ: ১০৬/৮২
নাড়ির গতি: ৮০
সিবিজি: ৬৫
মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি
রুমেলিকা কুমার
রক্তচাপ: ৯২/৬০
নাড়ির গতি: ৮৪
সিবিজি: ৭১
মূত্রে মিলেছে কিটোন বডি
স্পন্দন চৌধুরী
রক্তচাপ: ১২৪/৭৬
নাড়ির গতি: ৮০
সিবিজি: ৭০
সন্দীপ মণ্ডল
রক্তচাপ: ১৩০/৭০
নাড়ির গতি: ৬৪
সিবিজি: ৯৮
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy